ফেইসবুক থেকে প্রথমে খুঁজে নেওয়া হতো চাকরিপ্রত্যাশী তরুণ-তরুণীদের। তারপর জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থায় (এনএসআই) চাকরি দেওয়ার কথা বলে দেওয়া হতো প্রশিক্ষণ। পাঁচ-ছয় মাসের সেই প্রশিক্ষণ শেষে মিলত নিয়োগপত্র ও পোস্টিংও। আর এই চাকরির জন্য জনপ্রতি নেওয়া হতো ১৫ থেকে ১৭ লাখ টাকা।
এভাবেই একটি চক্র চাকরিপ্রত্যাশীদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা করে আসছিল।
এই প্রতারক চক্রের ছয় জনকে গ্রেপ্তারের কথা সোমবার (১৩ মে) জানিয়েছেন গাজীপুর মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (দক্ষিণ) উপকমিশনার মোহাম্মাদ নাজির আহমেদ খাঁন।
তারা হলো- লিয়ন ইসলাম (২৫), হুমায়ন কবির প্রিন্স (৩৬), মোজাহিদুল ইসলাম ওরফে পায়েল (২৩), রাজিয়া সুলতানা (২২), মোছা. রিপা আক্তার (২১) ও মোছা. রিখা মনি (১৭)।
তাদের গ্রেপ্তারের সময় প্রশিক্ষণ মডিউল, বই, কম্পিউটার, ল্যাপটপসহ বিভিন্ন সামগ্রী উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান মোহাম্মাদ নাজির আহমেদ খাঁন।
সোমবার দুপুরে মহানগর পুলিশ সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, গত রবিবার গাজীপুর মহানগর গোয়েন্দা বিভাগ এবং এনএসআইয়ের যৌথ অভিযানে টঙ্গী পশ্চিম থানা এলাকার ভাদাম পশ্চিমপাড়ার একটি ভবনে অভিযান চালিয়ে এদের গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা অপরাধ স্বীকার করেছেন বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা জানিয়েছে, এনএসআই পরিচয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে, ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে নিরীহ মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিত তারা। প্রতারক চক্রের সদস্যরা ফেইসবুক আইডি ব্যবহার করে দেশের যুবক ছেলেমেয়েদের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ঘটনাস্থলে এনে এনএসআই হিসেবে প্রশিক্ষণ দিত। এরপর নিয়োগপত্র ও ভুয়া আইডি কার্ড দিয়ে বিভিন্ন জেলা থানায় পোস্টিং, বদলি দিত। নিজেদের তৈরি বিধি অনুযায়ী পদোন্নতি ও শাস্তিও দিত।
গাজীপুরের ওই ভবনটি থেকে প্রতারণার শিকার চারজনকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। পরে জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানান, প্রতারক চক্রের সদস্যরা এনএসআইতে চাকরি দেওয়ার জন্য ৫-৬ মাস ধরে প্রশিক্ষণ দিচ্ছিল। বিভিন্ন জেলায় পোস্টিং দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে জনপ্রতি ১৫-১৭ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
চক্রটি চাকরিপ্রার্থী একটি গ্রুপকে ভুয়া পোস্টিং অর্ডার দিয়ে সব টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পর তাদের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র বা যোগাযোগের ঠিকানা পরিবর্তন করে বলেও জানিয়েছে পুলিশ।