Beta
মঙ্গলবার, ১৩ মে, ২০২৫
Beta
মঙ্গলবার, ১৩ মে, ২০২৫

সমর্থন করি না, তবে জামায়াতের কাজ বিজ্ঞানসম্মত : ফখরুল

জাতীয় প্রেস ক্লাবে রবিবার জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের আলোচনা অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
জাতীয় প্রেস ক্লাবে রবিবার জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের আলোচনা অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
[publishpress_authors_box]

জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে নানা প্রশ্ন নিশ্চুপ থেকে এড়িয়ে যাওয়া বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবার মুখ খুললেন।

দীর্ঘদিন জোটে রাখলেও জামায়াতে ইসলামের রাজনীতিকে সমর্থন করেন না বলে জানালেন তিনি। তবে দলটির সাংগঠনিক কার্যক্রমের প্রশংসা করেছেন তিনি।

রবিবার ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা অনুষ্ঠানে জামায়াত নিয়ে কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব।

তিনি বলেন, “আমি জামায়াতের রাজনীতি সমর্থন করি না। কিন্তু তাদের যে সাংগঠনিক কাঠামো, রাজনীতির যে কৌশল, তা অত্যন্ত বিজ্ঞানসম্মত…ঠিক কমিউনিস্ট পার্টির মতো।”

জামায়াতের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরের কাজের প্রশংসাও করেন ছাত্রজীবনে বাম সংগঠনে যুক্ত থাকা ফখরুল।

তিনি বলেন, “তাদের ছাত্রশিবিরের স্টাডি সেল আছে। তাদের প্রত্যেককে লেখাপড়া করতে হয়। নিজেরা বই-পত্রিকা প্রকাশ করে।”

একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী দল জামায়াতকে পুনর্বাসনের জন্য বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে দায়ী করা হয়। জিয়ার মৃত্যুর পর খালেদা জিয়া সরকার গঠনের সময় জামায়াতকে সঙ্গে রাখেন।

এক যুগ আগে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের বিচারে জামায়াতের শীর্ষ নেতারা দণ্ডিত হওয়ার পর তাদের সঙ্গে বিএনপিকে দূরত্ব রেখে চলা শুরু হয়।

আনুষ্ঠানিক জোটে জামায়াত না থাকলেও দলটির সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্নে বরাবরই এড়িয়ে যেতেন ফখরুল। সম্প্রতি সকাল সন্ধ্যার এক প্রশ্নে তিনি বিরক্তির সুরে বলেছিলেন, “আবার জামায়াত! আপনারা দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার দিকে তাকান। জনগণের দিকে তাকান।”

রবিবার প্রেসক্লাবে জিয়ার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ফখরুল। সেখানেও তিনি দেশের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরে আওয়ামী লীগ সরকারের সমালোচনা করেন।

ফখরুল বলেন, “আজকে পত্রিকা খুললে শুধু লুট আর লুটের খবর। কারা লুট করছে? যারা বড় বড় কর্তা। সাবেক সেনাপ্রধান, পুলিশের সাবেক আইজি, তারা কী করেছে? রিজার্ভের ডলার লুট করে নিয়ে যাচ্ছে। শেয়ারবাজারে রথি-মহারথীরা লুট করছে।

“সংসদে ভদ্রলোক কয়জন খুঁজে পাবেন? আজকে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ব্যবহার ও বডি ল্যাঙ্গুয়েজ দেখলে মনে হয়, তারা কী যেন হয়ে গেছে! রাষ্ট্র আর রাষ্ট্র নেই।”

এই অবস্থায় সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলনে নামতে সবার প্রতি আহ্বান জানান বিএনপি মহাসচিব।

দলের প্রতিষ্ঠাতাকে স্মরণ করে ফখরুল বলেন, “জিয়াউর রহমান দেশকে একটি তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে সমৃদ্ধ বাংলাদেশে পরিণত করেছিলেন। তিনি ক্ষমতায় আসার পর দেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সুসংহত করতে উদ্যোগ নেন। সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করেন। সে জন্যই সব রাজনৈতিক দল তার ওপর আস্থা রেখেছিল। কমিউনিস্ট পার্টি ও মোজাফফর সাহেবের ন্যাপ জিয়াউর রহমানের ১৯ দফাকে সমর্থন দিয়েছিল।

“জিয়াউর রহমান ছিলেন অত্যন্ত পরিপাটি ও দক্ষ সামরিক অফিসার। তিনি পেশাগত কাজে পাকিস্তানে বেশিরভাগ সময় থাকলেও বাংলাদেশের জন্য অতি কাতর ছিলেন। তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েই রাজনীতির পাদপীঠে আবির্ভূত হন। এটাকে আওয়ামী লীগের লোকজন মানতে পারে না।”

এই আলোচনায় পেশাজীবী নেতা অধ্যাপক ডা. গাজী মাজহারুল হক, অধ্যাপক ড. এস এম আব্দুর রাজ্জাক, অধ্যাপক আক্তার হোসেন, অধ্যাপক ড. নূরুল ইসলাম, প্রকৌশলী একেএম আসাদুজ্জামান চুন্নু, ডা. মো. মেহেদী হাসান, প্রকৌশলী শাহীন হাওলাদার, প্রকৌশলী আইয়ুব হোসেন মুকুল, অধ্যাপক ড. নাহারিন ইসলাম খান, অ্যাডভোকেট নাদিম ভুইয়াও বক্তব্য রাখেন।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত