ফুটবলে নজিরবিহীন ঘটনাই ঘটল কাল (রাতে)। বলা যায় তুরস্কের ফুটবলে তুঘলকি কাণ্ড। তুর্কি সুপার কাপ ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল ঐতিহ্যবাহী দুই ক্লাব ফেনারবাখ ও গালাতাসারাই।
মর্যাদার সেই ফাইনালটা প্রতিবাদের মঞ্চ হিসেবে বেছে নেয় ফেনারবাখ। তুরস্কের ফুটবল ফেডারেশনের অব্যবস্থাপনা, দুর্বল নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও অন্যায্য শাস্তির প্রতিবাদে ফাইনালে মূল দলের কাউকে নামায়নি তারা।
এর বদলে নামিয়ে দেয় অনূর্ধ্ব-১৯ দলের ফুটবলারদের। অপরদিকে গালাতাসারাইয়ে ছিল আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের মাউরো ইকার্দিসহ আরও অনেক তারকা। ফেনারবাখের সেই ‘কচিকাঁচারা’ প্রথম মিনিটেই হজম করে ১ গোল।
গোলটা করেছিলেন মাউরো ইকার্দি। আসলে তাকে সেভাবে বাধাই দেয়নি কেউ। গোল হজমের পর একে একে সবাই মাঠ ছেড়ে যান ফেনারবাখ খেলোয়াড়রা!
This was the moment Fenerbahce players walked off the field during the Turkish Super Cup to hand Galatasaray the win . #korkakfenerbahce pic.twitter.com/sfOkrzsBz1
— Dekings Sport International (@Chukwuebuk9804) April 7, 2024
আর মাঠে ফিরেননি তারা। দর্শকরা গ্যালারি থেকে শিষ বাজিয়ে জানাচ্ছিলেন দুয়ো। তবে গালাতাসারাই খেলোয়াড়রা হাততালি দিয়ে স্বাগতই জানায় এমন প্রতিবাদকে।
শেষ পর্যন্ত আর মাঠে নামেননি ফেনারবাখ ফুটবলারেদের কেউ। ফাইনালে ১-০ গোলে জয়ী ঘোষণা করা হয় গালাতাসারাইকে। এভাবে শিরোপা জিতে উৎসবে ভাসেননি গালাতাসারাই খেলোয়াড়রাও।
আসলে গত মাসে ট্রাবজনসপোর ক্লাবের বিপক্ষে সুপারলিগের ম্যাচ শেষে মাঠে নেমে পড়েছিলেন দর্শকরা। এরপর দর্শকরা ধাওয়া করেন ফেনারবাখ খেলোয়াড়দের। কয়েকজন খেলোয়াড়ের সঙ্গে সংঘর্ষও হয় তাদের।
তাতে উল্টো ফেনারবাখের দুই ফুটবলার ইরফান ও জেয়ডেনকে নিষিদ্ধ করা হয় এক ম্যাচ করে। আর ট্রাবজনসপোর ক্লাব শাস্তি পায় ছয় ম্যাচ দর্শকহীন গ্যালারিতে খেলার। আক্রান্ত হওয়ার পর দুই ফুটবলারের এমন শাস্তিটা মানতে পারেনি ফেনারবাখ ক্লাব।
তাছাড়া ইউরোপা লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে অলিম্পিয়াকোসের বিপক্ষে ম্যাচের জন্য সুপার কাপের ফাইনালের সূচিতে বদল চেয়েছিল ফেনারবাখ। তুরস্কের বদলে বিদেশি রেফারি দিয়ে সুপার কাপ ফাইনাল পরিচালনার আবেদনও করেছিল তার। রাখা হয়নি একটি অনুরোধও।
এর আগে ২০১১ সালে ম্যাচ পাতানোর অভিযোগে জেলে যেতে হয়েছিল ফেনারবাখের সাবেক প্রেসিডেন্ট আজিজ ইয়ালিদিমিরকে। অথচ পরে দোষী প্রমাণিত হননি তিনি। ২০১৫ সালে তাদের টিম বাসে হয়েছিল বন্দুক হামলা। তখনও তেমন ভূমিকা রাখেনি তুরস্ক ফুটবল ফেডারেশনের।
এসব কিছুরই তারা প্রতিবাদ করল ২ মিনিট পর দলের খেলোয়াড়দের তুলে নিয়ে। আর ফুটবল বিশ্ব সাক্ষী হল তুর্কি সুপারলিগে তুঘলকি এক কাণ্ডের।