ঈদ আর পহেলা বৈশাখ মিলিয়ে সরকারিভাবে পাঁচ দিনের টানা ছুটিতে, যা যা করা যেতে পারে তার মধ্যে সিনেমা দেখা না থাকলেই নয়। সিনেমা হলে যাওয়ার সুযোগ না হলেও চিন্তা নেই; ওটিটিতে দেখার মতো অনেক সিনেমাই নিশ্চয়ই বাকি রয়ে গেছে।
যদি একটু প্রেম আর একটু হাসির খোরাক জুটে যায় সিনেমা দেখে তাহলে ছুটির মজাও বেড়ে যাবে চৌগুণ।
চরকি প্লাটফর্মের সিনেমা ‘কাছের মানুষ দূরে থুইয়া’ এবং ওয়েব সিরিজ ‘ওভারট্রাম্প’ নিয়ে সকাল সন্ধ্যার এবারের ছুটির ছবি আয়োজন।
কাছের মানুষ দূরে থুইয়া
‘কাছের মানুষ দূরে থুইয়া / মরি আমি ধরফড়াইয়া রে’; সারেং বউ সিনেমায় আব্দুল জব্বারের কণ্ঠের এই গান ১৯৭৮ সাল থেকে মনের কোনে জায়গা করে রেখেছে দর্শক ও শ্রোতাদের। সেই গানের পঙক্তির অংশ নিয়ে চরকির সিনেমা ‘কাছের মানুষ দূরে থুইয়া’।
এ বছর ফেব্রুয়ারি মাসে ভালোবাসা দিবসের কয়েকদিন পরে ওটিটিতে মুক্তি পায় শিহাব শাহীন পরিচালিত এই সিনেমা।
এক কথায় পেলব প্রেমে মন ভরিয়ে তোলার মতো সিনেমা কাছের মানুষ দূরে থুইয়া।
ওটিটি প্লাটফর্মে গালিগালাজ থাকার স্বাধীনতা থাকায় এই সিনেমাও ওই সুবিধা নিয়েছে। আগে যা সচসারচর টিভি নাটক বা বড় পর্দায় সিনেমায় সিনেমায় শোনা যেত না, এমন কিছু গালি দিয়েই সিনেমা শুরু। এরপরও গল্প ও দৃশ্যায়নে এই সিনেমা তরুণ-তরুণী থেকে বুড়ো বয়সীদেরও দেখার মতোই।
সিনেমার প্রথম অংশ কাটে রাজশাহী শহরে। পরিবার-পরিজনহীন নায়ক ফারহান পড়ে রুয়েট মানে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে। একটি বিব্রতকর ঘটনায় নায়িকা শারমিনের পরিবার চলে আসে রাজশাহী শহরে। শারমিনের বড় ভাই চায় তাকে ব্যবসায়ী বন্ধুর সঙ্গে বিয়ে দিতে। কিন্তু শারমিন পরিবারকে কিছু একটা করে দেখাতে নিজের ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট স্টার্ট আপ দাঁড় করাতে চায়।
নায়কের এন্ট্রি সিনেমাতে খুব সাধারণভাবে ছিল। তবে সিনেমার সাত মিনিটের মাথায় নায়িকার হন্তদন্ত এন্ট্রিতে নায়ক ও দর্শক এক সঙ্গে ভড়কে যাবে। অফিস থেকে ফেরার সময় প্রায় অন্ধকার, সুনসান, সরু গলিতেই শারমিন ও ফারহানের নাটকীয়ভাবে কয়েকবার দেখা, পরিচয় এবং বৃষ্টিতে ভেজা। ছাতার তলে ঘুরে ঘুরে দুজনের কথা বলার দৃশ্যটি দেখার সময় ‘এক লাড়কি ভিগি ভাগি সি’ গানটি দর্শকের মনে পড়লেও পড়তে পারে।
