নির্বাচন কমিশনের ডাটা সেন্টারে সংরক্ষিত দেশের ১১ কোটিরও বেশি নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্য ২০ হাজার কোটি টাকায় বিক্রি অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগে বলা হয়েছে, এসব নাগরিকদের ৪৬ ধরনের ব্যক্তিগত তথ্যের মিরর কপি তৈরি করে বেআইনিভাবে দেশি-বিদেশি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে।
এ ঘটনায় ডাটা সেন্টারের সাবেক পরিচালক তারেক এম বরকতউল্লাকে গ্রেপ্তারও করেছে পুলিশ। বুধবার সকালে ঢাকার কাফরুলের উত্তর কাজীপাড়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মেট্রোপলিটর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।
তার বিরুদ্ধে কাফরুল থানায় সাইবার নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করা হয়েছে। যেখানে নাম উল্লেখ করে আসামি করা হয়েছে ১৯ জনকে। অজ্ঞাত রয়েছেন আরও কয়েকজন।
পরে বিকালে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি খুলে বলেন ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপ কমিশনার তালেবুর রহমান।
তিনি বলেন, “২০২২ সালের ৪ অক্টোবর এনআইডি যাচাই সেবা গ্রহণ বিষয়ে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন ও আইসিটি মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি সই হয়। যার অনুচ্ছেদ ২ অনুসারে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল নির্বাচন কমিশনের তথ্য উপাত্ত কোনও অবস্থাতেই কোনও ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে বিনিময় বা বিক্রি করতে পারবে না “
এই চুক্তি অনুসারে ১১ কোটিরও বেশি নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্যের মিরর কপি তৈরি করে ২০১৯ সালের এপ্রিলে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলকে দেওয়া হয় জানিয়ে তালেবুর বলেন, “বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল এসব মিরর কপি ওই বছরেরই সেপ্টেম্বরে ডিজিকন গ্লোবাল সার্ভিস লিমিটেড নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে বানিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যবহারের জন্য দেয়।
“ডিজিকন গ্লোবাল সার্ভিস লিমিটেড নাগরিকদের ব্যক্তিগত এসব তথ্য porichoy.gov.bd নামের একটি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ১৮০ টিরও বেশি দেশি-বিদেশি, সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করতে শুরু করে।”
জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ নির্বচন কমিশন সচিবালয়ে সংরক্ষিত ১১ কোটিরও বেশি নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্য সংম্বলিত ডাটা সেন্টারটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো হিসেবে স্বীকৃত জানিয়ে তিনি বলেন, “গ্রেপ্তার ব্যক্তি বিভিন্ন কোম্পানিসহ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামোতে বেআইনিভাবে প্রবেশ করে সেখান থেকে ডাটাবেজের অনুলিপি সংগ্রহ করে স্থানান্তর করেন। যার মাধ্যমে তিনি ডিজিটাল ও ইলেকট্রনিক উপায়ে প্রতারণা করেন।
“এছাড়াও তারা ব্যক্তির আইনগত কর্তৃত্ব ব্যতিত ব্যক্তিগত নাগরিক তথ্য অবৈধভাবে সংগ্রহ ও বানিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করেছে। প্রাথমিকভাবে নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্য আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে বানিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যবহারে ২০ হাজার কোটি টাকার ই-ট্রানজেকশনের তথ্য পাওয়া গেছে।”