অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এই মুহূর্তে বন্যা মোকাবেলাকে সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার উল্লেখ করে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও দেশবাসীকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলোর (এনজিও) প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এ আহ্বান জানান।
শনিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এনজিও প্রতিনিধিরা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করেন। উপকূল ও দুর্গত এলাকায় কর্মরত ৪৪টি এনজিওর কর্মকর্তারা এই বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন। পরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বাসসকে এ তথ্য জানান।
শফিকুল আলম জানান, “প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, “সরকার এই মুহূর্তে বন্যা মোকাবিলাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে। আমাদের অবশ্যই এ পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে। সবাই মিলে এ দায়িত্ব পালনে এগিয়ে আসতে হবে।”
ড. ইউনূস বন্যা মোকাবেলায় উদ্ধার কার্যক্রম ও ত্রাণ বিতরণসহ আনুষঙ্গিক কার্যক্রমের ক্ষেত্রে সমন্বয় বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, “বন্যা মোকাবিলায় সরকার, এনজিওসহ যারা যারা কাজ করছেন, তাদের সবার মধ্যে সমন্বয় বাড়াতে হবে। সম্ভব হলে জেলা পর্যায়েও বন্যা মোকাবিলার কাজে সমন্বিতভাবে করতে হবে।”
কোটি কোটি মানুষ বন্যায় উদ্ধার কার্যক্রম ও ত্রাণ নিয়ে এগিয়ে আসছে। তাদের মহৎ উৎসাহের যথার্থ ব্যবহার নিশ্চিত করা জরুরি। এজন্য আমাদের সবাইকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
টানা ভারী বৃষ্টি ও ভারত থেকে নেমে আসা ঢলে ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে দেশের ১২টি জেলা। এতে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা প্রায় ৪৮ লাখ। পানিবন্দি আছে ৮ লাখ ৮৭ হাজার ৬২৯টি পরিবারের মানুষ। বন্যায় এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ১৫ জনের।
বৈঠকে মুহাম্মদ ইউনূস বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পরে আরও বেশি কাজ করতে হবে বলে উল্লেখ করে বন্যা পরবর্তী খাদ্য ও স্বাস্থ্যঝুঁকিসহ সার্বিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব পক্ষকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান।
ছাত্র-জনতার অভুত্থানের মাধ্যমে দেশে দ্বিতীয় বিপ্লব সংঘটিত হয়েছে উল্লেখ করে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. ইউনূস বলেন, “তরুণরা আমাদের জন্য মহৎ সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। দ্রুত এই সুযোগের সর্বোত্তম ব্যবহার করতে হবে।”
তবে শুধু বন্যা মোকাবেলায় গুরুত্ব দিলে হবে না, কিভাবে দেশকে বন্যামুক্ত রাখা যায় সেদিকেও মনোযোগী হতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।