Beta
বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪
Beta
বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪

নিজের ভেতর খুঁজে নিন ‘নেতৃত্ব’

মহান নেতা কখনই নিজের ভুল স্বীকার করে নিতে পিছপা হন না।
ছবি: লন্ডন এসবিএ ডট ওআরজি ডট কম
[publishpress_authors_box]

সামনের সারিতে এসে দাঁড়ানো খুব সহজ কথা নয়। নেতৃত্ব দেয়ার গুণ কিছু কিছু হয়তো নিজের ভেতরে অনেকেরই থাকে, কিন্তু তা উপলব্ধি করে সময় বুঝে কাজে লাগানোর সামর্থ্য সবার থাকে না। তাই নিজের সঙ্গে বসে একবার জেনে নিন নেতা হওয়ার এই জাদুকরী কিন্তু জরুরি গুণাবলী আপনার ভেতর কতখানি আছে।

আবেগ ও বুদ্ধির ভারসাম্য

আবেগ মানেই শুধু আনন্দ, দুঃখ কিংবা রাগ নয়। আবেগ আরও বড় রকমের অভিজ্ঞতার সমন্বয় যা সূক্ষ্ণভাবে উপলব্ধি করতে হয়। বিশেষ করে যারা সবার সামনে দাঁড়াতে চান অর্থ্যাৎ নেতৃত্বে থাকতে চান তাদের জন্য বাকি সবার আবেগ বুঝতে পারার সামর্থ্য থাকা একেবারেই আবশ্যক।

নেতৃত্বে থাকা মানে আপনি একজন পথপ্রদর্শকও। তাই নিজের পাশাপাশি বাকি সবাই কোনো ঘটনা, কথা, আচরণ নিয়ে কীভাবে উপলব্ধি করে, কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে সেসব বুঝতেই হবে।

এই গুণের কারণে কর্মক্ষেত্রে আপনি সহজেই টালমাটাল পরিস্থিতেও সামলে নিতে পারবেন। যখন ভীষণ চাপে সবাই পর্যুদস্ত তখন সমাধান হয়ে আবির্ভূত হতে পারেন আপনি নিজেই।  

স্বতঃস্ফূর্ত থাকা

যে কোনো পরিস্থিতে স্বাভাবিক থাকতে পারা বড় একটি গুণ। জীবন আপনাকে বড় ধরনের সঙ্কটের মুখোমুখি করবেই নানা সময়ে। এই পরিস্থিতিতে আটকে না থেকে কীভাবে নিজেকে ছাড়িয়ে আনা যায় তা ভাবাই হবে বুদ্ধিদীপ্ত আচরণ। এতে সামনে এগিয়ে যাওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় প্রকাশ পাবে আপনার আচরণে।

যদি কঠিন মুহূর্তেও কাউকে মাথা ঠান্ডা রেখে ভাবতে ও কাজ করতে দেখেন তাহলে তিনি অবশ্যই আগামীতে কাঙ্ক্ষিত নেতা হয়ে উঠতে পারবেন।

মানিয়ে নেওয়ার সামর্থ

বিশ্বে সবকিছু পরিবর্তনশীল। একজন সত্যিকারের নেতার এই পরিবর্তনকে সবার আগে বুঝতে হবে। সময়ের সুরে সুরে মিলিয়েও লক্ষ্যে পৌঁছার পথ ধরে রাখতে হবে।

চার্লস ডারউইন বলেছিলেন, “টিকে থাকার লড়াইয়ে শক্তিশালী বা চালাকরা এগিয়ে থাকে না। যারা খাপ খাইয়ে নিতে পারে তারাই এগিয়ে যেতে পারে।”

পরিবর্তনকে স্বাগত জানিয়ে একজন নেতা পুরো প্রতিষ্ঠান, দল কিংবা জনগোষ্ঠীকেও সতর্ক, কৌশলী হওয়ার বার্তা পৌঁছে দেন।

সিদ্ধান্ত নিতে পারা

সময়ই বলে দেবে কখন একটি সিদ্ধান্ত নেয়া ছাড়া গতি নেই কোনো। আর ওই সময় একজন নেতাই পারেন এমন দৃঢ় হতে; যা একটি প্রতিষ্ঠান, দল এবং জনগোষ্ঠীকে নতুন সম্ভাবনার মোড়ে দাঁড় করাবে।

সহজ সময়ে সিদ্ধান্ত নিতে সবাই পারে। একজন নেতা স্রোতের বিপরীতে গিয়েও সিদ্ধান্ত নিতে পারে, যা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সঠিক বলেই প্রমাণিত হয় সবার কাছে।

কোনো ঘটনার ভালো ও মন্দ দিক সবার থেকে শোনা আদর্শ নেতার আচরণ। আর চাপের মধ্যে থেকেও সিদ্ধান্ত নিয়ে এগিয়ে যাওয়া নেতৃত্বের শক্তিশালী চরিত্র প্রকাশ করে।

গড়ে তোলার সক্ষমতা

অন্যকে সক্ষম করে তোলা শুধু কর্মক্ষেত্রের জন্যই জরুরি নয়; বরং ভালো মানুষ হতেও এর গুরুত্ব অনেক বেশি। একজন নেতা বা একজন দক্ষ ম্যানেজার নিজের কর্মীকে সবসময় কাজ শেখার সুযোগ ও পরিবেশ গড়ে দেয়াকে প্রাধান্য দেন। এতে করে অধীনস্ত কর্মীরা কাজের মান বাড়াতে আরও আগ্রহী হয়ে ওঠে।              

আত্মসমালোচনা

নেতা মানেই নির্ভুল একজনকে ধরে নেয়া হয়। কিন্তু একজন সত্যিকারের নেতা জানেন তিনি সবসময় সঠিক নাও হতে পারেন। একজন নেতা সব সময় সব প্রশ্নের উত্তর দিতে সক্ষম হবেন তাও নয়। মহান নেতা কখনই নিজের ভুল স্বীকার করে নিতে পিছপা হন না। আর যিনি সঠিক সময়ে নিজের ভুলের কথা অকপটে বলতে পারেন তিনি নেতৃত্বে আরও এক ধাপ এগিয়ে যান।

আগামীর লক্ষ্য বোঝা

শুধু একদল কর্মী সামলানোকেই নেতৃত্ব বলে না। বরং একদল কর্মীকে একটি লক্ষ্যে পৌঁছাতে গড়েপিটে নেয়াই হলো নেতার কাজ। এজন্য সবার আগে নেতার কাছে স্পষ্ট হতে হবে ভবিষ্যতে কোথায় দাঁড়াতে চান তারা? তবে রোজকার নিয়মের কাজের বাইরেও নতুন কিছু করার স্পৃহা দেখা দেবে সবার মাঝেও।

সত্যান্বেষী হওয়া

নেতা মানে তার ভাবনা, কথা এবং প্রতিশ্রুতিতে আস্থা জাগতে হবে সবার। এজন্য নেতার আচরণে সততা বজায় রাখতে হবে। তবেই তার যে কোনো কথায় প্রতিষ্ঠান, দল, জনগোষ্ঠী সহজেই বিশ্বাস ধরে রাখতে পারবে।

যদি এই বিশ্বাসযোগ্যতা না থাকে তবে একজন নেতা যত বুদ্ধিদীপ্ত এবং লক্ষ্যবান হন না কেন, তার গ্রহণযোগ্যতা গড়ে উঠবে না কারো কাছেই। তাই একজন নেতাকে সততার সঙ্গে নিজের বৈশিষ্ট্যে উদ্ভাসিত হতে হবে।

কথার জাদু

মানুষের সঙ্গে যোগাযোগের সক্ষমতা একজন নেতার বড় গুণ। এরমধ্যে দিয়ে নেতা তার পরিকল্পনা পৌঁছে দিতে পারেন সবার কাছে। একজন নেতাকে তাই জানতে হবে কীভাবে সবার কাছে কথা পৌঁছে দিতে হবে, কীভাবে সবার কথা শুনতে হবে। এই মিথস্ক্রিয়া বাড়িয়ে তুলতে নেতার জনপ্রিয়তা এবং কমিয়ে আনবে দ্বন্দ্ব।  

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত