Beta
সোমবার, ১২ মে, ২০২৫
Beta
সোমবার, ১২ মে, ২০২৫

দেনা পরিশোধে চাপমুক্ত সময় চান ইভ্যালির রাসেল

রাসেল
ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রাসেল
[publishpress_authors_box]

ব্যবসার ওপর কোনও ধরনের চাপ না এলে মুনাফা থেকে গ্রাহকের সমস্ত পাওনা পরিশোধ করা সম্ভব বলে মনে করেছেন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রাসেল।

বিশাল মূল্যছাড়ে পণ্য বিক্রির অর্ডার নিয়ে সময়মতো তা ডেলিভারি করতে না পারায় ইভ্যালির কাছে আটকে রয়েছে গ্রাহকদের সাড়ে ৩০০ কোটি টাকা। একই সঙ্গে মার্চেন্টদের পাওনা দেড়শ কোটি টাকা।

বিপুল অংকের এই দেনা পরিশোধ করতে দুই থেকে তিনবছর সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান।

তিনি বলেন, “ ইভ্যালি গ্রাহকদের সব টাকা ফেরত দেবে। কিন্তু হয়রানি ও চাপ প্রয়োগ করলে তিনি তা দিতে পারবেন না। ব্যবসা করতে পারলে পাওনা পরিশোধে কোনও সমস্যা হবে না।”

মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) আয়োজিত এক আলোচনা সভা শেষে সকাল সন্ধ্যাকে এসব কথা বলেছেন ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক। 

প্রতারণার অভিযোগ শ’খানেক মামলায় অভিযুক্ত রাসেল ২৭ মাস কারাভোগের পর গত ১৮ ডিসেম্বর জামিনে মুক্ত হন। এর পরপরই ইভ্যালির ফেইসবুক পেইজ থেকে লাইভে গিয়ে নতুন করে ব্যবসা শুরুর পরিকল্পনার কথা জানান।

এর ধারাবাহিকতায় ‘বিগ ব্যাং’ শিরোনামে নতুন অফার ঘোষণা করে ইভ্যালি। এই অফারের মাধ্যমে বড় ধরনের মুনাফা করেছেন, দাবি রাসেলের।

কীভাবে এত দেনা তৈরি হলো তা জানতে চাইলে মো. রাসেল বলেন, “আমরা গ্রাহককে আকৃষ্ট করতে বড় ধরনের ছাড় দিয়েছিলাম। তবে পণ্য কিনতে হয়েছিল বেশি দামে। ফলে সেখানে আমাদের একটি ঘাটতি তৈরি হয়।”

গ্রাহকের দেওয়া পণ্যমূল্যের পুরো টাকা এই মুহূর্তে ইভ্যালির হাতে নেই জানিয়ে তিনি বলেন, “গ্রাহকদের টাকা পরিশোধের স্বদিচ্ছা আমাদের আছে। তা না হলে আমি জেল খাটার আগেই পালিয়ে যেতাম। আমি তো পালিয়ে যাইনি।”

ই-কমার্স খাতের নীতিমালার ঘাটতির কারণে ইভ্যালিকে এই সংকটে পড়তে হয়েছে বলেও অভিযোগ মো. রাসেলের।

তিনি বলেন, “বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) উদ্যোগের ফলে বর্তমানে আগাম টাকা নিয়ে ই-কমার্স ব্যবসা পরিচালনার সুযোগ বন্ধ হয়েছে।” 

এই দফায় গত ১৫ দিনে ইভ্যালি ৫৩ লাখ টাকা মুনাফা করেছে বলে জানান মো. রাসেল। এই টাকা দিয়ে গ্রাহকদের পাওনা পরিশোধ করা হবে বলেও জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, “ব্যবসা করতে পারলে দেনা পরিশোধে কোনও সমস্যা হবে না।”

ইভ্যালি
ডিআরইউতে আয়োজিত আলোচনা সভায় কথা বলছেন মো. রাসেল। ছবি : সকাল সন্ধ্যা

এর আগে ‘ই-কমার্স ও ই-সেবা খাতে ভোক্তার অধিকার, আমাদের করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় অংশ নেন মো. রাসেল। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) এ এইচ এম সফিকুজ্জামান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ।

ইভ্যালির মতো ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোকে ব্যবসা করতে দেওয়ার পক্ষে নিজের অবস্থানের কথা জানান ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।

