বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগে করা মামলায় সুনামগঞ্জ-৫ (ছাতক-দোয়ারাবাজার) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগ নেতা মুহিবুর রহমান মানিককে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানার এই মামলায় বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে হাজির করা হয়। সংশ্লিষ্ট দ্রুত বিচার আদালতের বিচারক না থাকায় তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আলমগীর।
মুহিবুর রহমান মানিকের আইনজীবী আব্দুল হামিদ জানান, “আজকে দ্রুত বিচার আদালতের বিচারক না থাকায় জুডিশিয়াল ম্যাজিস্টেট আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আলমগীর তাকে সুনামগঞ্জ জেলা কারাগারে প্রেরণ করেছেন। আমরা তার শারীরিক অসুস্থতার কাগজপত্র আদালতে উপস্থাপন করলে আদালত কারাবিধি অনুযায়ী তাকে চিকিৎসা প্রদানের আদেশ দিয়েছেন।”
আদালত আগামী ১৫ অক্টোবর মামলার শুনানির পরবর্তী তারিখ দিয়েছে বলে জানান এই আইনজীবী।
সাবেক এমপি মানিক সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি পদে আছেন। গত মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে রাজধানী ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
সুনামগঞ্জ শহরে গত ৪ আগস্ট আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগ এনে ৯৯ জনের নামে দ্রুত বিচার আদালতে মামলাটি করেন দোয়ারাবাজার উপজেলা এরোয়াখাই গ্রামের বাসিন্দা মো. হাফিজ আহমদ।
মামলার তিন নম্বর আসামি সাবেক এমপি মানিক। মামলার দুই নম্বর আসামি সাবেক পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান বৃহস্পতিবার জামিনে মুক্তি পেয়েছেন।
এজাহারে বাদী নিজেকে ৪ আগস্ট সুনামগঞ্জ পৌর শহরে সংঘর্ষে আহত শিক্ষার্থী জহুর আলীর বড় ভাই হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
আদালতের বিচারক নির্জন কুমার মিত্র মামলাটি এজাহার হিসেবে নথিভূক্ত করার জন্য সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানাকে নির্দেশ দিয়েছিলেন।
মুহিবুর রহমান মানিক ১৯৯১ সালে ষষ্ঠ সংসদ নির্বাচনে সুনামগঞ্জ-৫ আসনে লড়েন গণতন্ত্রী পার্টির মনোনয়ন নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ৮ দলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে। ১৯৯৪ সালে তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সপ্তম সংসদ নির্বাচনে প্রথম সদস্য হন মানিক।
২০০১ সালে অষ্টম সংসদে একই আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে নির্বাচনে করে পরাজিত হন তিনি। এরপর ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে দলটির প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য হন মানিক।
দ্বাদশ সংসদে সরকারি প্রতিশ্রুতি সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পান তিনি।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণা করা হলেও অন্যদের মতো মানিকও তার পদ হারান।