পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গীত জগতে নেমে এলো শোকের ছায়া। কলকাতার ফ্ল্যাটে পাওয়া গেল ব্যান্ড সঙ্গীত শিল্পী চন্দ্রমৌলির ঝুলন্ত দেহ। বেইজিস্ট চন্দ্রমৌলি পশ্চিমবঙ্গের বাংলা ব্যান্ড ফসিল্স -এর প্রাক্তন সদস্য ছিলেন। এ ছাড়াও গোলক, জম্ব্ কেজ কন্ট্রোল নামের ব্যান্ডের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন তিনি।
রোববার সন্ধ্যায় ৪৮ বছর বয়সী এই শিল্পীর দেহ উদ্ধার করা হয়। কলকাতার ওয়েলিংটনের এক ভাড়া বাড়িতে বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকতেন চন্দ্রমৌলি। রোববার এক অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন মধ্য কলকাতায়। সেখানেই আত্মহনন করলেন এই শিল্পী।
শিল্পীকে তারই এক ব্যান্ড সদস্য মহুল চক্রবর্তী প্রথম ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেন।
মহুল বলেন, ‘‘নতুন করে দল গড়া হল, সদ্য শেষ হয়েছে একটি মিউজিক ভিডিওর কাজ। তার মধ্যে এ রকম কাণ্ড ঘটে যাবে ভাবতেই পারিনি। যে অবস্থায় আজ তাকে দেখেছি, ভাবতেই পারছি না।’’
জানা গেছে, সোমবার চন্দ্রমৌলির শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে। শেষকৃত্যে তার পরিবারের পাশাপাশি তার ব্যান্ড ‘গোলক’ এর সদস্যরাও উপস্থিত থাকবে।
ফসিলস্ এর ভক্তদের মাঝে ইতিমধ্যেই নেমে এসেছে শোকের ছায়া। সামাজিক মাধ্যমে চন্দ্রমৌলির পরিচিতরা শোক প্রকাশ করেছেন।
২০০০ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ফসিলস্ ব্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন চন্দ্রমৌলি।
সাবেক বেইজিস্টের মৃত্যুতে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে ফসিলস এর ভোকাল ও ফ্রন্টম্যান রূপম ইসলাম লেখেন, ”আমাদের যখনই কথা হয়েছে সেটা দর্শন ও শিল্প নিয়ে। আমার তেমন কিছু গানই গচ্ছিত করে রেখেছিলাম তোর জন্য। সেগুলোর অন্যতম উদাহরণ হল আদমের সন্তান, আমি তোমায় ভালবাসি এর মতো গান এ ছাড়াও বেশ কিছু গান রয়েছে। গত বছরও আমাদের কথা হয়েছে। যে গানগুলো নিয়ে আমরা পরীক্ষানিরীক্ষা করতে পারতাম।”
জ্যাজ ও ধ্রুপদীর ফিউশন করে ‘নতুন কিছু সৃষ্টি’ করার মতো প্রতিভা চন্দ্রমৌলির ছিল জানিয়ে রূপম লেখেন, “তুই বলেছিলি নিজেকে গোছানোর জন্য সময় নিচ্ছিস। আমি ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করতে রাজিও ছিলাম। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে সেই অপেক্ষার কোনও অন্ত নেই।”
রূপম বলেন, চন্দ্রমৌলির হাসি ছিল হইহই করা। কখনও তিনি বই লিখবেন চন্দ্রের সঙ্গে তার কাজের অভিজ্ঞতা নিয়ে। কিন্তু চন্দ্রমৌলির মৃত মুখটি দেখতে চান না।
রূপমের ভাষায়, “আমি মৃতদেহের মুখে তোকে দেখব না। তোকে চিনব না এ ভাবে। আমি শুনেছিলাম তোর নতুন গানের কথা, আমরা আলোচনা করেছিলাম নতুন ধরনের শব্দের সম্ভবনা নিয়েও। মনে হয়েছিলে ফের যেন তুই স্বক্ষেত্রে ফিরে আসছিস।“