সিলেটে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও টিয়ারশেল-সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ার ঘটনা ঘটেছে।
শনিবার বিকালে নগরের চৌহাট্টা-জিন্দাবাজার সড়ক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এসময় পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছোড়ে শিক্ষার্থীরা। পুলিশও পাল্টা জবাবে ছোড়ে টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড। এসময় আহত হন তিন পুলিশ সদস্য।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী দুপুর ২টার দিকে চৌহাট্টা এলাকায় শহীদ মিনারের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করে শিক্ষার্থীরা। ধীরে ধীরে সেখানে যোগ দিতে থাকেন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।
পুলিশও শহীদ মিনারের উল্টো দিকে সতর্ক অবস্থান নেয়। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে জমায়েতের বিস্তৃতি। শিক্ষার্থীরা নানা স্লোগান দিতে থাকে। তাদের সঙ্গে যোগ দেয় অভিভাবকসহ সাধারণ মানুষ।
এক পর্যায়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মীরাও বিক্ষোভে যোগ দেয়। সেখানে দেখা মেলে সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মিফতা সিদ্দিকীর নেতৃত্বে দলটির অঙ্গ, সহযোগী সংগঠনের কর্মীদের। নিষিদ্ধ ঘোষিত দল ইসলামী ছাত্র শিবিরের পরিচিত কর্মীদের মুখও দেখা যায়।
বিক্ষোভ মিছিলের ঘোষণা থাকলেও এক পর্যায়ে সড়কে বসে পড়েন আন্দোলনকারীরা। ফলে ব্যস্ততম এই সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আন্দোলনকারীদের পাশেই সাঁজোয়া যান নিয়ে অবস্থান নেয় পুলিশ।
আন্দোলনকারীরা সড়ক অবরোধ করলে পুলিশ তাদের সড়ক থেকে সরে যেতে বলে। এতে সেখানে শুরু হয় উত্তেজনা। কয়েকজন আন্দোলনকারী পুলিশকে লক্ষ্য করে তেড়ে যায়, পিছু হটে পুলিশ।
এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা চারদিকে বিভক্ত হলে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল ছুড়তে শুরু করে। পুলিশও পাল্টা প্রতিক্রিয়া হিসেবে টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। এতে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় আন্দোলনকারীরা। ভয়ে সরে যান স্থানীয় বাসিন্দারাও।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-আন্দোলন, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক আসাদুল্লাহ আল গালিব বলেন,“আমরা শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি শেষ করার প্রস্তুতির মধ্যেই পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ শুরু করে। তবে আমাদের আন্দোলন চলমান থাকবে। আগামীকাল থেকে আমরা অসহযোগ আন্দোলন শুরু করব।”
সিলেট মহানগর পুলিশের উপ কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ বলেন, “বিক্ষোভ মিছিলকে কেন্দ্র করে যাতে কোন নাশকতামূলক ঘটনা না ঘটে সে জন্য পুলিশ সতর্ক অবস্থানে ছিল। দীর্ঘসময় কর্মসূচি পালনে আমরা তাদেরকে সহযোগিতা করেছি। পুলিশের ওপর আক্রমণ করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করায় আমরা অ্যাকশনে যেতে বাধ্য হই। আমাদের তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন, তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।”