তিনি বলেন, “যদি তাদের ব্যবসাই না করতে দেওয়া হয়, তাহলে গ্রাহকের টাকা কীভাবে ফেরত দেবে। এমন ই-কমার্সগুলোর মধ্যে যারা ব্যবসা করতে আগ্রহী আমি তাদের সুযোগ দেওয়ার পক্ষে।”

ভোক্তা অধিকারের মহাপরিচালক জানান, অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে আগামী ৩০ জানুয়ারি ১০০ গ্রাহককে টাকা ফেরত দেবে ইভ্যালি। এছাড়া ইভ্যালি কীভাবে ব্যবসা করবে, তাদের ব্যবসার নীতিমালা কী হবে এবং ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানটি কীভাবে টাকা পরিশোধ করবে, সে বিষয়ে ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রাসেল একটি নীতিমালা বা অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি করে ভোক্তা অধিকারকে জানাবেন।

দেশে অসংখ্য এফ-কমার্স প্রতিষ্ঠান কোনও ধরনের লাইসেন্স ছাড়া ব্যবসা করছে জানিয়ে তিনি বলেন, “এদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে অনেক সময় ব্যবস্থা নেওয়ারও সুযোগ থাকে না। কারণ অনলাইনে দেওয়া ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর অনেক ক্ষেত্রেই সঠিক হয় না। সেক্ষেত্রে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান এখন অনেক শৃংখলার মধ্যে চলে এসেছে। ডিজিটাল বিজনেস আইডিন্টিফিকেশন নম্বর ছাড়া এখন কেউ ই-কমার্স ব্যবসা করতে পারে না।”

আলোচনায় অংশ নিয়ে মো. রাসেল জানান, এখন ক্যাশ অন ডেলিভারি ছাড়া কোনও অর্ডার নেয় না তার প্রতিষ্ঠান। এভাবে নেওয়া প্রতিটি অর্ডারে ৫-৬ শতাংশ মুনাফা করার সুযোগ পাওয়া যাচ্ছে। এইভাবে ব্যবসা করতে পারলেও সব দেনা পরিশোধ করতে পারবেন বলে তিনি আশাবাদী। 

রাসেল বলেন, “মালিকপক্ষকে জেলে রাখলে গ্রাহকদের তথ্য পাওয়া যাবে না। আর গ্রাহকদের তথ্য পাওয়া না গেলে টাকা ফেরতও দেওয়া যাবে না।”

ইভ্যালির উত্থান

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের সাবেক ছাত্র মো. রাসেলের কর্মজীবন শুরু একটি বেসরকারি ব্যাংকে। ৬ বছর পর ব্যাংকের চাকরি ছেড়ে শিশুদের ডায়াপার বিক্রির ব্যবসা শুরু করেন। এরপর ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে প্রতিষ্ঠা করেন ই-কমার্স সাইট ইভ্যালি ডটকম।

শুরুতেই গ্রাহক আকৃষ্ট করতে ইভ্যালি চালু করে ক্যাশব্যাক অফার। এ অফারের আওতায় পণ্যভেদে ১০ শতাংশ থেকে ৩০০ শতাংশ পর্যন্ত ক্যাশব্যাক পেতেন গ্রাহকরা। পণ্য গ্রাহকের কাছে পৌঁছানোর পাশাপাশি অতিরিক্ত টাকা জমা হতো ইভ্যালিতে থাকা ভার্চুয়াল অ্যাকাউন্ট ই-ওয়ালেটে। এরপর সেই ভার্চুয়াল টাকার সঙ্গে নির্দিষ্ট হারে নগদ টাকা দিয়ে পণ্যের অর্ডার করতে পারতেন গ্রাহকরা।

এমন আকর্ষণীয় অফারের পর অসংখ্যা মানুষ ইভ্যালি থেকে কেনাকাটা শুরু করেন। এরপর ‘সাইক্লোন’ নামে একটি অফারের মাধ্যমে বিশাল ছাড়ের ঘোষণা দেওয়া হয়। সেখানেও পণ্যভেদে ১০-৮০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় পাওয়া যেত।

এভাবে অল্প সময়ের মধ্যেই বিপুল জনপ্রিয়তা পায় ইভ্যালি। মার্কেটিংয়ের অংশ হিসেবে গণমাধ্যমে বিজ্ঞাপনের পেছনে বড় অংকের অর্থ ব্যয় করতে শুরু করে। পাশাপাশি বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের স্পন্সর হয় ইভ্যালি। বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের অনুষ্ঠানে স্পন্সর করা এবং তারকা ও সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সারদেরও কাজে লাগানো হয় প্রতিষ্ঠানটির পরিচিতির কাজে।

