সিলেটে চলমান বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। অনেক এলাকা থেকে পানি নামতে শুরু করলেও কোথাও রাতে বৃষ্টির কারণে কোথাও পানি বাড়ছে। আবার নগরীর কোনও এলাকায় জলাবদ্ধতাও সৃষ্টি হয়েছে।
রবিবার মধ্যরাত থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত ভারি বৃষ্টিতে সুরমা-কুশিয়ারার পানি বৃদ্ধি যায়। বিকাল থেকে কোথাও পানি কমতে শুরু করে, তবে কোথাও বাড়ছে। উপজেলাগুলোয় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও নগরের অনেক এলাকায় পানি স্থির রয়েছে। দক্ষিণ সুরমা এলাকার বঙ্গবীর রোড, সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ এলাকাসহ বেশকিছু এলাকা এখনও পানিতে নিমজ্জিত।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের সোমবার সন্ধ্যা ৬টার রেকর্ড থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ৬১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল, যা দুপুর ১২ টায় ছিল ৫৯ সেন্টিমিটার। সিলেট পয়েন্টে বিপৎসীমার এক সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল, দুপুর ১২ টায় যা ছিল ১৩ সেন্টিমিটার উপরে।
কুশিয়ারার পানি জকিগঞ্জের অমলসিদে পয়েন্টে সন্ধ্যায় বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার তথ্য রেকর্ড হয়েছে, যা দুপুরে ছিল ৪৪ সেন্টিমিটার। ফেঞ্চুগঞ্জে কুশিয়ারা নদীর পানি বিপৎসীমার ২১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল, দুপুর ১২টায় যা ছিল ১৭ সেন্টিমিটার উপরে।
গতরাতে সিলেটে টানা ৬ ঘণ্টা বৃষ্টির কারণে বন্যা দুর্গত নয়টি উপজেলায় পানি কিছুটা বেড়েছে। পাশাপাশি সিটি করপোরেশনের নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। রাস্তাঘাট উপচে পানি ঢুকে পড়েছে বাসা-বাড়িতে।
নগরের মীরের ময়দান পায়রা, দরগাহ মহল্লা , মিরাবাজার, তালতলা, মাছুদিঘীরপার, জামতলা, তোপখানা, কাজির বাজার, যতপুর, তেররতন, উপশহর, সোবহানীঘাট, শেখঘাট, লালদীঘির পাড়, বিলপাড়সহ অনেক এলাকা তলিয়ে গেছে।
তবে সীমান্তবর্তী ভারতের চেরাপুঞ্জি ও আসামে বৃষ্টি কম হলে এবং সিলেটে নতুন করে বৃষ্টি না হলে নগর এলাকার পানি দ্রুত নেমে যাবে বলে মনে করেন পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন।
সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসের ভেতরে পানি জমে থাকায় সোমবারের ক্লাস ও পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কলেজের অধ্যক্ষ শিশির রঞ্জন চক্রবর্তী। তিনি জানিয়েছেন, অবস্থার উন্নতি হলে পরে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইফতেখার আহমদ চৌধুরী সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, সুরমা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নগরের ২৮টি ওয়ার্ডের নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছিল। নদীর পানি কমতে শুরু করায় নগরের বন্যা পরিস্থিতিরও উন্নতি হচ্ছে।
ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে গত সোমবার থেকে টানা ভারি বৃষ্টি হয় সিলেটে। একইসঙ্গে উজান থেকে নেমে আসে পাহাড়ি ঢল। ফলে সিলেট জেলার ১৩ উপজেলার মধ্যে একে একে ৯ উপজেলার নিম্নাঞ্চল বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়। প্লাবিত হয় সিলেট নগরীর ৪২ টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২৮ টি ওয়ার্ডের নিম্নাঞ্চলও।