ফারহান জ্বর বাঁধালো কি না জানতে রুয়েটে চলে আসে শারমিন। এই দৃশ্যটির সঙ্গে দর্শকরা পরিচিত থাকবেন; চরকির ফেইসবুক পাতায় সিনেমার টিজারে নায়িকার উদ্দেশে নায়কের ‘ইউ মিসড মি’ বলার দৃশ্যটি সেখানে দেখা থাকবে অনেকেরই। তবে ফারহান ও শারমিনের মুখের অভিব্যক্তির কারণে এই অংশ বার বার দেখলেও ভালো লাগবে।
জুতা হাতে শারমিনকে প্রেম নিবেদন করে ফারহান। এই সময় মেরিলিন মনরো থেকে ধার করে ‘গিভ এ গার্ল দ্য রাইট শু, শি ক্যান কনকার দ্য ওয়ার্ল্ড’ সংলাপ জুড়ে দেওয়া চিত্রনাট্যের বুদ্ধিদীপ্ত দিক। বিশাল পদ্মার পাড় টি-বাঁধ এলাকার মনোরম দৃশ্যে শারমিনকে বলা ফারহানের ‘বি মাই রোজ’ সংলাপটিও দারুণ রোমান্টিক ঠেকবে।
দুজনের বিয়েতে শারমিনের পরিবার রাজি হতে চায় না। বিশেষ করে শারমিনের বড় ভাই এতে বাগড়া দেয়। ফারহান তখন তার বিদেশে পড়তে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়। শারমিনও এতে উৎসাহ দেয়। অবশেষে ফারহান পাড়ি দেয় অস্ট্রেলিয়া। এখান থেকে শুরু হয় সিনেমার মোড়; নায়ক ও নায়িকার মাঝে হাজার মাইলের দূরত্ব।
রাজশাহীর যত্ন না নেওয়া ময়লা রঙের মেস থেকে ফারহান ওঠে অস্ট্রেলিয়াতে ক্যাম্পাসের কাছে একটি বাড়িতে। ওই বাড়িতে বাবার সঙ্গে রাগ করে চলে আসা মিলি এবং আরও একজন ছেলেও থাকে।
আগে দুজন চাইলেই দেখা করতে পারতো, একে অন্যকে ছুঁতে পারতো। কিন্তু হাজার মাইলের দূরত্বে দুজনের ভরসা হয় ফোন; হোয়াটসঅ্যাপ কল আর টেক্সট। ফোনের স্ক্রিনে ফারহানকে দেখতে দেখতে শারমিনকে অনেকবার বলতে শোনা যায়, ‘তুমি কত দূরে’।
দূজনের জীবনে ভৌগলিক দূরত্ব, সময়ের ফাড়াক বাড়ার মতো ব্যস্ততাও বাড়ে। ফারহান রেস্তোরাঁতে কাজ করে। এদিকে শারমিনের ব্যবসাও ভালো চলে। একদিন ফোনের স্ক্রিনে ফারহানের আশেপাশে মিলিকে দেখে ফেলে শারমিন। তারপর শুরু হয় দ্বন্দ্ব। দুজনের ভৌগলিক দূরত্ব এই দ্বন্দ্ব মেটাতে পারে না। পরিবারের বিপদে দায়িত্ব পালন আর ফারহানের সঙ্গে কথা কাটাকাটির জেরে শারমিন সম্পর্কচ্ছেদ করার কথা জানিয়ে দেয়।
ওদিকে মিলির সঙ্গে তার বাবার দ্বন্দ্বও চরমে ওঠে। বাংলাদেশি বাবা চায় বিদেশেও মিলি দেশীয় আচরণ করুক। কিন্তু মিলি নিজেকে অস্ট্রেলিয়ান বলে বারবার। চিত্রনাট্যে এই অংশটি অনেক বড় সংযোজন না হলেও এতে ভাবনার জায়গা আছে। বিদেশের মাটিতে জন্ম ও বেড়ে ওঠা প্রজন্মকে শুধুমাত্র বাংলাদেশি দাবি করা কতটা সহজ? সারাক্ষণ যে দেশে থাকছে, চলছে ফিরছে সেখানকার সংস্কৃতি, মানুষ, জীবন যাপনকেই সে সহজে ছুঁতে পারবে সবার আগে। এমনকি বাবামা কাছে থাকলেও, পিতৃ-মাতৃভূমির সঙ্গে তো পরের প্রজন্মের হাজার মাইলের দূরত্ব। মূল কাহিনী এ নিয়ে না হলেও বাবা-মেয়ের এই দ্বন্দ্ব নিয়ে সামনে পূর্ণাঙ্গ সিনেমা আসার সুযোগ করে দিল এই সিনেমা।
শেষ পর্যন্ত মেয়ের চাওয়া মেনে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ান প্রেমিক অলিভারের সঙ্গে তাকে ঘটা করে বিয়ে দেন বাবা। সাগর পাড়ে বিস্তৃত অস্ট্রেলিয়াকে তখন দারুণ দেখায় স্ক্রিনে। মিলির বিয়ের অনুষ্ঠানে ফারহানের উপলব্ধি হয়, ভৌগলিক দূরত্ব সম্পর্ককেও কীভাবে দূরে ঠেলে দেয়। অস্ট্রেলিয়ার সাগর পাড় থেকে আবার রাজশাহীর পদ্মার পাড়ে ফিরে আসে ফারহান। মুখোমুখি হয় শারমিনের। শারমিন সেখানে থেকে ফিরে আসতে চাইলেও ফারহানের আলিঙ্গনে অভিমান গলে চোখের জল হয়ে গড়িয়ে পড়ে।
গায়ক প্রীতম হাসান এই সিনেমায় নায়ক ফারহান চরিত্রে খুব সরল অভিনয় করেছেন। কণ্ঠের আর্দ্রতা, সরলতা, প্রেম, তাকানোর ভঙ্গি তরুণ দর্শকদের জন্য যথার্থ। তাসনিয়া ফারিণ বরাবর পাকা অভিনেত্রী। তার হাসি চমৎকার লাগবে সিনেমায়। মেকআপ কম করার পরও তারুণ্য ও রোমান্টিক অভিব্যক্তিতে তাসনিয়া ফারিণ দারুণ ছিলেন। তবে সিনেমার পোস্টার ডিজাইন আরও সিনেমাটিক হলে ভালো হতো। ক্যামেরার কাজ ভালো হলেও খুব ভালো টিভি নাটকের মতো করে নির্মাণ হয়েছে এই সিনেমা।
১৪৫ মিনিটের এই সিনেমায় দুটোর বেশি গান দিলে নব্বই দশকের আমেজ ফিরে পেতো দর্শক ও শ্রোতারা। নব্বইয়ের দশকে নিটোল প্রেমের হিন্দি সিনেমা ও গান এখনও মনোরম অনুভূতি ধরে রেখেছে। রাজ্জাক, করবী, ববিতারা যখন একেবারে তরুণ তখনকার প্রেম, মান-অভিমানের সিনেমার দিন পেরিয়ে এই ইন্ডাস্ট্রিতে নিটোল প্রেমের সিনেমার বড় ঘাটতি দেখা দেয়। কাছের মানুষ দূরে থুইয়া সেই ঘাটতি পূরণে উপযুক্ত। এমন সিনেমা ওটিটি নয় বরং প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাওয়া দরকার। হলের বড় পর্দায় বাণিজ্যিক সফল হওয়ার মতো সব উপকরণই আছে এই সিনেমার স্ক্রিপ্ট ও বিশেষ করে নায়ক-নায়িকার অভিব্যক্তিতে।
আইএমডিবিতে এই সিনেমার রেটিং ৮.০/১০।
ওভারট্রাম্প সিজন-২ কবে আসবে?
ওভারট্রাম্প কোনোভাবেই রোমান্টিক নয় বরং একটু ইরোটিক; এ কারণে ১৬+ ওয়েব সিরিজ। সিজন-১ নিয়ে এসেছে ৬ পর্ব। সেরের উপর সোয়া সের বলতে যা বোঝায় প্রতি পর্বে তাই ঘটে চলে। ওটিটি মাধ্যমে মুক্তি পাওয়ার স্বাধীনতা ভালোভাবে ব্যবহার করেছে এই ওয়েব সিরিজ; গালি ও অশ্লীল কথার কমতি নেই কোনো চরিত্রের মুখেই।
একটা শহরে কাউকেই ঠিকঠাক বিশ্বাস করার সুযোগ নেই। সবারই দুটো চেহারা। ওভারট্রাম্পের পরতে পরতে এই কারণে চমক আছে। মাঝেমাঝে পত্রিকায় খবর আসে শহরের বিভিন্ন বিউটি পার্লারে পুলিশের রেইড পড়ার। সেসব ঘটনা নিয়ে এই ওয়েব সিরিজের পটভূমি সাজানো হয়েছে।
রমা তার স্বামী মিরাজের উপরে খবরদারি করে। মিরাজ চুপচাপ তা মেনেও নেয়। এদিকে স্বামী গা মালিশ করাতে যায় জেনির কাছে। এদিকে জেনি এক চক্রের সঙ্গে জড়িত যার প্রধান হলো সেলিম। সেলিমের দলে থাকলেও জেনি আবার মাহবুবের হয়েও কাজ করে। জেনির টাকার দরকার বলে দুইদিকের হয়ে মুরগী নম্বর ১০ মিরাজের সঙ্গে অন্তরঙ্গ হওয়ার ভিডিও করায়। সেলিম অবশ্য মিরাজকে বন্দি করে রমার কাছে ফোন দিয়ে মুক্তিপণ চায়। রমা তখন মাহবুবের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছে।
রমা টাকা দেওয়ার পরও সেলিম ছাড়ছিল না মিরাজকে। এদিকে ফোনে কথা বলতে দেখে মাহবুবকে সন্দেহ করে রমা। এক পর্যায়ে মাহবুব জানিয়ে দেয় মিরাজের জেনির কাছে মাঝে মাঝেই যাওয়ার কথা। বারবার ফোন দিলেও মিরাজকে না পেয়ে রমার বাড়িতে আসে তার আব্বু। আব্বু রমা ও মাহবুব দুজনকেই সন্দেহ করে পুলিশের কাছে জানায় মিরাজের নিখোঁজ থাকার কথা।
পুলিশও ততদিনে জেনেছে, শহরে এক চক্র আছে যারা লোকদের তুলে নিয়ে টাকা আদায় শেষে শুধু হাফপ্যান্ট পরিয়ে মহাসড়কে ছেড়ে দেয়। তবে এই লোকেরা যেহেতু গা মালিশ সেবা নিতে যেত তাই স্ত্রীর সামনে থানায় অপহরণ ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত কথা চেপে যেতে চায়। এসব চক্রের খোঁজ বার করতে পুলিশ এক আসামিকে ছেড়ে তাকে ইনফরমার বানায়। ওই ইনফরমারের মাধ্যমে খোঁজ পেয়ে জেনির বাড়িতে হানা দিলেও সেখান থেকে সবাই আগেই সটকে পড়েছিল।
সেলিম তার দল ও মিরাজকে নিয়ে পুরনো এক বাড়িতে গা ঢাকা দেয়। ঢাকার বসিলার ওদিকে বুড়িগঙ্গার ধারে বেশ পুরনো বাড়িটি চমৎকার সংযোজন ছিল এই লুকোচুরির গল্পে। এরমধ্যে মিরাজ মগজ খাটিয়ে সেলিমকে জানিয়ে দেয় তার পকেট থেকে ব্যাংকের কার্ড দলের কেউ চুরি করেছে। সেলিম সবাইকে সন্দেহ করলেও কেউ স্বীকার করে না।
সেলিমের সঙ্গে তিন পাত্তি খেলায় জেতার কারণে মিরাজ শেকলে হাত-পা বেঁধে নদীতে ডুবিয়ে মারা থেকে রক্ষা পায়। মিরাজ মন্টুকে হাত করতে চায়; মন্টু সাড়া দেয় না। জেনিও সনেটকে ব্যবহার করতে চায় মেমরি কার্ড উদ্ধারে। জেনির বুদ্ধিতে সেলিমকে রড দিয়ে মারতে উদ্যত হয় সনেট। কিন্তু রডের আঘাতে জ্ঞান হারায় পুলিশের ইনফরমার।
মিরাজ জেনে যায় মাহবুব ও রমার মধ্যে সম্পর্ক আছে। প্রতিশোধ নিতে মেরাজ তার বউ রমাকেই তুলে এনে বন্দি করার প্রস্তাব দেয়; সেলিম রমার বাড়ি গিয়ে তাকে অজ্ঞান করে নিয়ে আসে আস্তানায়। রমার বাড়িতে হানা দিয়ে বাথরুমে আটকা মাহবুবকে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। সেলিম আব্বুর কাছে মুক্তিপণ চায়। আব্বু মাহবুবকে সাথে আসতে বলে। থানায় পুলিশ এই আলাপ শুনে অ্যাকশন নেওয়ার প্রস্তুতি নেয়।
টাকা নিয়ে এলেও কাউকে ছাড়ে না সেলিম। সেখানে হাতহাতির পর্যায়ে পুলিশের ইনফরমারের কাছে পিস্তল এলে সে উঠে পরে। ধস্তাধস্তির এক ধাপে মন্টুর কাছে পিস্তল আসে। অনুগত মন্টু পিস্তল হাতে পেতেই সেলিমের বিরুদ্ধে যায়। মেমরি কার্ড নিয়ে জেনিকে ফেরৎ দেয় মন্টু। এরমধ্যে আরেক দফা ধস্তাধস্তিতে শেষ পর্যন্ত পিস্তল হাতে পায় মিরাজ। সবাইকে আটকে রেখে শুধু জেনিকে নিয়ে গাড়ি চালিয়ে পালাতে থাকে মিরাজ। তবে পথের মধ্যে কিছু টাকা ছুড়ে দিয়ে জেনিকে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেয়। কিছুদূর যেতেই মিরাজ দেখে সামনে পুলিশের চেকপোস্ট। মিরাজ কি কোটি টাকার ব্যাগ নিয়ে পুলিশকে ফাঁকি দিয়ে পালাতে পারবে?
এর উত্তর সিজন-২ ছাড়া পাওয়া যাবে না। সিজন-১ যতটা চমকের উপর চমক নিয়ে এগিয়েছে তা সিজন-২ নির্মাণের সময় বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে থাকবে। এরকম বাটপারি ও অবিশ্বস্ততায় ভরা চোর-পুলিশ খেলা নিয়ে বলিউডে অসংখ্য হিট সিনেমা রয়েছে। ঢালিউডে এমন গল্প ও চিত্রনাট্যে বড় পর্দায় সিনেমা আসেনি। তবে ওভারট্রাম্প ওয়েব সিরিজের গল্প, চিত্রনাট্য ও নিমার্ণ বলছে এমন সিনেমা বড় পর্দায় আনা ঢালিউডেও সম্ভব। বড় পর্দায় অবশ্য গল্পের গতি আরেকটু বাড়াতে হবে, তবেই হলের দর্শক হাততালি ও শিষ বাজিয়ে ফেটে পড়বে।
চঞ্চল চৌধুরীর অভিনয় কারিশমা বজায় ছিল ফটকা সেলিম চরিত্রে। মিরাজ চরিত্রে চোখেমুখে কখনও গোবেচারা আবার কখনও বাজিগর ভাব চমৎকার ফুটিয়েছেন মোস্তফা মনওয়ার। মাহবুব চরিত্রে এফ এস নাঈম, রমা চরিত্রে আশনা হাবিব ভাবনা, জেনি চরিত্রে সামিরা খান মাহি ভালো কাজ করেছেন। ওয়েব সিরিজ কারাগার পার্ট টুতে রাজু চরিত্রে অভিনয় করে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন মীর নওফেল আশরাফী জিসান। ওভারট্রাম্পে তিনি পুলিশের চরিত্র করেছেন। দুটো চরিত্রে হাবভাব একেবারে আলাদা। এই বৈপরীত্য ভালোই সামলেছেন তিনি।
সিনেমার দুটো গান ও গায়কী বেশ উপভোগ্য। ওভারট্রাম্প গল্প লিখেছেন বাশার জর্জিস, সিদ্দিক আহমেদ এবং নাসিফুল ওয়ালিদ অম্লান। চিত্রনাট্য ও সংলাপ লিখেছেন মোন্তাসির মান্নান এবং বাশার জর্জিস। এই ক্রাইম কমেডি ধাঁচের ওয়েব সিরিজ পরিচালনা করেছেন বাশার জর্জিস। এই টিমের পক্ষেই সম্ভব এমন গল্প থেকে বড় পর্দায় সিনেমা বানিয়ে একটা ধুন্ধুমার কাণ্ড ঘটিয়ে দেওয়ার।
আইএমডিবিতে এই ওয়েব সিরিজের রেটিং ৬.৩/১০।