প্রতারণার এক মামলায় সাজা হয়েছে বিতর্কিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেল এবং তার স্ত্রী ও কোম্পানির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনের।
ইভ্যালির এক গ্রাহকের করা এই মামলায় রবিবার এই রায় আসে ঢাকার মহানগর হাকিম মো. মিনহাজুর রহমানের আদালত থেকে।
রায়ে দুজনকে তিন বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি জরিমানা করা হয়েছে ৫ হাজার টাকা। জরিমানার টাকা না দিলে তাদের আরও ছয় মাস কারাভোগ করতে হবে।
আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাদী পক্ষের আইনজীবী সাকিবুল ইসলাম।
২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে ইভ্যালির গ্রাহক মুজাহিদ হাসান ফাহিম মামলাটি করেন।
এজাহারে অভিযোগ করা হয়, ইভ্যালির চমকপ্রদ বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট হয়ে বাদী ২০২১ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি ইয়ামাহা আর ওয়ান ফাইভ বাইক অর্ডার করেছিলেন। মূল্য পরিশোধ করলেও ইভ্যালি প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ৪৫ দিনের মধ্যে বাইকটি সরবরাহ করতে ব্যর্থ হয়।
পরে তিনি যোগাযোগ করলে ইভ্যালি কর্তৃপক্ষ তাকে ৫ লাখ টাকা ফেরত দেয় চেকের মাধ্যমে। কিন্তু ব্যাংক হিসাবে পর্যাপ্ত পরিমাণ অর্থ না থাকার কথা জানিয়ে চেকটি তখন ব্যাংকে জমা না দিতে অনুরোধ জানায়।
বাদী চেকটি ব্যাংকে আর জমা দেননি। পরে যোগাযোগ করে ইভ্যালির কাছ থেকে অর্থ ফেরত না পেয়ে লিগাল নোটিস পাঠান বাদী। তাতেও ফল না পেয়ে মামলা করেন।
এই মামলায় গত বছর রাসেল ও তার স্ত্রীর সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশও দিয়েছিল আদালত।
এই ধরনের আরও মামলা রয়েছে রাসেলদের বিরুদ্ধে। কয়েকটিতে সাজার রায়ও এসেছে।
ইভ্যালি ২০১৮ সালে যাত্রা শুরু করার পর গাড়ি, মোটরবাইক, রেফ্রিজেরেটরসহ দামি নানা পণ্য অর্ধেক দামে বিক্রির বিজ্ঞাপন দিয়ে সাড়া ফেলে দিয়েছিল। অনেকে অর্ডার দিলেও পণ্য পায়নি। এক পর্যায়ে ক্রেতা ও পণ্য সরবরাহকারীদের কাছে ৫৪৩ কোটি টাকার দায়ে পড়ে ইভ্যালি।
এদিকে পণ্য কিংবা টাকা ফেরত চেয়েও না পেয়ে ২০২১ সালের বিক্ষোভে নামে গ্রাহকরা। বিভিন্ন গ্রাহক মামলা করতে থাকলে ২০২১ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর রাসেল ও শামীমাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
আট মাস কারাবাসের পর ২০২২ সালের ৬ এপ্রিল জামিনে কারামুক্ত হন শামীমা। রাসেল জামিনে ছাড়া পান ২০২৩ সালের ১৯ ডিসেম্বর।
মুক্তি পাওয়ার পর রাসেল গ্রাহকদের পণ্য ও অর্থ পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দিলেও এখনও অধিকাংশ গ্রাহক না পেয়েছেন পণ্য, না পেয়েছেন অর্থ।


