রপ্তানি বাড়ায় উদ্বেগ কাটিয়ে স্বস্তি ফিরেছে দেশের তৈরি পোশাক শিল্পে। ২০২৪ সালের শুধু জানুয়ারি মাসে রপ্তানি হয়েছে ৪৯৭ কোটি মার্কিন ডলার, যা গত বছরের এই সময়ের চেয়ে ১২ দশমিক ৪৫ শতাংশ বেশি।
সোমবার তৈরি পোশাক শিল্প রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান এ তথ্য জানান।
ফারুক হাসান বলেন, “এটি একটি বিশাল মাইলফলক এবং আমাদের অব্যাহত এগিয়ে যাওয়ার প্রতিফলন। এটিও একটি প্রতিফলন যে, আমরা কীভাবে আমাদের পণ্য এবং বাজারের ভিত্তিকে বৈচিত্র্যময় করে তুলছি এবং মূল্য সংযোজনের মাধ্যমে এগিয়ে যাচ্ছি।”
দেশের তৈরি পোশাকের প্রায় এক-তৃতীয়াংশেরই রপ্তানি গন্তব্য হলো যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানি। শীর্ষ এই দুটি বাজারে আগের অর্থবছরের প্রথমার্ধে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি কমেছিল। চলতি ২০২৩–২৪ অর্থবছরের প্রথমার্ধেও রপ্তানি ইতিবাচক ধারায় ফেরেনি। এর ফলে সার্বিকভাবে পোশাক রপ্তানি বৃদ্ধির গতি কমেছিল। যদিও শীর্ষ পাঁচ গন্তব্যের মধ্যে বাকি তিনটিতে তৈরি পোশাক রপ্তানি বাড়ছে। দেশ তিনটি হলো- যুক্তরাজ্য, স্পেন ও ফ্রান্স।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে বিজিএমইএ এমন তথ্য জানিয়েছে। তাদের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, চলতি অর্থবছরের (২০২৩-২৪) প্রথম ছয় মাস অর্থাৎ জুলাই–ডিসেম্বরে ২ হাজার ৩৩৯ কোটি মার্কিন ডলার মূল্যের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১ দশমিক ৭২ শতাংশ বেশি।
অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে রপ্তানি ধারা কিছুটা পিছিয়ে থাকলেও জানুয়ারি মাসের রপ্তানির এ চিত্র আবার আশাবাদী করে তুলছে রপ্তানিকারকদের। তবে এতেও সাবধানী থাকতে চান ফারুক হাসান।
তিনি বলেন, “বাজারের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দেখে আমাদের অভিভূত হওয়া উচিত নয়। বিশেষ করে নতুন ক্ষমতা এবং সম্প্রসারণের পরিকল্পনা করার সময় আমাদের সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে, কারণ আমরা আমাদের বিদ্যমান ওভারক্যাপাসিটি পরিস্থিতিতে আরও দুর্বলতা যোগ করতে পারি না। সুতরাং, মানসম্পন্ন বিনিয়োগ, বিশেষ করে ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজে আগামী ৫ বছরের জন্য আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হবে।”
২০২৪ সাল বাংলাদেশের জন্য রপ্তানিতে ইতিবাচক হবে বলে মনে করেন ফারুক হাসান। তিনি বলেন, “বিশ্ব অর্থনীতি এবং বাণিজ্য পুনরুদ্ধারের দিকে মোড় নিচ্ছে। আমরা গত বছর ছুটির মৌসুমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যসহ আমাদের প্রধান বাজারগুলিতে খুচরা বিক্রয় রেকর্ড পর্যায়ে পৌঁছাতে দেখেছি।
“আমাদের আরও জানানো হয়েছে যে, ক্রেতাদের অতিরিক্ত ইনভেন্টরির বোঝা এখন শিথিল হয়েছে, তাই নতুন অর্ডার আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। উচ্চ মূল্যস্ফীতি এবং সুদের হারের কারণে প্রধান অর্থনীতির চাপও স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসছে।”