‘লক্ষ্মণরেখা’ শব্দবন্ধটি হিন্দু পুরাণের। রামচন্দ্রের ভাই লক্ষ্মণ পঞ্চবটীর কুটিরে সীতার নিরাপত্তার জন্য মাটিতে বৃত্তাকার একটি রেখা এঁকেছিলেন। সীতার জন্য কঠোর নির্দেশনা ছিল কোনও অবস্থাতেই এই চূড়ান্ত রেখা অতিক্রম করা যাবে না। করলেই মহাবিপদ। যদিও ঋষি বেশধারী রাবণের ছলনায় এই রেখা অতিক্রম করে সেই বিপদেই পা দিয়েছিলেন সীতা। যে কারণে আমাদের ভাষায় নানা বিষয়ে চূড়ান্ত সতর্কতা হিসেবে এই ‘লক্ষ্মণরেখা’ শব্দবন্ধটি ব্যবহার করা হয়। যার অর্থ নির্দিষ্ট গণ্ডি। যে সীমা লঙ্ঘন করলে ঘটতে পারে বিপদ, বিঘ্নিত হতে পারে শৃঙ্খলা।
অতিসম্প্রতি বাংলাদেশের একটি স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেলের লাইভ সম্প্রচার দেখে মনে হলো, খুব সম্ভবত বাংলাদেশের কিছু টিভি চ্যানেল সম্প্রচার সাংবাদিকতার রুচি, নীতি-নৈতিকতার ‘লক্ষ্মণরেখা’ অতিক্রম করে ফেলছে। গত ৯ মে মর্মান্তিক এক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর পাইলট আসিম জাওয়াদ। অত্যন্ত দুঃখজনক এই ঘটনার খবর বাংলাদেশের টিভি চ্যানেলগুলো ব্রেকিং নিউজ আকারে সম্প্রচার করে। সংবাদভিত্তিক টিভি চ্যানেলগুলোতে চলছিল টানা লাইভ। এত বড় একটি ঘটনার যথাযথ কাভারেজ নিয়ে টিভি চ্যানেলগুলোর মধ্যে একটা স্বাভাবিক প্রতিযোগিতাও ছিল। তবে বিষয়টা খুবই নগ্ন একটি রূপ নেয় বিকেলবেলা।
এরমধ্যেই জানা যায়, নিহত পাইলটের বাবা-মা থাকেন মানিকগঞ্জ শহরে। টেলিভিশন চ্যানেলসহ অন্যান্য মাধ্যমের সাংবাদিকরা সেখানে ছুটে যান। দেশের প্রথম সারির একটি ২৪ ঘণ্টার সংবাদভিত্তিক চ্যানেল লাইভ সম্প্রচার চলছিল। তাদের প্রতিবেদক অবস্থান করছিলেন নিহত অফিসারের ফ্ল্যাটের ভেতরে। লাইভ সম্প্রচারে চ্যানেলটির প্রতিবেদক নিহত পাইলটের মা নিলুফার খানমের মাতমের বর্ণনা দিচ্ছিলেন। এক পর্যায়ে প্রতিবেদক নিজে ‘আউট অব ভিশন’-এ গিয়ে সরাসরি পুরো ফ্রেমে দেখাতে থাকেন সদ্য সন্তান হারানো এক মায়ের আর্তনাদ, আহাজারি। এ সময় খুব স্বাভাবিকভাবেই শোকগ্রস্ত নিলুফার খানমের পোশাক স্থানচ্যূত হচ্ছিল, স্বজনরা সদ্য সন্তানহারা একজন মাকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। লাইভে সবকিছুই সম্প্রচার হয়েছিল লম্বা সময় ধরে। কিন্তু সদ্য সন্তানহারা এক মায়ের শোক-মাতমের ওই দৃশ্য টেলিভিশনের পর্দায় তখন খুবই রুচিহীন ঠেকছিল। নিশ্চিতভাইে এটি ছিল নীতি বিবর্জিত ও অর্বাচীনের কাজ, ব্যক্তিগত গোপনীয়তার ভয়াবহ লঙ্ঘন।
এমনই আরেকটি ঘটনার উল্লেখ করা প্রয়োজন মনে করছি। তখন আমি কাজ করি যমুনা টেলিভিশনে। দিনটি ছিল ২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি। সেদিন রাত ১২ টায় আমার বুলেটিন ছিল। আমি তখন নিউজরুমে। এ সময় খবর আসে বাংলা একাডেমি বই মেলা থেকে ফেরার পথে বিজ্ঞান লেখক অভিজিৎ রায় উগ্রবাদী হামলায় নিহত হয়েছেন। রাত ১০টার বুলেটিনে এই সংবাদ সম্প্রচার হয়। পরে একজন প্রতিবেদক ঢাকা মেডিকেল থেকে লাইভে এই ঘটনার বর্ণনা দেন। লাইভে প্রতিবেদকের ওই বর্ণনা শুনে, জ.ই. মামুন (যমুনা টিভির তখনকার সংবাদবিভাগের প্রধান) প্রায় চিৎকার করে ওঠেন। কারণ প্রতিবেদক লাইভে শুধু এটুকুই বলছিলেন না যে, অভিজিৎ রায় হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন, সাথে একজন নারী আহত হয়েছেন, তাঁর হাতের আঙ্গুল বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে, যার নাম রাফিদা আহমেদ এবং তিনি বলেছেন তিনি অভিজিৎ রায়ের স্ত্রী; প্রতিবেদক একইসঙ্গে লাইভে প্রশ্ন তুলেছিলেন যে, ‘একজন হিন্দু লেখক অভিজিৎ রায়ের স্ত্রী কিভাবে একজন মুসলিম নারী হন’।
কী ভয়াবহ প্রশ্ন! একজন হিন্দুর স্ত্রী যে মুসলিম কোনও নারী হতে পারেন কিংবা একজন মুসলিম পুরুষের স্ত্রী যে ভিন্ন কোনও ধর্মের হতে পারেন সে বিষয়ে কি প্রতিবেদকের কোনও ধারণাই ছিল না? আর এই প্রশ্নটি তিনি এমন সময় করছেন, যখন সেই নারীর স্বামী সন্ত্রাসীদের চাপাতির কোপে কয়েক ঘণ্টা আগে নিহত হয়েছেন এবং হামলাকারীদের আঘাতে তাঁর নিজের আঙ্গুলও বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এমন সংবেদনশীল সময়ে প্রতিবেদকের অসংবেদনশীল প্রশ্নে কেবল সংবাদ বিভাগের প্রধান কেন, যে কোনও বিবেকবান মানুষই আহত, রাগান্বিত হবেন। এটাই স্বাভাবিক।
সম্প্রচার সাংবাদিকতায় ‘ভক্সপপ’ নামে একটা টার্ম আছে। যার উৎপত্তি ল্যাটিন ভাষার ‘Vox Populi, Vox Dei’ প্রবাদ থেকে। যার অর্থ মানুষের কণ্ঠস্বর, ঈশ্বরের কণ্ঠস্বর। আর সম্প্রচার সাংবাদিকতায় যার অর্থ কোনও একটা বিষয়ে জনসাধারণ বা কোনও অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীর ছোট ৪-৭ সেকেন্ডের ছোট্ট সাক্ষাৎকার, যাতে সাদামাটা তথ্য ও মতামত থাকে। ভক্সপপ সাধারণত তাৎক্ষণিকভাবে নেওয়া হয়। এতে ভক্সপদাতার চিন্তা করার তেমন কোনও সুযোগ থাকে না। অনেক সময় ভক্সপপ নেওয়া হয় লাইভ।
