রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদে মাছ শিকারের নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ দ্বিতীয় দফায় বাড়ানোর হয়েছে। এই দফায় মাছ ধরা যাবে না আরও ২৩ দিন।
সে হিসেবে আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরা যাবে না । ১ সেপ্টেম্বর মধ্যরাত থেকে মাছ শিকার শুরু করতে পারবেন জেলেরা।
বৃহস্পতিবার রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে ‘কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য আহরণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ সংক্রান্ত’ বৈঠক থেকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
কাপ্তাই হ্রদ মৎস্য উন্নয়ন ও বিপণন কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক কমান্ডার মো. আশরাফুল আলম ভূঁইয়া জানান, বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা, ব্যবসায়ী ও জেলেদের চাহিদা এবং তাদের অবস্থার কথা বিবেচনা করে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন রাঙ্গামাটির জেলাপ্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান। তিনি বলেন, “কাপ্তাই হ্রদে মাছ শিকারের সঙ্গে স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও জড়িত। এটা ঠিক যে, দীর্ঘদিন মাছ শিকার বন্ধ থাকায় এখানকার ভোক্তারা প্রাণিজ আমিষ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। কিন্তু সবার স্বার্থ বিবেচনা করেই নিষেধাজ্ঞার সময় আরও কিছুটা বাড়ানো হয়েছে।”
এর আগে গত ২৫ এপ্রিল থেকে ২৪ জুলাই পর্যন্ত তিন মাস দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সবচেয়ে বড় এই কৃত্রিম জলাধারে মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা দেয় জেলা প্রশাসন। কাপ্তাই হ্রদে কার্পজাতীয় মাছের সুষম বৃদ্ধি, মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন নিশ্চিতসহ জীববৈচিত্র্য রক্ষায় এ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। এ সময়ে হ্রদের মাছ বাজারজাতসহ স্থানীয় বরফকলগুলোও বন্ধ রাখা হয়।
সাধারণত প্রতি বছরের ১ মে থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত তিন মাস কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। তবে গত বছর হ্রদের পানি অস্বাভাবিক মাত্রায় কমে গেলে নির্ধারিত সময়ের ১২ দিন আগেই বন্ধ করা হয় মাছ আহরণ।
আবার তিন মাসের নির্ধারিত সময় পরেও পানি পর্যাপ্ত পরিমাণে না বাড়ায় দুই দফায় বাড়ানো হয় মাছ শিকারের নিষেধাজ্ঞা।
মৎস্য অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, রাঙ্গামাটির রাজস্থলী ও কাউখালী ছাড়া বাকি আট উপজেলা ও খাগড়াছড়ির দীঘিনালা এবং মহালছড়ি উপজেলা মিলে কাপ্তাই হ্রদের ওপর নির্ভরশীল নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা প্রায় সাড়ে ২৬ হাজার।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা অধীর চন্দ্র দাশ, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই) রাঙ্গামাটি নদী-উপকেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ইসতিয়াক হায়দার, মৎস্য ব্যবসায়ী উদয়ন বড়ুয়াসহ অন্যান্য ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্টরা।