ফরিদপুরে ৮ বছরের শিশু আবু বক্কার খলিফাকে হত্যার দায়ে তার চাচাতো ভাই মো. জিন্দার খলিফাকে মৃত্যুদন্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডও দেওয়া হয়।
হত্যাকাণ্ডে জিন্দারের সহযোগী মাহবুল শেখকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেয় আদালত।
জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান গতকাল সোমবার এ রায় দেন।
নিহত বক্কার ফরিদপুরের নগরকান্দার পুরাপাড়া ইউনিয়নের মেহেরদীয়া গ্রামের মো. পাচু খলিফার ছেলে। আর জিন্দার নগরকান্দা উপজেলার মেহেরদিয়া এলাকার বাসিন্দা।
রায় ঘোষণার সময় আসামি দুজনই আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায়ের পর তাদের জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
মামলার নথি থেকে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ১ জুলাই নগরকান্দার পুরাপাড়া বাজার থেকে নিখোঁজ হয় বক্কার। পরদিন এক অজ্ঞাত ব্যক্তি তার বাবাকে ফোন করে জানায়, তার ছেলেকে অপহরণ করা হয়েছে। মুক্তিপণ বাবদ তিন লাখ টাকা দাবি করেন ওই ব্যক্তি। এই টাকা নিয়ে পাচুকে মাওয়া ঘাটে যেতে বলা হয়।
১০ জুলাই নগরকান্দা থানায় অপহরণ মামলা করেন পাচু। ছেলে অপহরণের ১৬ দিন পর ১৭ জুলাই তার বাড়ি থেকে কিছু দূরে এক ডোবা থেকে বক্কারের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
অপহরণের মামলা তদন্তের দায়িত্বে ছিলেন নগরকান্দা থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আব্দুল গফফার। ওই বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর জিন্দার ও মাহবুলকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন তিনি।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, জিন্দার চাচাতো ভাইকে অপহরণ করে তার বাবার কাছ থেকে টাকা আদায় করার পরিকল্পনা করেছিলেন। এর অংশ হিসেবে ১ জুলাই সন্ধ্যা ৬টার দিকে পুরাপাড়া বাজারে বক্কারকে পুরি কিনে দেন জিন্দারের সহযোগী ইজিবাইকচালক ৩৯ বছর বয়সী মাহবুল।
পরে মাহবুল অন্য যাত্রীদের সঙ্গে বক্কারকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে তাকে তার ইজিবাইকে ওঠান।
একপর্যায়ে ইজিবাইক থেকে সব যাত্রী নেমে গেলে বক্কারের বাড়ি থেকে ১ কিলোমিটার দূরে একটি বাগানে তাকে নিয়ে যান মাহবুল। পরে পরিকল্পনামাফিক জিন্দার সেই বাগানে যায়।
সেখানে বক্কারকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। পরে লাশ পাশের ডোবায় ফেলা হয়।