বিএনপিকর্মী মকবুল হোসেন হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছে আদালত।
রবিবার (২৭ অক্টোবর) বিকালে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে তাকে হাজির করে পুলিশ। রবিবারই বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।
চট্টগ্রাম-১ (মিরসরাই) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য।
রবিবার বিকালে তাকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঢাকার পল্টন মডেল থানার উপপরিদর্শক নাজমুল হাচান তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী খোরশেদ আলম আজাদ তার জামিন আবেদন করেন।
শুনানিতে তিনি বলেন, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন পাঁচবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য। মুক্তিযোদ্ধার সময় তিনি সমন্বয়ক ছিলেন। আসামি একজন বয়স্ক ব্যক্তি। শারীরিকভাবে অসুস্থ। তার পায়ে রড লাগানো রয়েছে। যে এলাকার ঘটনায় ওই এলাকার বাসিন্দাও না তিনি। জামিন দিলে পলাতক হবেন না। সার্বিক দিক বিবেচনা করে তার জামিন প্রার্থনা করেন এ আইনজীবী।
রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী আসামির জামিনের বিরোধিতা করে শুনানি করেন।
তিনি বলেন, আসামি অসুস্থ ও বয়স্ক ব্যক্তি হলে রাজনীতি থেকে অবসর নিতেন। কিন্তু তা তিনি করেননি। ঘটনায় সময় গণভবনে মিটিং হয়েছিল, সেখানে এই আসামি অংশগ্রহণ করেন। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আসামি জড়িত রয়েছেন। তিনি জামিন পেলে পলাতক হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। এছাড়া তিনি জামিনে থাকলে দেশের মধ্যে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করবেন।
মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে আটক রাখার আবেদন জানান রাষ্ট্রপক্ষের এ আইনজীবী।
দুই পক্ষের শুনানি নিয়ে ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম জিয়াদুর রহমানের আদালত তার জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়।
মামলায় বলা হয়েছে, ২০২২ সালের ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির এক দফা দাবি আদায়ের কর্মসূচি ছিল। এ কর্মসূচি সামনে রেখে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে নেতাকর্মীরা ঢাকায় জড়ো হতে থাকেন। ৭ ডিসেম্বর ডিএমপির ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ, যুগ্ম কমিশনার মেহেদী হাসান ও বিপ্লব কুমার বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ে অভিযান চালায়। তারা কার্যালয়ে ভাংচুর চালায়। কার্যালয়ের পাশে থাকা হাজার হাজার নেতাকর্মীর ওপর হামলা চালায়। এসময় মকবুল হোসেন নামে এক কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।
এ ঘটনায় মাহফুজুর রহমান নামে এক ব্যক্তি গত ৩০ সেপ্টেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা, সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফসহ ২৫৬ জনকে আসামি করে মামলা করেন।
যুবদল নেতা শামীম হত্যায় ব্লগার ঈশান রিমান্ডে
যুবদল নেতা শামীম হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার নাফিজ ফুয়াদ ঈশান নামে এক ব্লগারকে তিন দিন হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছে আদালত।
রবিবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পল্টন মডেল থানার উপপরিদর্শক তন্ময় কুমার বিশ্বাস তাকে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম জিয়াদুর রহমানের আদালত তিন দিনের অনুমতি দেয়।
শুনানিতে আসামি ঈশানের পক্ষে কোনও আইনজীবী ছিলেন না।
মামলায় বলা হয়, ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর বিএনপি কেন্দ্রীয় কর্মসূচি অনুযায়ী মহাসমাবেশ ডাকে ঢাকায়। এই মহাসমাবেশকে পণ্ড করতে একই দিনে আওয়ামী লীগ পাল্টা সমাবেশ ডাকে। বিএনপি নেতাকর্মীদের হত্যা ও গুম করতে পুলিশের সহায়তায় মহাসমাবেশে হামলা চালানো হয়। এতে বিএনপির অনেক নেতাকর্মী আহত হন; যুবদল নেতা শামীম মারা যান।
এ ঘটনায় গত ২৪ সেপ্টেম্বর পল্টন থানায় হত্যা মামলাটি হয়।