Beta
শনিবার, ৯ নভেম্বর, ২০২৪
Beta
শনিবার, ৯ নভেম্বর, ২০২৪
ইআরএফ প্রাক বাজেট আলোচনায় বক্তারা

অর্থনৈতিক বাস্তবতায় বাজেট প্রণয়ন করা উচিত

রবিবার ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম  আয়োজিত প্রাক বাজেট আলোচনা সভায় বক্তারা আগামী বাজেট নিয়ে মতামত তুলে ধরেন।
রবিবার ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম আয়োজিত প্রাক বাজেট আলোচনা সভায় বক্তারা আগামী বাজেট নিয়ে মতামত তুলে ধরেন।
Picture of প্রতিবেদক, সকাল সন্ধ্যা

প্রতিবেদক, সকাল সন্ধ্যা

[publishpress_authors_box]

কোভিড-পরবর্তী গত কয়েক বছরের কিছু ভুল সিদ্ধান্তের ফল এখনও ভোগ করতে হচ্ছে, তাই দেশের অর্থনৈতিক বাস্তবতা বিবেচনায় রেখে আগামী অর্থবছরের বাজেট প্রণয়ন করা উচিত। আর দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবসা বাণিজ্যে গতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে পদক্ষেপ নিতে হবে। 

রবিবার ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত ‘সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা এবং পরবর্তী বাজেট’ শীর্ষক প্রাক বাজেট আলোচনা সভায় এমনই মত তুলে ধরেন বক্তারা।  

সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান। আলোচক ছিলেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো মুস্তাফিজুর রহমান, সাবেক অর্থ ও বাণিজ্য সচিব মাহবুব আহমেদ, বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজ, ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি শামস মাহমুদ।

ইআরএফ সভাপতি মোহাম্মাদ রেফায়েত উল্লাহ মীরধার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম।

অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান বলেন, আসছে বাজেটে সামগ্রিক অর্থনৈতিক ভারসাম্যের দিকে সর্বাধিক নজর দেবে সরকার। রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ডিজিটালাইজেশনে মনোযোগ বাড়ানো হবে।

জ্বালানি তেলের দাম প্রতিমাসে বিশ্ববাজারের সঙ্গে সমন্বয় করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, আগামী বাজেটে ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় অর্থের জোগানে বাড়তি নজর দেবে সরকার।

সিপিডির মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, গত ২০২১-২২ ও ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটের ভুল সিদ্ধান্তের ফল এখনও ভোগ করছে জনগণ। এ জন্য আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট বাস্তবতার নিরিখে প্রণয়ন করা প্রয়োজন। তিনি বলেন, একটা সময়ে সামষ্টিক অর্থনীতিতে একটি উচ্চ প্রবৃদ্ধি এবং বিভিন্ন পর্যায়ের মূল্যস্ফীতি ছিল। গত দুই বছরের মধ্যে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতাও নষ্ট হয়ে গেল। পাশাপাশি অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিও স্থবির হয়ে পড়েছে। মূল্যস্ফীতির লাগামও কোনোভাবে টানা যাচ্ছে না।

জ্বালানি তেলের মাত্রারিক্ত মূল্যবৃদ্ধিই মূল্যস্ফীতিকে উস্কে দিচ্ছে বলে মনে করেন বিসিআই সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, ২০০৯ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত শিল্পে জ্বালানির দাম বেড়েছে ৭০৯ শতাংশের মতো। বাণিজ্যিকে এই দাম বৃদ্ধির হার ৩ হাজার শতাংশেরও বেশি। বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর সময় বলা হয়েছিল নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সুবিধার কথা, তবে আমরা কেউই সেই সুবিধা ভোগ করতে পারিনি। কিন্তু আমাদের বাড়তি দাম ঠিকই দিতে হয়েছে।

জ্বালানির মূল্য বাড়ায় শিল্পখাত সক্ষমতা হারিয়েছে, উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে। ফলে বাজারের প্রতিযোগিতায় ব্যবসায়ীরা টিকতে পারছে না বলে উল্লেখ করেন তিনি।  

তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতির বাড়ার পেছনেও জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি মূল প্রভাবক হিসেবে ভূমিকা রেখেছে। জ্বালানির মাত্রারিক্ত মূল্য বৃদ্ধির প্রভাব এখনও থামানো যায়নি। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

শিল্প তার সক্ষমতা অনুযায়ী পরিচালিত হতে না পারলে খেলাপি বাড়বে বলে মনে করেন তিনি। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতির কারণে ব্যাংকিং খাত বেসরকারি খাতের চেয়ে নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে তারা ট্রেজারি বন্ডকেই বেছে নেবে, সেখানে তাদের বিনিয়োগ নিরাপদ।

তিনি বলেন, শিল্পখাত ঠিকমতো চলতে পারছে না বলে এখন পর্যন্ত প্রায় ৪০ হাজার মানুষ বেকার হয়ে গেছে। কোভিডের সময় থেকে এখন পর্যন্ত ৫৫ থেকে ৬০ ভাগ ছোট প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। যেখানে বড় শিল্পপ্রতিষ্ঠানই টিকতে পারছে না সেখানে তাদের টিকে থাকা অসাধ্য। একসময় যারা ৫ জনকে সঙ্গে নিয়ে কোনও উদ্যেগ নিত, ছোট ব্যবসা চালু করতো, এখন তাকে চাকরি খুঁজতে হচ্ছে।

রেমিটেন্স বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছিল প্রণোদনা দিয়ে, এখন যখন রেমিটেন্সের পরিমাণ বাড়ছে তখন আবার প্রণোদনা তুলে নেওয়ার কথা বলা হচ্ছে বলে জানান আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী।

তিনি বলেন, চড়া মূল্যস্ফীতি- উৎপাদনশীলতা হ্রাসের এ সময়ে যথাযথ সংস্কার ছাড়া অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে—এমন আশা করাটা বোকামি। বাজেটের আগে ঘটা করে ব্যবসায়ীদের নানা সমস্যার কথা শোনা হয়। তবে এসব সমস্যা সমাধানে কোনও কার্যকরী উদ্যোগ নেয় না জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এ বিষয়ে নজর দেওয়া উচিত।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত