Beta
রবিবার, ১৮ মে, ২০২৫
Beta
রবিবার, ১৮ মে, ২০২৫

বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক এড়াতে ৮ তরিকা  

extra-marital-affair-080224-01
[publishpress_authors_box]

বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক এড়াতে ৮ তরিকা  

অভিধান বলছে পরকীয় শব্দের স্ত্রীলিঙ্গ হলো পরকীয়া। এখন অবশ্য পরকীয় শব্দের চল নেই। নারী হোক বা পুরুষ, বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়ালে উভয়ের বেলাতেই পরকীয়া তকমা লেগে যায়। ইংরেজিতে যাকে বলে এক্সট্রা ম্যারিটাল অ্যাফেয়ার্স। সামাজিক ও আইনগত ভাবে বিবাহিত জীবনসঙ্গী থাকার পরও অন্য কারও সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার গল্প সব সমাজেই মেলে। কেন এমন ঘটে?

অপরিপক্ক বয়সে কিংবা পারিবারিক অথবা অন্য কোনো পরিস্থিতির চাপে বিয়ে হলে এক পর্যায়ে সেই সম্পর্কে দূরত্ব হতে পারে অনেকের বেলাতে। আবার দীর্ঘদিনের বিবাহিত জীবনে বৈচিত্র চলে গেলে, শারীরিক ও মানসিক চাহিদায় বনিবনা না হলে, আর্থিক টানাপোড়েন থাকলে, পছন্দ-অপছন্দে গড়মিল হলে, এমনকি পেশাজীবনে সহযোগিতা না পেলেও কেউ কেউ অন্য সম্পর্কে এই অতৃপ্তি পূরণ করতে চান।    

বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক থেকে বড় রকমের অপরাধ ঘটিয়ে ফেলার উদাহরণ বহুার শিরোনাম হয়েছে পত্রিকায়।

প্রেম হোক অথবা একটি বিবাহিত সম্পর্কে একজনের প্রতি নিবেদিত থাকার একটি চেষ্টা অনেক সামাজিক ও মানসিক হয়রানি থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে পারে। এসবের চেয়েও বড় কথা, জীবনসঙ্গীর সঙ্গে ভালোবাসার সম্পর্ক সুস্থ ভাবে অটুট রাখতে পারলে নিজের আত্মবিশ্বাসেও চিড় ধরবে না।

স্রেফ উত্তেজনার বশে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে অনেকে কপাল চাপড়ে ভাবেন, কীভাবে যে কী হয়ে গেলো!   এমন পরিস্থিতি কিন্তু এড়ানো খুবই সম্ভব। 

নিজ সঙ্গীর সঙ্গে কথা বলুন

গবেষণা বলছে, সাধারণত বিবাহিত সম্পর্কে ছোটখাটো দ্বন্দ্বগুলোর সমাধান না করলে সেগুলো ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে। এর ফাঁক গলে যে কোনো একজন ঝুকে যান বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে। এটি এড়াতে হলে সম্পর্কের ছোট থেকে বড় সব সংকট নিয়ে কথা বলতে হবে সঙ্গীর সঙ্গে। আলোচনা করে বুঝতে হবে, আসলে কেমন যাচ্ছে সম্পর্কটি? আর কী করেই বা সমাধান করা যায় সমস্যাগুলোর। কথা বললে দুজনেরই মানসিক চাপ কমে আসবে; বোঝাপড়ারও হবে উন্নতি।

ভাবুন এবং বার বার ভাবুন

বিবাহিত হওয়ার পরও কারও প্রতি দুর্বল হয়ে পড়ছেন? কারও সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে যাচ্ছেন? এমন মুহূর্তে গোড়াতেই ভেবে দেখুন, এই সম্পর্কের জন্য আপনি সত্যিই প্রস্তুত তো?

পরে এই সম্পর্ক আপনার মনে অপরাধবোধের জন্ম দিতে পারে। এমন সম্পর্কে জড়ালে আপনার নিত্যদিনের সবকিছুই আর আগের মতো থাকবে না। আর আপনার দাম্পত্য জীবনে যে জটিলতা দেখা দেবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।  

এসব প্রশ্ন ও ঘটনা প্রবাহ থেকে নিজেই সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন নিজের এবং আপনার সঙ্গে থাকা সবার ভালোর জন্য কী করণীয় হতে পারে।  

সৎ থাকুন নিজের প্রতি

বিবাহ এমন একটি চুক্তি যা একগামীতাকেই ধারণ করে। সুতরাং একগামী সম্পর্কে থাকা কঠিন মনে হলে তার বিবাহের মতো একটি প্রাতিষ্ঠানিক সম্পর্কে না জড়ানোই ভালো; জড়ালে বরং তা নিজের এবং অন্যের জীবনে জটিলতা বাড়াতে পারে। 

নিজেকে জানা ও বোঝার পরও যদি বিয়ে করেই ফেলেন, তবে সঙ্গীকে বরং খুলে বলুন নিজের কথা। তাতে সম্পর্কের প্রতি প্রতিশ্রুতি ধরে রাখার নতুন দিক দেখা দিতে পারে জীবনে।

ব্যক্তিগত সীমারেখা

সকলেরই আছে একটি  পেশাগত এবং সামাজিক জীবন। বিয়ের পর পেশাগত এবং সামাজিক নানান সম্পর্কে টানতে হয় সূক্ষ্ম সীমারেখা। পেশাগত সুসম্পর্কের ফাঁক গলে দাম্পত্যের স্পর্শকাতর বিষয়গুলো সংসারের বাইরে চলে আসছে কি না তা নিয়ে সবারই থাকতে হবে সচেতন। 

অফিসে অথবা সামাজিক পরিসরে বিপরীত লিঙ্গের কেউ সম্পর্কে জড়ানোর আগ্রহ দেখালে তার সঙ্গে বরং ব্যক্তিগত লেনদেন এড়িয়ে চলাই শ্রেয়।

সুসম্পর্ক

নিজের দাম্পত্য জীবনকে প্রাধান্য দিলে অনেক সমীকরণই সহজ ভাবে মিলে যাবে। সঙ্গীর প্রয়োজন সাধ্যমত মেটানোর চেষ্টা এবং তৃতীয় কোনো পক্ষের দাম্পত্য নিয়ে নাক গলানোর চেষ্টা নস্যাৎ করে দেওয়া সুসম্পর্কের অন্যতম শর্ত।

সঙ্গী কাছে থাকলে তার স্বাছন্দ্য নিশ্চিত করতে পারা দুজনের যোগাযোগকে গাঢ় করবে।আর এসব ঠিকঠাক থাকলে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক  জীবনকে কোনো রকম টানাপোড়েনে ফেলবে না।

যাপনে যৌথতা

বিয়ে মানে যৌথ যাপন। দাম্পত্যকে তাই আক্ষরিক অর্থেই যৌথ যাপনে পরিণত করতে হবে। দিনে অন্তত একবেলা এক সঙ্গে বসে খান। টিভি আর সিনেমা দেখুন এক সঙ্গে। ছুটির দিনগুলোতে রান্না করুন। সংসারের অন্তত বড় সিদ্ধান্তগুলো অবশ্যই যৌথভাবে নিন। 

দাম্পত্য জীবনে সত্যিকার অর্থে যৌথ যাপনে পরিণত করা গেলে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়ানোর ফুরসত আসবে না।

সঙ্গীর স্বপ্নে সারথি হোন

সবারই কিছু ব্যক্তিগত স্বপ্ন থাকে। আপনার সঙ্গীর তেমন কোনো স্বপ্ন থাকলে তার পাশে থাকুন। তার ভাবনায় অংশ নিন, খোঁজখবর রাখুন। আর তাতে সম্পর্ক হবে মজবুত। 

এড়িয়ে যাবেন না দ্বন্দ্ব

একেবারে ভিন্ন দুটো মানুষের এক সঙ্গে থাকা চ্যালেঞ্জিং হবেই। আর এই এক সঙ্গে থাকা মানে যদি সংসার করা হয় তবে তো কথাই নেই। ফলে দ্বন্দ্ব স্বাভাবিক। কিন্তু দ্বন্দ্ব এড়িয়ে গেলে সম্পর্কে সংকট হবে ঘনীভূত।

সঙ্গীর সঙ্গে মতবিরোধ দেখা দিলে দুজনের মুখোমুখি বসাই বরং মঙ্গল। এতে করে একে অপরের পছন্দ থেকে অপছন্দগুলো জানা হয়। তাই দুঃখ পুষে রেখে অন্যকে মন দেওয়ার চেয়ে সঙ্গীর সঙ্গেই মিটমাট করে নিন। 

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত