বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে রাজনৈতিক অঙ্গনের ‘বড় অভিনেতা’ বলেছেন নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
কোটা সংস্কারের আন্দোলন ঘিরে ব্যাপক সহিংসতার জন্য বিএনপিকে দায়ী করে মির্জা ফখরুলকে নিয়ে এই মন্তব্য করেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ।
বৃহষ্পতিবার চট্টগ্রাম বন্দরের সার্বিক পরিস্থিতি দেখেতে এসেছিলেন তিনি। চট্টগ্রাম বন্দরের কর্মচারীদের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেন প্রতিমন্ত্রী, সেখানেই তিনি বক্তব্য রাখেন।
এই আন্দোলনে বিদেশ থেকে উসকানি এসেছে- এ অভিযোগ তুলে প্রতিমন্ত্রী খালিদ বলেন, “সে উসকানিতে বিএনপির মির্জা ফখরুল বললেন, কোটা আন্দোলনের সঙ্গে বিএনপি আছে, সরকার উৎখাত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
“কিন্তু এখন মির্জা ফখরুল বলছেন, এ আন্দোলনের সঙ্গে আমরা নেই, আমরা সমর্থন দিয়েছি, সম্পৃক্ত হইনি। এতবড় অভিনেতা আমি কোনোদিন রাজনৈতিক অঙ্গনে দেখিনি।”
“আমরা সিনেমা, নাটক ও যাত্রাপালা দেখেছি। অনেক অভিনেতার অভিনয় দেখে প্রশংসা করেছি। এখন মির্জা ফখরুলের অভিনয় দেখে প্রশংসা না করে পারছি না,” যোগ করেন তিনি।
কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নিয়ে নৌ প্রতিমন্ত্রী বলেন, “আন্দোলনে নামার সঙ্গে সঙ্গে সরকার তাদের দাবির প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করে হাইকোর্টের রায়ের ওপর আপিল করে।
“আমাদের সঙ্গে তাদের যোগাযোগের ঘাটতি ছিল। প্রধানমন্ত্রী চীন সফরে ছিলেন। সফর সংক্ষিপ্ত করে তিনি দেশে ফিরে আসেন। তিনি শিক্ষামন্ত্রী ও আইনমন্ত্রীকে দায়িত্ব দেন। দুই মন্ত্রীর উদ্যোগে যখন ছাত্রদের সঙ্গে সরকারের শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ তৈরি হলো, তখন আমরা ঢাকা শহরে, সারাদেশে অগ্নিসন্ত্রাস, তাণ্ডব ও সন্ত্রাস দেখলাম। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধান হয়ে গেলে যাদের উদ্দেশ্য হাসিল হবে না, তারা তাড়াহুড়ো করে রাজধানীতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে হামলা করল।”
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, “পুলিশের পোশাক পরে দুর্বৃত্তরা সাধারণ ছাত্রদের ওপর হামলা চালিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর দোষ চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করল। দুর্যোগ ভবনে আগুন দিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশের সার্ভার স্টেশন পুড়িয়ে দেওয়া হলো। সমগ্র পৃথিবীর সঙ্গে বাংলাদেশ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল।
“পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের গণমাধ্যমে সংবাদের কনটেন্ট আগে থেকেই তৈরি করে সরবরাহ করা হয়েছে। তারা বাংলাদেশকে একটি পরিত্যক্ত দেশ হিসেবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছিল।”
সংঘাত-সহিংসতার মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরের ভেতর কার্যক্রম থাকায় সন্তোষ প্রকাশ করে খালিদ বলেন, “আমরা আশ্বস্ত হয়েছি যে আমাদের অর্থনীতির লাইফলাইন চট্টগ্রাম বন্দর এখনও আনটাচড আছে, একদম নিরাপদ আছে। এটা আমাদের জন্য খুবই স্বস্তির ছিল।
“কিন্তু যে ঘটনা ঘটেছে তার কারণে আমরা অভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রে পণ্য পরিবহন করতে পারিনি। ইন্টারনেট নির্ভর হওয়ায় চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কার্যক্রম বন্ধের কারণে বন্দরে কনটেইনার জট লেগে গেছে। এই জট নিরসনে কাজ চলছে।”