ডায়াবেটিস থেকে শুরু করে ক্যান্সার, কিডনির পাথর, লিভার সিরোসিস, গ্যাস্ট্রিক, আলসার, থাইরয়েডে জটিলতা, পাইলস থেকে অনিদ্রা- এখানেই শেষ নয়; আরও অনেক রোগ সারবে এক দাওয়াইয়ে!
আবার কোনোটি ১ মাসেই ওজন কমিয়ে দেবে ৭-৮ কেজি, কোনোটি দেবে বাড়িয়ে। কোনোটি সেবনে আবার ১ মাসে ২-৩ ইঞ্চি উচ্চতা লম্বা হয়ে যাবেন! যৌনক্ষমতাও বহু গুণ বাড়িয়ে দেবে কোনোটি। কিছু কিছু পণ্যকে আবার ওষুেধর বদলে ফুড সাপ্লিমেন্ট হিসাবে দেখাচ্ছে।
এমন সব পণ্যের বিজ্ঞাপনে সয়লাব সোশাল মিডিয়াসহ অনলাইন। এসবের বিক্রেতাদের কেউ কেউ দাবি করছেন, তাদের পণ্যের না কি বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের (সায়েন্স ল্যাবরেটরি) অনুমোদন আছে। কেউবা আবার দেখাচ্ছেন বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউটের (বিএসটিআই) সনদ। অথচ তার সবই ভুয়া।
অথচ বিজ্ঞাপনের প্রলোভনে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই উচ্চমূল্যে এসব পণ্য কিনে প্রতারিত হচ্ছে মানুষ। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন সব পণ্য কিনে আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ।
অনলাইনের পাশাপাশি সারাদেশে বিভিন্ন দোকানে এসব পণ্য দেদারছে বিক্রি হলেও তা আটকানোর দায়িত্ব নিচ্ছে না কেউ।
বিএসটিআইয়ের দাবি, এসব পণ্যের মান দেখার দায়িত্ব বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের। নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের দাবি আবার উল্টোটা। ‘ফুড সাপ্লিমেন্ট’র নামের পণ্যগুলো নিজেদের আওতাধীন বিষয় কি না, তা নিয়ে বাংলাদেশ ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরও নিশ্চিত নয়।
বিজ্ঞাপনে সয়লাব
এসব পণ্যের বিজ্ঞাপন সবচেয়ে বেশি চলে ফেইসবুকে, বিভিন্ন নামে শতশত পেইজ খুলে চলছে প্রচার ও বিক্রি।
এমনই একটি ‘ভৈষজ স্লিম’। ৩০ হাজার ফলোয়ারের এই ফেইসবুক পাতাটিতে বিক্রি হচ্ছে ওজন কমানোর পাউডার। সেখানে দাবি করা হচ্ছে, পাউডারটি খেলে খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন না এনে এবং শারীরিক শ্রম ছাড়াই মাত্র ৪০ দিনে ৫-১০ কেজি ওজন কমে যাবে। প্রতি প্যাকেট পাউডারের দাম ১০২৫ টাকা।
ফেইসবুক পেইজটিতে দেওয়া ফোন নম্বরে যোগাযোগ করা হলে যে ব্যক্তি ধরেন, তিনি নিজের নাম জানিেয়ছেন মুকুল; বলেছেন, তিনি ‘ভৈষজে’ চাকরি করেন।
এই পাউডারটি সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরি জানিয়ে ‘সিভিল সার্জনের অনুমতি’ নিয়েই তা উৎপাদনের কথা বলেন মুকুল; অথচ এমন কোনও অনুমতি দেওয়ার এখতিয়ার কোনও সিভিল সার্জনের নেই।
‘হাইট গ্যালাক্সি’ ও ‘গ্যান্ড শপ বিডি’সহ কয়েকশ পেইজে বিক্রি হচ্ছে ‘বডি কিং’ নামে একটি ফুড সাপ্লিমেন্ট। দাবি করা হচ্ছে, এটি সেবনে ১ মাসেই প্রাকৃতিকভাবে ৮-১০ কেজি ওজন বাড়বে।
কীভাবে বাড়বে? তার ব্যাখ্যায় বলা হচ্ছে, এটি সরাসরি শরীরের ভেতরে হরমোন উৎপাদন করবে। যার ফলে খাবারের রুচি ও হজম শক্তি বাড়বে, ভালো ঘুম হবে, শরীরের ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ করবে।
‘হাই ডেভেলপ’ ও ‘হাইট ইনক্রেজ ট্রিটমেন্ট’সহ বিভিন্ন পেইজে বিক্রি হচ্ছে ‘হাইট ডেভেলপ’ নামের একটি পণ্য। যা সেবনে নাকি উচ্চতা বাড়বে!
ট্রাস্ট হেলথ বিডি নামের আরেকটি ফেসবুক পেইজে বিক্রি হচ্ছে ‘ম্যান পাওয়ার ব্ল্যাক কফি’। প্রতিপ্যাকেট কফির দাম দেড় হাজার টাকা। দাবি করা হচ্ছে, এই কফি পান বাড়তি মেদ তো ঝরিয়ে দেবেই, যৌন সমস্যারও দেবে সমাধান।
তাদের দেওয়া নম্বরে কল করা হলে ফোন ধরেন ইমরান নামে এক ব্যক্তি। তিনি জানান, তাদের মূল প্রতিষ্ঠানের নাম ‘এসপি অল ইন ওয়ান শপ’।
ইমরান বলেন, গাজীপুরের কোনাবাড়িতে অবস্থিত প্রতিষ্ঠানটির মালিক সাইফুল ইসলাম চঞ্চল। তারা কোরিয়া থেকে এই কফি আমদানি করে সরাসরি ও অনলাইনে বিক্রি করেন।
আয়ুর্বেদ নামে আরেকটি পেইজে বিক্রি হচ্ছে লম্বা হওয়ার ওষুধ ‘পিওরহাইট বুস্টার’। প্রতিষ্ঠানটির দাবি, মাত্র তিন মাসেই ৩ থেকে ৬ ইঞ্চি লম্বা হওয়া যায় এই ওষুধ খেলে। ওষুধটির এক ফাইলের দাম ১৭৫০ টাকা। খাওয়ার পর লম্বা না হলে মূল্য ফেরতের েঘাষণাও দেওয়া হয়েছে।
বাজারে ‘ফরএভার লিভিং প্রডাক্টস বাংলাদেশ’, ‘ডিএক্সএন’, ‘ভেষজ’সহ অসংখ্য প্রতিষ্ঠানের ‘ফুড সাপ্লিমেন্টও রয়েছে। এছাড়া অনলাইন শপেও এগুলো বিক্রি হচ্ছে।
কিনে ভুগছেন তারা
বিজ্ঞাপনের এমন সব ওষুধ কিংবা ফুড সাপ্লিমেন্ট কিনে ভুগছেন, এমন মানুষের সংখ্যা কম নয়।
দীর্ঘদিন ফুড সাপ্লিমেন্ট ব্যবহার করে আসা ঢাকার মোহাম্মপুরের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী শরীফ গাজী সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “আমি কিডনির সমস্যার কারণে ফরএভার লিভিং প্রডাক্টসের অ্যালোভেরা জেল খেয়েছি অনেকদিন। কিন্তু কোনও লাভ তো হয়নি, এখন আমাকে চিকিৎসকের কাছে দৌড়াতে হচ্ছে।”
তার ভাষায়, রোগ সারানোর জন্য ওষুধের বদলে অসুখ কিনেছিলেন তিনি।
ফুড সাপ্লিমেন্টের আরেকজন ব্যবহারকারী ঢাকা জেলা জজ কোর্টের আইনজীবী রেহেনা পারভিন।
তিনি সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “ডায়াবেটিকস ও শরীর ব্যথার সমস্যার কারণে আমি অনলাইন থেকে কিনে রিজার্ভ নামের ফুড সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করেছিলাম। কিন্তু দীর্ঘদিন খেয়েও কোনও উপকার পাইনি। শুধু শুধু ২১ হাজার টাকা গচ্চা দিতে হয়েছে আমাকে।”
বিক্রি ভুয়া সনদে
ওজন বাড়ানোর ‘বডি কিং’ সাপ্লিমেন্টের বিপণনকারীরা দাবি করছেন, তাদের পণ্যটি বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ অনুমোদিত। ক্রেতাদের আস্থা অর্জনে একটি সনদও দেখাচ্ছে তারা।
উচ্চতা বৃদ্ধির ‘হাইট ডেভেলপ’ পণ্যের বিক্রেতারাও তাদের পণ্যটি বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ অনুমোদিত বলে দাবি করছে। তবে ক্রেতাদের দেখানো হচ্ছে বিএসটিআইয়ের একটি সনদ।
এই সনদগুলোর বিষয়ে সকাল সন্ধ্যা খোঁজ নিয়ে জেনেছে, এগুলো আসলে ভুয়া।
বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের (বিসিএসআইআর) চেয়ারম্যান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আফতাব আলী শেখকে দেখানো হয় ‘হাইট গ্যালাক্সি’ ও ‘গ্র্যান্ড শপ বিডি’র দেওয়া সনদটি।
দেখার পর তিনি সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “এই সনদে ড. মো. জহুরুল হকের স্বাক্ষর ব্যবহার করা হয়েছে। স্বাক্ষরের তারিখ দেওয়া হয়েছে ২০১৮ সালের ৩০ জানুয়ারি। অথচ তিনি অবসরে গেছেন আরও আগে।
“এছাড়াও বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা প্রমা আরেফিনের স্বাক্ষর ব্যবহার করা হয়েছে। অথচ তিনি চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় এসেছেন মাত্র ১ বছর হলো।”
বিএসটিআই এমন কোনও পণ্যের সনদ দেয় না জানিয়ে প্রতিষ্ঠানটির উপ-পরিচালক মো. রিয়াজুল হক সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “ফুড সাপ্লিমেন্ট পণ্যগুলোর মান নির্ণয় বিএসটিআইয়ের আওতার মধ্যে পড়ে না। বিএসটিআইয়ের কথা বলে ক্রেতাদের যে সার্টিফিকেটটি দেখানো, হচ্ছে সেটি ভুয়া।”
আসলে কি কাজ হয়
এসব ফুড সাপ্লিমেন্ট খেয়ে কোনও উপকার হয় না বলে দাবি করেছেন পুষ্টি গবেষক ও চিকিৎসকরা। তারা বলেন, এসব ফুড সাপ্লিমেন্টগুলোর বেশিরভাগের মূল উপাদান রেসভেরাট্রল। এটি মূলত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। রেসভেরাট্রল উচ্চ রক্তচাপ, ক্যান্সার, হৃদরোগসহ নানা রোগ প্রতিরোধ কিংবা নিরাময় ও অন্যান্য কাজে উপকারী, এমন কোনও বিজ্ঞানভিত্তিক প্রমাণ নেই।
বরং এসব ফুড সাপ্লিমেন্ট ব্যবহার করলে শারীরিক সমস্যা সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কার কথা জানিয়ে তারা বলছেন, বিশেষ করে কিডনি ও যকৃতের কার্যক্ষমতা নষ্ট করে দেয় এসব ফুড সাপ্লিমেন্ট। এছাড়া দেখা দেয় হৃদজনিত সমস্যা। আবার অনেক সময় এসব ফুড সাপ্লিমেন্টে থাকা অতিরিক্ত লোহার কারণে মানুষের প্রদাহজনিত সমস্যাও দেখা দেয়।
এসব ফুড সাপ্লিমেন্টের বিক্রি যে বেড়ে গেছে দেশে, তা ধরা পড়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. খালেদা ইসলামের চোখেও।
তিনি সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “ফার্মেসি থেকে শুরু করে ফুটপাতের হকার, এমনকি অনলাইনে এসব পণ্য দেদারসে বিক্রি হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে আমারও চিন্তিত। কারণ এই ধরনের ফুড সাপ্লিমেন্ট খেলে যেসব রোগ নিরাময় বা প্রতিরোধ করা যায় বলে দাবি করা হয়, তার কোনও প্রমাণ নেই।
“এসব খেয়ে কেউ উপকার পেয়েছে, বাস্তবে এমন উদাহরণও পাইনি আমরা, বরং উল্টো ঘটনা ঘটেছে। ব্যক্তিগতভাবে অনেকেই যোগাযোগ করে জানিয়েছেন এসব খেয়ে তাদের পেট ব্যথা করছে কিংবা তারা হজমের সমস্যায় ভুগছেন। তাই এসব পণ্য উৎপাদন ও ব্যবসার জন্য সুনির্দিষ্ট নীতিমালা হওয়া খুবই প্রয়োজন।”
ফাউন্ডেশন ফর ডক্টরস সেফটি অ্যান্ড রাইটসের (এফডিএসআর) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. আবুল হাসনাৎ মিল্টনও একই মত জানান।
এই গবেষক সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “কখনও কখনও খাবারের পাশাপাশি কোনও কোনও রোগীর ক্ষেত্রে সাপ্লিমেন্ট খেলে কিছুটা উপকার পাওয়া যায়। তবে এসব সাপ্লিমেন্ট ওষুধের বিজ্ঞাপনে যেভাবে অসংখ্য গুণের কথা লেখা হয়, তা গ্রহণযোগ্য নয়। ফলে সাধারণ মানুষের প্রতারিত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
“তাই ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কেবল বিজ্ঞাপনের ভাষায় প্রলুব্ধ হয়ে এ ধরনের সাপ্লিমেন্ট ওষুধ খাওয়া উচিৎ নয়।”
বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আফতাব আলী শেখ বলেন, “প্রাকৃতিক উপায়ে এক মাসে কারও উচ্চতা ২-৩ ইঞ্চি বেড়ে যাবে কিংবা ১ মাসেই কারও ওজন ৭-৮ কেজি বাড়বে বা কমবে, বিষয়টা অবাস্তব।”
