গ্রীষ্ম পেরিয়ে প্রকৃতিতে এসেছে বর্ষা। আজ শনিবার বর্ষার প্রথম দিন, পহেলা আষাঢ়। একদিন বাদে আষাঢ়ের তৃতীয় দিনে অর্থাৎ আগামী ১৭ জুন সোমবার দেশে উদযাপিত হবে ঈদুল আজহা।
এবার বর্ষার একেবারে শুরুতে ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদ উদযাপিত হলেও ঈদের দিন দেশজুড়ে বৃষ্টির দাপট থাকার সম্ভাবনা কম বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। তারা বলছে, ঈদের সারাটি দিন থাকবে রোদ, বৃষ্টি আর মেঘের লুকোচুরি।
ঈদ ঘিরে শনিবার আবহাওয়া অধিদপ্তরের এক পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঈদের দিন সারাদেশে একযোগে বৃষ্টি হবে না। তবে দেশের উত্তরাঞ্চলে বৃষ্টির দাপট থাকতে পারে বেশি। মধ্যাঞ্চলে বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি হবে। আর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
আবহাওয়াবিদ আবদুর রহমান খান সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, ঈদের দিন সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহ অঞ্চলে বেশ ভালো বৃষ্টি হবে। এর মধ্যে সিলেট বিভাগে প্রচুর বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
রাজশাহী ও ঢাকায় ঈদের দিন বৃষ্টি হলেও উত্তরাঞ্চলের তুলনায় পরিমাণে কিছুটা কম হতে পারে বলে জানান আবদুর রহমান খান। তিনি বলেন, রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগে বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি হতে পারে। অবশ্য এই দুই অঞ্চলে আকাশ ঈদের দিন মেঘাচ্ছন্ন থাকার সম্ভবনাই বেশি।
উপকূলীয় অঞ্চল খুলনা ও বরিশাল বিভাগে ঈদের দিন বৃষ্টির সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে জানিয়ে আবহাওয়াবিদ আবদুর রহমান খান বলেন, বঙ্গোপসাগর থেকে প্রচুর জলীয় বাষ্প খুলনা ও বরিশাল পেরিয়ে উত্তরাঞ্চলে যেতে যেতে মেঘে পরিণত হচ্ছে। এই মেঘ উত্তরের পাহাড়ি অঞ্চলে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে বৃষ্টিপাত ঘটাচ্ছে। এজন্য দেশের উত্তরাঞ্চলে বৃষ্টি বেশি হচ্ছে। আর দক্ষিণাঞ্চলে বৃষ্টির পরিমাণ কম থাকছে। তবে ঈদের পর খুলনা-বরিশালে বৃষ্টি বাড়তে পারে।
সম্প্রতি বৃষ্টি হলেও ভ্যাপসা গরমের অস্বস্তি রয়েই গেছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে আব্দুর রহমান বলেন, বাতাসে জলীয় বাষ্প বেশি থাকলে শরীর থেকে প্রচুর ঘাম ঝরে। এজন্য অস্বস্তি ভাবটা থেকেই যায়।
এদিকে শনিবার আবহাওয়া অধিদপ্তরের এক পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রবিবার রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায়, চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দু’এক জায়গায় দমকা হাওয়া বয়ে যেতে পারে। সেই সঙ্গে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। তবে সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগে হতে পারে ভারী বৃষ্টি। কিন্তু বৃষ্টি হলেও অস্বস্তিভাব থাকতে পারে।
ঈদের দিন সোমবার প্রায় একই ধরনের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহওয়া অধিদপ্তর। অবশ্য ঈদের দিন তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে।
শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শনিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে সবচেয়ে বেশি ৭৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামের রাজারহাটে।
এ ছাড়া সিলেটে ৬২, সুনামগঞ্জে ৭৪, মৌলভীবাজারে ৩৪, রংপুরে ৪১, পঞ্চগড়ে ২৯, শেরপুরে ৪৬, কিশোরগঞ্জের নিকলীতে ১০ এবং ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ায় ১৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। তবে ঢাকা, খুলনা ও বরিশালে গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টি প্রায় হয়নি।
বৃষ্টির প্রভাবে উত্তরাঞ্চলে তাপমাত্রা সহনীয় থাকলেও দক্ষিণাঞ্চল ছিল বেশ তপ্ত। গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল খুলনায়, ৩৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল রংপুরে ২১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
রাজধানী ঢাকার শুক্রবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৩২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।