‘বিশাল মূল্যছাড়ে’ পণ্য পাওয়ার আশ্বাসে প্রতিদিন লাখ লাখ অর্ডার পড়তে শুরু করে ইভ্যালিতে। তবে অর্ডার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে গ্রাহকের অপেক্ষার প্রহর। ৪৫ দিনের মধ্যে পণ্য ডেলিভারির করার কথা থাকলেও, কখনও কখনও তা তিন-ছয় মাসও ছাড়ায়।

এ অবস্থায় গ্রাহকদের মধ্যে আস্থার সংকট দেখা দেয়। ইভ্যালির বিজনেস মডেল নিয়ে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা। গণমাধ্যমে নানা ধরনের সংবাদ প্রকাশ হলে টনক নড়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর। শুরু হয় ইভ্যালিকে নিয়ে খোঁজখবর নেওয়া।

২০২১ সালের জুনে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি প্রতিবেদনে দেখা যায়, গ্রাহক ও মার্চেন্টদের কাছে ইভ্যালির বকেয়ার পরিমাণ ৪০৩ কোটি টাকা। যেখানে প্রতিষ্ঠানটির চলতি সম্পদের পরিমাণ মাত্র ৬৫ কোটি টাকা।

এরপরই নড়েচড়ে বসে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

ইভ্যালি হয়ে ওঠে অনুপ্রেরণার নাম

এই মডেলে অনুপ্রাণিত হলে দেশে বাড়তে থাকে এই ধরনের ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা। ইভ্যালিকে নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তদন্ত শুরুর পর একে একে শনাক্ত হয় ৩০-৩৫টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান।

এর মধ্যে আলিশামার্ট, কিউকম, ই-অরেঞ্জ, ধামাকা, সিরাজগঞ্জ শপ, আলাদিনের প্রদীপ, বুম বুম, আদিয়ান মার্ট, নিডস, আনন্দের বাজার, আলিফ ওয়ার্ল্ড, দালাল প্ল্যাস অন্যতম।

সেসময় কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তাকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ধরপাকড়ের সময় কিছু উদ্যোক্তা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান বলেও সেসময় খবরে আসে।

এক পর্যায়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনায় ইভ্যালি ও একই মডেলে ব্যবসা করা ই-কমার্স সাইটগুলোর সঙ্গে লেনদেন স্থগিত করতে শুরু করে ব্যাংক এবং পেমেন্ট গেটওয়ে সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো।

ট্রেন্ডজ, রঙ বাংলাদেশ, আর্টিসান আউটফিটার্স, ফিট এলিগ্যান্স, রিও ইন্টারন্যাশনালের মতো প্রতিষ্ঠিত ব্র্যান্ডগুলো ইভ্যালির গিফট ভাউচার গ্রহণ স্থগিতের ঘোষণা দেয়। অন্যান্য মার্চেন্টরাও বকেয়া টাকার জন্য চাপ দিতে শুরু করে। পণ্য না পেয়ে ইভ্যালি অফিসে ধর্না দিতে শুরু করেন গ্রাহকরা।

অগ্রিম মূল্য পরিশোধ করা গ্রাহকদের সময়মত পণ্য ডেলিভারি করতে না পারায় যেসব ক্রেতাদের রিফান্ড চেক দেয় ইভ্যালি। তবে প্রতিষ্ঠানটির ব্যাংকে পর্যাপ্ত ব্যালেন্স না থাকায় সেগুলো নগদায়ন হয়নি। এরপর গ্রাহক ও মার্চেন্টরা প্রতারণার অভিযোগ তুলতে শুরু করেন।

সরকারের হস্তক্ষেপে বন্ধ হয় ইভ্যালি

গ্রাহক ও পণ্য সরবরাহকদের কাছ থেকে ইভ্যালি যে পরিমাণ অর্থ নিয়েছে তারমধ্যে ৩৩৮ কোটি টাকার কোনো হদিস না পাওয়ায়, এই টাকা আত্মসাৎ বা অবৈধভাবে সরিয়ে ফেলার আশঙ্কা থেকে ইভ্যালির বিরুদ্ধে মামলা করতে ২০২১ সালের ৬ জুলাই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

