ভোট ছাড়া দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা অসম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু।
খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ‘ফরমায়েশি’ সকল মামলা ও সাজা অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবিতে শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক অবস্থান কর্মসূচিতে তিনি এ মন্তব্য করেন।
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ভোট ছাড়া দেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা অসম্ভব। সেই জন্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব গণতান্ত্রিক ধারায়, সংবিধান অনুযায়ী জাতিকে নির্বাচনের মুখোমুখি করতে হবে।
দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান, চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে গণতন্ত্রের প্রতীক হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “বিএনপি গণতন্ত্রের প্রতীক। শেখ মুজিবুর রহমান, শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগ ফ্যাসিবাদের প্রতীক। এই ভিন্নতা যে বুঝতে পারবে না সে বাংলাদেশের রাজনীতিতে কি হচ্ছে না হচ্ছে তা বুঝতে পারবে না, ব্যাখ্যা করতে পারবে না।”
ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, “খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়েছে এ সরকার। আমরা এ সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছি। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়ার, তারেক রহমান, মহাসচিবসহ বিএনপি ও বিরোধীদলের ৬০ লাখ নেতাকর্মী নামে আড়াই লাখ মামলা রয়েছে। এরা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছে। অনেকেই জেলে আছে, যাবজ্জীবন ফাঁসির আসামি হয়ে জেলে আছে। তারা এখনও মুক্তি পায়নি।
“এদের মুক্তি যতক্ষণ না হবে, মামলা যতক্ষণ না প্রত্যাহার হবে, ধরে নিতে পারি এই সরকার বড় দাগের কোনও কাজ এখনও সম্পন্ন করতে পারেনি।”
তিনি বলেন, “এই সরকার আমাদের সরকার, গণতন্ত্রের সরকার, ছাত্র-জনতার সরকার। এই সরকার থাকা অবস্থায় যদি গণতন্ত্রকামী মানুষ কষ্টে থাকে, নির্যাতনে থাকে, তা ভালো সংবাদ বয়ে আনে না। কারণ এই সরকার গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।”
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্যে কৃষকদলের সাবেক এই আহ্বায়ক বলেন, “মেহনতি মানুষের, সাধারণ জনগণের, রিকশাচালকের ভোটের অধিকারটা ফিরিয়ে দেন। তারা যেন ভোট দিয়ে তাদের প্রতিনিধিকে নির্বাচন করতে পারে– এই অধিকারটা দেন। অনেকেই অনেক কথা বলে। কিছু লোক আছে আমাদের সাথে থাকলে ঊনিশটা সিট পায়, আর আওয়ামী লীগের সাথে গেলে তিনটা সিট পায়। তারা তো ভোটকে ভয় পাবেই।”
দুদু বলেন, “দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে সবার মানসিক পরিবর্তন দরকার, মানসিক পরিবর্তন করতে হবে। এতদিন শেখ হাসিনার নির্দেশে চাকরি হারানোর ভয় কাজ করেছে। এখন দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে যেতে হবে। এছাড়া আমরা ভালো কিছু করতে পারব বলে আমার মনে হয় না।”
তিনি বলেন, “এই দেশটা আমাদের। আমাদেরকে এই দেশকে রক্ষা করতে হবে। চারপাশে কিছু দুষ্কৃতিকারী চাঁদাবাজি করার চেষ্টা করছে। আমাদের নেতা তারেক রহমান বলেছেন– যারা চাঁদাবাজি করবে, যারা দুষ্কৃতিকারী, তাদেরকে আইনের হাতে তুলে দেন। এই জায়গায় কোনও আপোস করা যাবে না। দেশের স্বার্থে, গণতন্ত্রের স্বার্থে, অর্থনীতির স্বার্থে, রাজনৈতিক স্বার্থে যারা দুষ্কৃতিকারী তাদের কোনও ছাড় নাই। গত ১৭ বছর আমরা এদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি, এখন এদের সাথে কোনও আপোষ নয়। তারা যেই হোক না কেন।”
বাংলাদেশ নাগরিক অধিকার আন্দোলনের উদ্যোগে অবস্থান কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের আহ্বায়ক এম জাহাঙ্গীর আলম।
সংগঠনের সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার মোফাজ্জল হোসেন হৃদয়ের সঞ্চালনায় অবস্থান কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এ বি এম মোশাররফ হোসেন, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মো. রহমাতুল্লাহ,প্রিন্সিপাল শাহ মো. নেছারুল হক, তাঁতী দলের যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী মনিরুজ্জামান মনির, কৃষকদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার ওবায়দুর রহমান টিপু, সহ-সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রবিউল ইসলাম রবি, যোগাযোগ বিষয়ক সম্পাদক আব্দুর রাজি, মৎস্যজীবী দলের সদস্য ইসমাইল হোসেন সিরাজী, সংগঠনের ইউসুফ আলী মিঠুন, শফিকুল ইসলাম সবুজ, মুসা ফরাজি, সিরাজুল ইসলাম ও মনির বেপারী।