সম্প্রচার সাংবাদিকতার প্রযুক্তি সহজলভ্য হয়ে আসায় বিভিন্ন ইভেন্টে এই ধরনের লাইভ ভক্সপপ নেওয়ার প্রবণতা বেড়ে গেছে। তাই কোনও উৎসব আয়োজন, কোনও দুর্ভোগ, দুযোর্গের ঘটনায় এ রকম সম্প্রচার হরহামেশাই দেখা যাচ্ছে। সম্প্রতি পহেলা বৈশাখের মঙ্গল শোভাযাত্রায় এক শিশু ও তরুণের এমন একটি ভক্সপপ বেশ ভাইরাল হয়েছে। কারণ তারা মঙ্গল শোভাযাত্রা নিয়ে যথাযথ কথা বলেননি। ভুল বলেছিলেন। কিন্তু টিভি চ্যানেলটি লাইভ সম্প্রচারে ছিল বলে সেটা মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়েছে ইন্টারনেট পরিসরে। কারও অনুমতি ছাড়া আকস্মিক মোবাইল লাইভের বুম বাড়িয়ে দেওয়া, একটু কৌশলে বিপদে ফেলার দৃষ্টিকোণ থেকে প্রশ্ন করার কোনও অধিকার একজন সম্প্রচার সাংবাদিক রাখেন না। এটা গুরুতর অন্যায়, সম্প্রচার সাংবাদিকতায় একেবারে অগ্রহণযোগ্য। কিন্তু এই প্রবণতা চলমান।
লাইভ সম্প্রচার ও সায়মন জন ড্রিং এর চিৎকার
২০১৩ সালের শেষ দিকে যোগ দিয়েছিলাম যমুনা টিভি’তে। তখন চ্যানেলটিতে উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করতেন ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের যুদ্ধদিনের বন্ধু সায়মন জন ড্রিং। তখন টিভি’টির টিম গোছানোর কাজ চলছিল। অফিস ছিল মোটামুটি ফাঁকা। একদিন দুপুরে অন্য এক চ্যানেলের সংবাদে লাইভ সম্প্রচার দেখে সায়মন মোটামুটি চিৎকার করে ডাকতে শুরু করলেন, ফাহিম…ফাহিম। তখন ফাহিম আহমেদ চ্যানেলটির গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন, এখনও আছেন। সায়মনের হাঁকডাক শুনে আমিও গেছিলাম তাঁর কক্ষে। তিনি ভীষণ উত্তেজিত। রাগে মোটামুটি লাল হয়ে গেছেন। ঘটনা কী? তখন তিনি, রাগের সাথে বললেন বাংলাদেশের সম্প্রচার সাংবাদিকতায় হচ্ছে কী?
সেদিন মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের একটি রায় হয়েছিল। একটি টিভি’তে লাইভ চলছিল চট্টগ্রাম থেকে। গণজাগরণ মঞ্চের বিজয় মিছিল। ওই মিছিলের লাইভ করতে করতে একজন প্রতিবেদক মিষ্টির প্যাকেট থেকে মিষ্টি নিয়েছেন এবং লাইভেই সেই মিষ্টি খেয়েছেন। সায়মনের বিস্ময়, টিভি লাইভে একজন প্রতিবেদক কীভাবে মিষ্টি নেন, আবার সেই মিষ্টি কীভাবে মুখে চালান করে দেন!
সাংবাদিকের নিরপেক্ষতা ও দায়িত্বশীলতা কোথায়? ২০০০ সালে একুশে টেলিভিশনের মাধ্যমে বাংলাদেশের সম্প্রচার সাংবাদিকতার একটি স্বর্ণযুগের সূচনা করেছিলেন সায়মন জন ড্রিং। স্থাপন করেছিলেন একটি মার্জিত মানদণ্ড। সেই মান ও মানদণ্ড লঙ্ঘিত হওয়ায় সায়মন ছিলেন ভীষণ ক্ষুব্ধ।
কী আছে সম্প্রচার নীতিমালায়?
জাতীয় সংসদে পাশ হওয়ার পর ২০১৪ সালের ৬ আগস্ট গেজেট আকারে প্রকাশিত হয় ‘জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা-২০১৪’। সম্প্রচার মাধ্যমের অনুষ্ঠান, সাংবাদিকতা ও বিজ্ঞাপনে এক ধরনের শৃঙ্খলা আনতে এই নীতিমালা প্রণীত হয়। এতে সম্প্রচার সাংবাদিকতা ও সম্প্রচার মাধ্যমের গুণগত মান নিশ্চিতকরণ, সম্প্রচারের অন্যায্য (Unjust), অনুচিত (Unfair) বিষয়াদি পরিহার এবং গোপনীয়তা ক্ষুণ্ন করে (Infringement of privacy) এমন বিষয়গুলো দেখভাল করতে একটি স্বাধীন সম্প্রচার কমিশন গঠনের বিধান আছে। যা হবে একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা। এ নীতিমালায় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। যেগুলোর মধ্যে কয়েকবার উল্লেখিত হয়েছে ব্যক্তিগত গোপনীয়তার বিষয়টি। যেমন পঞ্চম অধ্যায়ের ৫ এর ১.৩ ধারায় বলা হয়েছে, ‘কোন ব্যক্তির ব্যক্তিগত বা গোপনীয় বা মর্যাদা হানিকার তথ্য প্রচার করা যাবে না।’
এই জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালায় এসব বিষয় বাস্তবায়নে একটি স্বাধীন কমিশন গঠন করার কথা থাকলেও ১০ বছরেও গঠিত হয়নি সম্প্রচার কমিশন। তাই সম্প্রচার সাংবাদিকতায় যা-তা অবস্থা চললেও কারও কোনও ভ্রক্ষেপ নেই। এমনকি এ বিষয় নিয়ে কারও কাছে অভিযোগ দেওয়ারও জায়গা নেই।
ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার কী করছে?
বাংলাদেশে সম্প্রচার মাধ্যমের সাংবাদিকদের বড় সংগঠন ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার। ২০১৯ সালে যাত্রা শুরু করা এই সংগঠনটি এখন বেশ বড়, সাংগাঠনিকভাবে শক্তিশালী। সংগঠনটির সবশেষ বার্ষিক সম্মেলনের আগে তাঁদের কয়েকজন শীর্ষ সংগঠকের সাথে আলাপ হয়েছিল। তাঁরা বাংলাদেশের সম্প্রচার সাংবাদিকতার একটি নীতিমালা নিয়ে কাজ করছেন বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু আজও তা আলোর মুখ দেখেনি। তাই, সাংবাদিকতার গুণগত মান বৃদ্ধির জন্য নীতিমালা তৈরি এবং তা বাস্তবায়নে একটি সংগঠনের প্রয়াসে কিছু হবে বলে মনে হয় না। তবে আশা রাখা যেতে পারে।
ভরসা আন্তর্জাতিক নীতিমালা ও বাস্তবসম্মত উপলব্ধি
আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমের সম্প্রচার সাংবাদিকতা নিয়ে বিভিন্ন নীতিমালা রয়েছে। যেগুলোতে বর্ণবাদ, শিশু-নারীর অধিকার, আদিবাসীদের অধিকার, অশ্রাব্য শব্দের ব্যবহারসহ নানা বিষয়ে দিক নির্দেশনা রয়েছে। এই নির্দেশনাগুলোর মধ্যে বিবিসি’র ‘Broadcast media and regulation’ শিরোনামের নীতিমালাটি বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বেশ প্রাসঙ্গিক। এই নীতিমালার নীতি-নৈতিকতার উপ-ধারায় বলা হয়েছে, একজন সম্প্রচার সাংবাদিককে মানুষের ব্যক্তিগত গোপনীয়তাকে অবশ্যই সম্মান দেখাতে হবে। তাতে বলা হয়েছে ‘respecting people’s privacy, particularly in times of grief, illness or shock’। একজন সাংবাদিককে দুঃখ, অসুস্থতা ও শোকের সময় অবশ্যই একজন মানুষের ব্যক্তিগত গোপনীয়তাকে সম্মান করতে হবে। আর ঠিক সে বিষয়টিই লঙ্ঘিত হয়েছে নিহত পাইলট আসিম জাওয়াদের মৃত্যুর ঘটনায়। যা ছিল বাংলাদেশের সম্প্রচার সাংবাদিকতার ইতিহাসে একটি দুঃখজনক ঘটনা।
একজন সম্প্রচার সাংবাদিক হিসেবে আমি এটিএন বাংলায় প্রায় চার বছর ও যমুনা টিভি’তে প্রায় এক বছর সাংবাদিক জ. ই. মামুনের অধীনে কাজ করেছি। তাঁর কাছ থেকে আমি সম্প্রচার সাংবাদিকতার অনেক কিছু শিখেছি। যেগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল পরিমিতি বোধ সম্পন্ন হওয়া। একজন সম্প্রচার সাংবাদিকের জীবনে প্রতিদিন নতুন নতুন ঘটনা ঘটে, নতুন বাস্তবতা সামনে আসে। তাই নতুন পরিস্থিতিতে একজন সাংবাদিককে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করতে হয়। আর এক্ষেত্রে তাঁকে হতে হয় পরিমিতি বোধ সম্পন্ন। সহজ কথা, একজন সাংবাদিককে জানতে হবে কী করা যাবে, আর কী করা যাবে না। সাংবাদিককে দায়িত্ব পালনের সময় মাথায় রাখতে হবে আমাদের সমাজ, সংস্কৃতি ও ধর্মীয় মূল্যবোধের বিষয়টিও।
কিন্তু কথা হচ্ছে, যাদের হাতে টেলিভিশনের মাইক্রোফোন ধরিয়ে দিয়ে, ক্যামেরা ধরিয়ে দিয়ে আমরা মাঠে পাঠিয়ে দিচ্ছি তাদের যথাযথ পেশাগত শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করা হচ্ছে কি? একইসঙ্গে প্রশ্ন করা দরকার যাঁরা ঘটনাস্থল থেকে সরাসরি সম্প্রচার নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে স্টেশনে কাজ করছেন তাদেরও কি যথাযথ পেশাগত প্রশিক্ষণ রয়েছে বা তাঁরা কি সেসব মেনে কাজ করছেন? এসব বিষয় নিয়ে উদ্বেগ আরও বাড়ছে এ কারণে যে, এখন কেবল টেলিভিশন চ্যানেলই নয়, প্রিন্ট ও অনলাইন সংবাদমাধ্যমগুলোও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লাইভ সম্প্রচার করছে, ভিডিও কনটেন্ট তৈরি ও প্রচার করছে এবং অনেক ক্ষেত্রেই সেসব কনটেন্ট যথাযথ সম্পাদনা ছাড়াই প্রচার করা হচ্ছে। ফলে টেলিভিশন চ্যানেলই হোক কিংবা পত্রিকা বা অনলাইন সরাসরি সম্প্রচারের ক্ষেত্রে সবাইকেই আরও অনেক দায়িত্বশীল হতে হবে।
সরাসরি সম্প্রচার ও ভিডিও কনটেন্ট প্রকাশের মতো বিষয়গুলোতে সাংবাদিকতার নৈতিকতা মেনে চলা এবং এমন সব লক্ষণরেখা মেনে চলায় আরও জোর দেওয়া না হলে আমাদের অপেক্ষায় থাকতে হবে আরও অরুচিকর, মানহীন ও নীতিহীন গণমাধ্যম আধেয়র জন্য।
লেখক: সহকারী অধ্যাপক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।
মেইল: minhaj_uddin_du@yahoo.com