এরপর ওই টাকার সন্ধানে ৮ জুলাই তদন্তে নামে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ৯ জুলাই ইভ্যালির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন এবং তার স্বামী ও কোম্পানির সিইও মো. রাসেলের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। তদন্ত চলমান থাকায় একই নিষেধাজ্ঞা আসে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের পক্ষ থেকেও।

ইভ্যালির ব্যবসা পদ্ধতি ও গ্রাহক ভোগান্তি কারণে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে কেন আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা জানতে ই-কমার্স কোম্পানিটিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। কীভাবে গ্রাহক ও মার্চেন্টদের বিশাল অংকের এই দায় মেটানো হবে তার ব্যাখ্যাও চাওয়া হয় সেই নোটিশে।

এই বিষয়টি ব্যাখা করতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে ছয় মাস সময় চায় ইভ্যালি। তবে এর জবাবে প্রতিষ্ঠানটিকে ওই বছরের ২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট ২২ দিন সময় দেয় মন্ত্রণালয়।

এরমধ্যে ৮ আগস্ট ইভ্যালির ভবিষ্যত নির্ধারণ করতে ৯ সদস্যের একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

ওই কমিটিতে রাখা হয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, তথ্য-প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ, বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও প্রতিযোগিতা কমিশনের প্রতিনিধিদের।

এরপর ৫ সেপ্টেম্বর ইভ্যালির সিইও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে জানান, গ্রাহকদের কাছে ৩১১ কোটি এবং মার্চেন্টদের কাছে ২০৬ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে তার প্রতিষ্ঠানের।

ইভ্যালির নানা কীর্তিকলাপ যখন প্রকাশ্যে আসতে শুরু করে তখন নতুন ‘ছলচাতুরি’র আশ্রয় নেয় প্রতিষ্ঠানটি। ফেইসবুক পোস্টে প্রতিষ্ঠানইট জানায়, দেশের বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী যমুনা গ্রুপ ইভ্যালিতে এক হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করছে।

তবে যমুনা গ্রুপের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ইভ্যালিতে কোনও বিনিয়োগ করছে না তারা।

এরপর ২০২১ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে গঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয়ের ওই কমিটি জানায়, ইভ্যালিসহ ১০ কোম্পানি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ভোক্তা অধিকার আইন ও দণ্ডবিধি আইন লঙ্ঘন করেছে।

কমিটির সদস্য এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হাফিজুর রহমান সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, “জনগণকে প্রটেকশন দেওয়ার কোনও নিশ্চয়তা আমরা দিতে পারছি না। তবে সরকার চেষ্টা করবে গ্রাহকদের পাওনা বা পণ্য যাতে বুঝে পায়। মার্চেন্টদের ক্ষেত্রেও তাই। তবে ইভ্যালি যদি টাকা পাচার করে থাকে বা সেই টাকা উদ্ধার করা না যায় তাহলে হয়তো বিষয়টি কঠিন হবে। তবে গ্রাহকদের স্বার্থকেই আমরা অগ্রাধিকার দেব। অপরাধী যাতে শাস্তি পায় সেটা আমাদের বিবেচনায় আছে।”

২০২১ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর রাতে গুলশান থানায় অর্থ আত্মসাতের মামলা করেন ইভ্যালির গ্রাহক আরেফ বাকের ও তার বন্ধুরা; যার পরিপ্রেক্ষিতে ১৬ সেপ্টেম্বর বিকালে অভিযান চালিয়ে রাসেল ও তার স্ত্রী শামীমাকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব।

ইভ্যালিতে প্রসাশক নিয়োগ

আদালতের নির্দেশে সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের নেতৃত্বে ইভ্যালির পর্ষদ গঠন করা হয়। টাকা উদ্ধারের পথ বের করার উপায় খোঁজার ভার ছিল পুনর্গঠিত পর্ষদের ওপর।

তবে তারা প্রতিষ্ঠানের সিন্দুক ভেঙে মাত্র আড়াই হাজার টাকা পান। প্রতিষ্ঠানটির কয়েকটি ব্যবহার করা গাড়ি নিলামে বিক্রি করা হয়। এতে তেমন কোনো অর্থ উদ্ধার না হওয়ায় একসময় তারাও হাল ছেড়ে দেন কারাগার থেকে বের হওয়া ইভ্যালির চেয়ারম্যান শামীমার হাতে। 

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত