বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগে করা মামলায় এবার জামিনে মুক্তি পেয়েছেন
সুনামগঞ্জ-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগ নেতা মুহিবুর রহমান মানিক।
চোখের সমস্যাসহ অন্যান্য শারীরিক অসুস্থতা ও বয়স বিবেচনায় নিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে সুনামগঞ্জের দ্রুত বিচার আদালতের বিচারক নির্জন কুমার মিত্র তার জামিন মঞ্জুর করেন। এরপর বিকালে জেলা কারাগার থেকে মুক্তি পান ৬২ বছর বয়সী এই রাজনীতিক।
গত ৪ আগস্ট সুনামগঞ্জ পৌর শহরের পুরাতন বাস-স্টেশন এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগে একই আদালতে এ মামলা হয় গত ২ সেপ্টেম্বর। মামলার তিন নম্বর আসামি মানিক।
মামলার দুই নম্বর আসামি সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী আওয়ামী লীগ নেতা এম এ মান্নান গত ১০ অক্টোবর জামিনে মুক্তি পান। সুনামগঞ্জ-৩ (জগন্নাথপুর-শান্তিগঞ্জ) আসনের চারবারের সংসদ সদস্য ছিলেন তিনি।
সুনামগঞ্জ-৫ (ছাতক-দোয়ারাবাজার) আসনের পাঁচবারের সাবেক সংসদ সদস্য মানিক জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহ সভাপতি পদে আছেন। গত ৭ অক্টোবর রাতে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে র্যাবের একটি দল তাকে গ্রেপ্তার করে। পরদিন সুনামগঞ্জ সদর থানায় আনা হয় তাকে।
মামলায় গত ৯ অক্টোবর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। গত ২০ অক্টোবর তাকে দুই দিন হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেয় আদালত।
মুহিবুর রহমান মানিকের আইনজীবী ও সুনামগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম সকাল-সন্ধ্যাকে বলেন, “অসুস্থতা ও বয়স বিবেচনায় তাকে জামিন দেওয়ার জন্য আমরা আবেদন করেছিলাম। আদালত আমাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জামিন মঞ্জুর করেছেন।”
সুনামগঞ্জের জেলা কারাগারের জেল সুপার মোহাম্মদ শফিউল আলম সকাল-সন্ধ্যাকে বলেন, “আদালত থেকে জামিন মঞ্জুরের কাগজপত্র পাওয়ার পর মুহিবুর রহমান মানিককে কারাগার থেকে বিকালে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।”
মুহিবুর রহমান মানিক ১৯৯১ সালে ষষ্ঠ সংসদ নির্বাচনে সুনামগঞ্জ-৫ আসনে লড়েন গণতন্ত্রী পার্টির মনোনয়ন নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ৮ দলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে। ১৯৯৪ সালে তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সপ্তম সংসদ নির্বাচনে প্রথম সদস্য হন মানিক।
২০০১ সালে অষ্টম সংসদে একই আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে নির্বাচনে করে পরাজিত হন তিনি। এরপর ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে দলটির প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য হন মানিক।
দ্বাদশ সংসদে সরকারি প্রতিশ্রুতি সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পান তিনি।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণা করা হলেও অন্যদের মতো মানিকও তার পদ হারান।