ঠেকাবে কে, তা নিয়ে ঠেলাঠেলি
দেেশ বাজারজাত করা যে কোনও পণ্য কিংবা খাদ্যের মান নিয়ন্ত্রণ সনদ দেয় বিএসটিআই। আবার ওষুধের কর্তৃত্ব ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের হাতে।
ফুড সাপ্লিমেটকে ওষুধ হিসাবে মেনে নিচ্ছে না ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর; আবার খাবার হিসাবেও ধরছে না বিএসটিআই। ফলে এসবের মান নিয়ন্ত্রণ কে করবে, তার কোনও দিক-নির্দেশনা নেই।
বিক্রিয়কারীরা অবশ্য কঠোর নিয়ন্ত্রণ এড়াতে নিজেদের এসব পণ্যকে ওষুধ হিসাবে দেখাতে চাইছে না। যেমন ‘হাইট ডেভেলপ’ পণ্যের মোড়কে লেখা আছে- ‘এটি খাবার, ওষুধ বা ড্রাগস নয়’।
আবার ‘ফরএভার লিভিং প্রডাক্টস বাংলাদেশ’র বিপণনের দায়িত্বে থাকা সৈয়দ সাইফুর রহমান সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “আমাদের পণ্যগুলো খাদ্য নয়, ওষুধও নয়।”
তাহলে এগুলো কী- প্রশ্নে তার সহজ উত্তর আসে, “আমাদের পণ্যগুলো ফুড সাপ্লিমেন্ট।”
অন্য দেশগুলোতে এগুলোকে কী হিসাবে দেখা হয়, তা জানতে চাইল ফাউন্ডেশন ফর ডক্টরস সেফটি অ্যান্ড রাইটসের (এফডিএসআর) চেয়ারম্যান ডা. আবুল হাসনাৎ মিল্টন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) এসব সাপ্লিমেন্টকে ওষুধ হিসেবে স্বীকৃতি দেয় না।
বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য (জনস্বাস্থ্য ও পুষ্টি) ড. মোহাম্মদ মোস্তফা সকাল সন্ধ্যার জিজ্ঞাসার জবাবে জানান, ফুড সাপ্লিমেন্টকে ওষুধ হিসাবে ধরা হবে, না কি খাদ্য হিসাবে ধরা হবে, সে বিষয়ে কোনও নির্দেশনা তাদের কাছে আসেনি।
“এই ধরনের পণ্য ওষুধ না কি খাদ্য, সেটি নির্ধারণ করার কাজটি আমাদের নয়।”
এগুলোকে কী মনে করেন- এই প্রশ্নে তিনি বলেন, “এসব পণ্য যেহেতু একটি নির্দিষ্ট সময় ও পরিমাণে খেতে বলা হচ্ছে, অর্থাৎ ডোজ হিসেবে গ্রহণ করতে বলা হচ্ছে, সেহেতু এটাকে ওষুধ বলা যেতে পারে। কারণ খাদ্যের কোনও নির্দিষ্ট ডোজ হয় না, ডোজ হিসেবে ওষুধই খাওয়া হয়।”
বিক্রেতারা বিএসটিআইর ভুয়া সনদের প্রচার করলেও সরকারি প্রতিষ্ঠানটির উপ-পরিচালক রিয়াজুল হক বলেন, “এগুলো তো ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করে সাধারণ মানুষ। তাই ফুড সাপ্লিমেন্ট পণ্যগুলোর মান নির্ণয় বিএসটিআইয়ের আওতার মধ্যে পড়ে না।”
ওষুধ না কি খাদ্য- এই প্রশ্নে আবার ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রধান কার্যালয়) মো. আশরাফ হোসেন সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “সেটা খুব কঠিন একটি প্রশ্ন।
“তবে পণ্যের মোড়কে বা বিজ্ঞাপনে যদি কোনও রোগ সারানোর দাবি করা হয়, তবে সেটাকে ওষুধ বলেই গণ্য করা হয়। এসব পণ্যের বিরুদ্ধে দেশে প্রচলিত ওষুধ আইনেই ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ আছে।”
এসব ঘটনায় অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
ভুয়া সনদ ব্যবহারের জন্য ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন বিএসটিআইর উপ-পরিচালক রিয়াজুল হকও।
নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য মোহাম্মদ মোস্তফা বলেন, ভবিষ্যতে এই ক্ষেত্রটিকেও তদারকির আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে।