উজানের ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে অতিভারী বৃষ্টির কারণে তিস্তা নদীর পানি এখন বিপৎসীমার ওপরে। ফুলেফেঁপে উঠছে ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, দুধকুমার ও ধরলা নদী। এই কারণে উত্তরাঞ্চলের তিন জেলা কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট ও রংপুরে হতে পারে বন্যা।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (বাপাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বলছে, ব্রহ্মপুত্র ও যমুনার পানি সতর্কসীমায় পৌঁছেছে। তিস্তার পানি কাউনিয়ায় বিপৎসীমার ৫২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে যাচ্ছে। ধরলা, দুধকুমার নদের পানিও বিপৎসীমার বেশ কাছাকাছি।
এসব নদ-নদীর পানি বাড়ায় কুড়িগ্রাম, লালমনিহাট ও রংপুর জেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যা দেখা দিতে পারে।
উত্তরাঞ্চলের তিন জেলায় বন্যা আশঙ্কা থাকলেও মনু ও খোয়াই নদীর পানি কমায় সিলেট, সুনামগঞ্জ এবং নেত্রকোণা জেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।
বাপাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “সিলেট অঞ্চলে ভারি বৃষ্টিপাত কমে আসায় আপাতত সেখানে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হবে না। তবে তিস্তা, দুধকুমার ও ধরলার পানি বাড়তে থাকায় কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট ও রংপুরে স্বল্পমেয়াদী বন্যা হতে পারে।”
পদ্মা ও যমুনার পানি বাড়লেও এর আশপাশের অঞ্চলে এখনই বন্যা নাও হতে পারে বলেও তিনি জানান।
এদিকে ঈদের দিনের মেঘাচ্ছন্ন আবহাওয়ার রেশ এখনো কমেনি। সারা দেশেই হালকা থেকে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। এ কারণে তাপমাত্রাও বেশ কমেছে।
বৃহস্পতিবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল যশোর জেলায় ৩৫ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় ছিল ৩০ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শুক্রবার সকালে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল জয়পুরহাটে ২২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
বৃষ্টিপাতের প্রবণতা আরও পাঁচদিন বাড়তে পারে। এ কথা জানিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তরের শুক্রবার সকালের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। শনি ও রবিবার একই ধরনের আবহাওয়া থাকতে পারে।
তবে পানি কমে এলেও সিলেট অঞ্চলে নতুন করে বন্যার আশঙ্কা করছেন আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ড. বজলুর রশিদ সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “মৌসুমি বায়ু সারা দেশেই সক্রিয় রয়েছে। এর প্রভাবেই এখন বৃষ্টি হচ্ছে। দেশের দক্ষিণাঞ্চলেও গতকাল বৃষ্টি হয়েছে। শুক্র, শনি, রবিবার উত্তরাঞ্চলে কিছুটা কম বৃষ্টি হবে। ২৪ জুন থেকে সেখানে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়তে পারে।”
তিনি বলেন, “ভারতের আসাম, মেঘালয়ে ভারী বৃষ্টি কমে আসায় সিলেট অঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। শুক্রবার নেপালে বৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু ২৭ জুন থেকে বাংলাদেশসহ ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বেশ ভালো পরিমাণে বৃষ্টি হতে পারে। তখন সিলেট ও নেত্রকোণার নিম্নাচলে নতুন করে বন্যা দেখা দিতে পারে।”