দেশের মূল্যস্ফীতি পরিস্থিতি কখন নাগাদ সহনীয় পর্যায়ে পৌঁছতে পারে সে বিষয়ে ধারণা দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।
তার মতে, চলতি অর্থবছরের শেষ নাগাদ মূল্যস্ফীতি সহনীয় পর্যায়ে নেমে আসবে। একই সময়ে প্রবাসী আয় বৃদ্ধির পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও শক্ত অবস্থানে পৌঁছবে।
বুধবার জাতীয় সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের বাজেট বাস্তবায়ন অগ্রগতি প্রতিবেদন উপস্থাপন করার সময় এসব কথা বলেন মন্ত্রী।
আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন, “আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানিসহ বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি এবং বৈদেশিক মুদ্রার হারের দ্রুত পরিবর্তনের ফলে দেশে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে মূল্যস্ফীতির চাপ অনুভূত হচ্ছে। তবে মূল্যস্ফীতির বর্তমান চাপ চলতি অর্থবছরের শেষ নাগাদ সহনীয় পর্যায়ে নেমে আসবে বলে আশা করা যায়।”
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ নিচ্ছে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, আরও কার্যকর ব্যবস্থা নিতে মনিটরি টার্গেটিংভিত্তিক মুদ্রানীতি থেকে সরে এসে বাংলাদেশ ব্যাংক সুদহার লক্ষ্যভিত্তিক মুদ্রানীতি বাস্তবায়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
নীতি সুদহার বেশ কয়েক দফায় বাড়ানো হয়েছে এবং ঋণের সুদহারের ঊর্ধ্বসীমা তুলে দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
মন্ত্রী জানান, বিভিন্ন মেয়াদি ট্রেজারি বিল ও বন্ডের সুদহার উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক ঋণের সুদ হারের ক্যাপ তুলে দিলেও SMART রেটের সঙ্গে সুনির্দিষ্ট মার্জিন নির্ধারণ করে ঋণের সুদহারের ঊর্ধ্বসীমা ঠিক করে দিয়েছে। এজন্য কৃষি, রপ্তানিমুখী শিল্প ও কুটির শিল্পসহ ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পখাতে ঋণ সরবরাহ যাতে নিরবচ্ছিন্ন থাকে, সে ব্যাপারে সরকারের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকায় সুদহারের এই পরিবর্তনের ফলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে তেমন কোন ক্ষতিকর কোনও প্রভাব পড়বে না।
অর্থমন্ত্রী বলেন, পোস্ট-কোভিড চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা পরবর্তীতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, বর্তমান বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের কারণে সৃষ্ট বিরূপ অর্থনৈতিক পরিস্থিতি মোকাবেলা, বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্য এবং বাংলাদেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে।
“দেশের রপ্তানি বৃদ্ধিতে পণ্য বহুমুখীকরণ, বাজার বহুমুখীকরণ, মান নিয়ন্ত্রণ এবং বিদেশে নতুন বাজার সৃষ্টিতে নানাবিধ পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।”
সরকার প্রচলিত শ্রমবাজারের পাশাপাশি নতুন নতুন শ্রমবাজার সৃষ্টিতে সচেষ্ট থাকায় চলতি অর্থবছর শেষে প্রবাসী আয় বাড়বে বলেও প্রত্যাশার কথা জানান তিনি।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দ্রুত আগের মতো শক্ত অবস্থানে ফিরবে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে অর্থমন্ত্রী বলেন, “জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে রপ্তানি বৃদ্ধি, আমদানি হ্রাস ও প্রবাস আয় বাড়ায় চলতি হিসাব ভারসাম্য পজেটিভ ছিল। তবে ফাইন্যান্সিয়াল একাউন্টের ঋণাত্বক প্রবৃদ্ধির কারণে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমেছে। এরই মধ্যে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছে।”