Beta
সোমবার, ২০ মে, ২০২৪
Beta
সোমবার, ২০ মে, ২০২৪

তুরস্কে স্থানীয় নির্বাচনে এরদোয়ান বিরোধীদের জয়

নির্বাচনে জয়ের খবরে ইস্তাম্বুলে সিএইচপি সমর্থকদের উচ্ছ্বাস। ছবি: মেয়র একরেম ইমামোগলুর এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে নেওয়া।
নির্বাচনে জয়ের খবরে ইস্তাম্বুলে সিএইচপি সমর্থকদের উচ্ছ্বাস। ছবি: মেয়র একরেম ইমামোগলুর এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে নেওয়া।
Picture of সকাল সন্ধ্যা ডেস্ক

সকাল সন্ধ্যা ডেস্ক

তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারা ও সর্ববৃহৎ শহর ইস্তাম্বুলে স্থানীয় নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছে দেশটির প্রধান বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টি (সিএইচপি)। দলটির দাবি, তৃতীয় বৃহৎ শহর ইজমির ও দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর আনতালিয়ায়ও তারা এগিয়ে আছে।

তুরস্কের ৮১ শহরে মেয়র ও প্রশাসক নির্বাচিত করতে রবিবার ভোটকেন্দ্রে জড়ো হয় তুর্কিরা। বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজেন্সি জানিয়েছে, প্রায় ৭৬ শতাংশ মানুষ এদিন ব্যালট বাক্সে ভোট দেন।

তুরস্কের স্থানীয় নির্বাচনের ফল বলছে, ৮১টি শহরে মেয়র পদে সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়েছে সিএইচপি। তাদের এই ঐতিহাসিক জয়কে প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের দল জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির (একেপি) ওপর বড় ধরনের আঘাত হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা।

স্থানীয় নির্বাচনে দলের বিপুল জয়ে উচ্ছ্বসিত ইস্তাম্বুলের বর্তমান মেয়র সিএইচপি নেতা একরেম ইমামোগলু। এবারও তাকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করেছে জনতা। রবিবার রাতে এক্সে সমর্থকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আজ রাতে ইস্তাম্বুলের ১ কোটি ৬০ লাখ মানুষ আমাদের প্রতিপক্ষ ও প্রেসিডেন্টকে পরিষ্কার বার্তা দিয়েছে।”

সমর্থকদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ধন্যবাদ দিতেও ভোলেননি মেয়র ইমামোগলু। ২০১৯ সালে ইস্তাম্বুলের মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। এ নিয়ে দ্বিতীয়বার শহরটি শাসন করতে যাচ্ছেন তিনি।

নির্বাচনের আগে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান তুরস্কের মেগাসিটি ইস্তাম্বুলে নতুন যুগের সূচনা করার অঙ্গীকার করলেও মেয়র ইমামোগলু নিজের ঝুলিতে ৫০ শতাংশের বেশি ভোট নিশ্চিত করেছেন। প্রতিদ্বন্দ্বী একেপি প্রার্থীর চেয়ে ১০ পয়েন্টের বেশি এগিয়ে আছেন তুরস্কের সেক্যুলার বিরোধী দল সিএইচপির এই নেতা।

প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের জনপ্রিয়তা পরিমাপে এই স্থানীয় নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তুরস্কের প্রধান শহরগুলোতে জয় পেতে এরদোয়ানের নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন একেপি ব্যাপক চেষ্টা চালায়। শেষ রক্ষা যে হয়নি, তা নির্বাচনের ফলে স্পষ্ট।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের প্রধান লড়াইক্ষেত্র ইস্তাম্বুল। কারণ এই শহরেই তার জন্ম, বেড়ে ওঠা। ১৯৯৪ সালে ইস্তাম্বুলে মেয়র পদপ্রার্থী হয়ে রাজনৈতিক জীবন শুরু করেছিলেন তিনি। জয়ীও হন সেবার।

এরদোয়ান আশা করেছিলেন, গত বছরের মে মাসে তৃতীয় মেয়াদে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট হওয়ার এক বছরের কম সময়ের মধ্যে দেশের প্রধান শহরগুলোর নিয়ন্ত্রণ নির্বাচনে জয়ের মাধ্যমে ফিরে পাবেন।

নির্বাচনের ফল জানার পর আঙ্কারায় একেপির কার্যালয়ে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান স্বীকার করেন, স্থানীয় নির্বাচনের ফল পার্টির জন্য ধাক্কা।

রবিবার রাতে আঙ্কারায় দলীয় কার্যালয়ে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। ছবি: আনাদোলু এজেন্সি

সমর্থকদের উদ্দেশে ৭০ বছর বয়সী এই রাজনীতিক বলেন, “দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা আমাদের কাঙ্ক্ষিত ফল অর্জনে ব্যর্থ হয়েছি। আমরা আন্তরিকভাবে নির্বাচনের ফল মূল্যায়ন করব। এবং একই সঙ্গে সাহসের সঙ্গে আত্মসমালোচনার চর্চা করব।”

স্থানীয় নির্বাচনে জয়ী হয়ে সিএইচপির চেয়ারম্যান ওজগুর ওজেল বলেছেন, “দেশে নতুন রাজনৈতিক বাতাবরণ তৈরিতে মরিয়া তুরস্কের আপামর জনসাধারণ।”

নির্বাচনে সিএইচপির বিপুল ভোটে জয় পাওয়ার খবর পেয়ে রবিবার রাতেই ইস্তাম্বুলসহ বিভিন্ন শহরে দেশের পতাকা ও আধুনিক তুরস্কের জনক মুস্তফা কামাল আতাতুর্কের ছবি হাতে রাস্তায় নেমে পড়ে তুর্কিরা।

ইস্তাম্বুলের মেয়র ইমামোগুলুর সমর্থক ২৫ বছর বয়সী ইয়েসিম আলবায়রাক বিবিসিকে বলেন, “এটি কেবল স্থানীয় নির্বাচন ছিল। কিন্তু বড় শহরগুলোতে বিরোধী দল জয়ী হয়ে ক্ষমতাসীন দলের বিরুদ্ধে ব্যাপক শক্তি প্রদর্শন করেছে।”

ইস্তাম্বুল শহরে তুরস্কের প্রায় ৮ কোটি ৫০ লাখ জনসংখ্যার এক পঞ্চমাংশ বাস করে। এই শহরে নির্বাচিত হওয়ার অর্থ বাণিজ্য, পর্যটনসহ দেশের অর্থনীতির উল্লেখযোগ্য অংশের নিয়ন্ত্রণ হাতে পাওয়া।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত