দাগনভুঁইয়া আর সেনবাগ, এলাকা দুটি পাশাপাশি। তবে দাগনভুঁইয়া ফেনীতে, সেনবাগ নোয়াখালীতে। দুই উপজেলার প্রশাসনিক এই বিভাজন ঘুচিয়ে দিয়েছে বন্যা, তাতে দুই এলাকাই তলিয়ে আছে।
দাগনভুঁইয়ার আল আমিন হাওলাদার সকাল সন্ধ্যাকে বললেন, “আমরা কিছু ত্রাণ পেয়েছি। কিন্তু সেনবাগের ভাইয়েরা ডুবে যাচ্ছে। সেখানে পানি বাড়ছেই। সেখানে ত্রাণের অভাবেও অনেকে।”
কেন ত্রাণ পাচ্ছে না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “যেখানে পানি বাড়ছে, সেসব এলাকায় স্রোতের কারণে নৌকা যেতে পারছে না, তাই সেখানকার মানুষ ত্রাণও পাচ্ছে না। ওরা খুব কষ্টে আছে।”
বৃষ্টি কমায় বন্যার পানি কিছুটা কমেছে। তবে সব স্থানে সমানভাবে কমেনি। ফেনীর কোথাও পানি কমেছে তো নোয়াখালী কোথাও বাড়ছে।
গত সপ্তাহে আকস্মিক এই বন্যা যেখানে ভয়াল হয়ে দেখা দিয়েছিল, সেই এলাকা হচ্ছে ফেনীর ভারত সীমান্তের উপজেলা ছাগলনাইয়া। সেখানে এখনও বিদ্যুৎ নেই, মোবাইল নেটওয়ার্কও নেই বেশিরভাগ স্থানে।
ছাগলনাইয়ার মাহমুদুল হাসান রাজু ঢাকায় থাকলেও তার বোন রোকসানা চৌধুরী ২৪ আর ২২ বছরের দুই মেয়েকে নিয়ে গ্রামে থাকেন।
গ্রাম থেকে দূরে স্বপ্নের আউটলেটে ফোন চার্জ করার ব্যবস্থা করেছে। সেখান থেকে মাহমুদুল হাসান নিজের এলাকার খবরাখবর নিচ্ছেন।
তিনি সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “অনেক ত্রাণ গেছে, ফেইসবুকে দেখছি। কিন্তু যারা গ্রামের দিকে থাকেন, ভেতরের দিকে থাকেন। সেখান গতকাল (২৫ আগস্ট) পর্যন্ত কেউ যায়নি। বলতে গেলে সব ত্রাণ শহরকেন্দ্রিক। ভেতরের দিকে ত্রাণ খুবই কম।”
মাহমুদুল বলেন, “ওই এলাকাগুলোতে চারিদিকে পানি, কিন্তু খাবার মতো এক ফোঁটা পানিও নেই। ছাগলনাইয়া সরকারি কলেজে বিমানবাহিনী ক্যাম্প করেছে, সেখানে গিয়ে পানি আনতে হয়। কিন্তু আমার বোন আর দুই ভাগ্নির পক্ষে সেটা সম্ভব হচ্ছে না। ওরা যে কীভাবে দিন কাটাচ্ছে।”
ছাগলনাইয়ার আরেক বাসিন্দা মো. ইলিয়াস হোসেন সকাল সন্ধ্যাকে একই কথা বলেন।
“যত ত্রাণ সংগৃহীত হচ্ছে, তার অর্ধেকও যদি দুর্গতদের কাছ পর্যন্ত পৌঁছাত, তাদের কষ্ট অনেকটাই লাঘব হতো।”
বন্যাকবলিত জেলাগুলোর মানুষের মতো ত্রাণ বিতরণে নামা অনেকেই বলছেন ত্রাণ নিয়ে সমন্বযহীনতার কথা। দুর্গত সবার কাছে ত্রাণ পৌঁছতে বড় বাধা হিসাবে যাতায়াতের সীমাবদ্ধতার কথা বলছেন তারা।
মৌসুমি বায়ু যখন বেশ সক্রিয়, তখন ক্লাউডবার্স্ট বা মেঘ বিস্ফোরণের কারণে ত্রিপুরা রাজ্যে গত সপ্তাহে প্রবল বর্ষণ হয়। সেই বৃষ্টির পানি ভাসায় ভারতের রাজ্যটিকে, আর উজান থেকে নেমে আসা ঢলে ডুবে যায় বাংলাদেশের পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. কামরুল হাসান সোমবার জানান, এ বন্যায় দেশের ১১ জেলায় ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। মোট ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা ৫৭ লাখের বেশি। পানিবন্দি পরিবারের সংখ্যা প্রায় সাড়ে ১২ হাজার।
এই বন্যায় শুরুতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় ফেনী জেলার ছাগলনাইয়া, পরশুরাম ও ফুলগাজী উপজেলা। সেখান থেকে পানি নামার সময় তলিয়ে দিচ্ছে অন্য উপজেলাগুলোও।
ব্যাপক এক আন্দোলনে সরকার পতনের পর পুলিশসহ প্রশাসনিক ব্যবস্থা যখন নড়বড়ে, তখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ নিয়ে এসেছে এই বন্যা।
তবে সেই বন্যা মোকাবেলায় সাধারণ মানুষের অভূতপূর্ব সাড়াও দেখা যাচ্ছে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বিভিন্ন সংগঠন, ব্যক্তি উদ্যোগে ত্রাণ সংগ্রহ চলছে, ত্রাণ বিতরণও চলছে। কিন্তু সেই কাজে সমন্বয়হীনতার চিত্রও একই সঙ্গে ফুটে উঠছে। সেইসঙ্গে ত্রাণ লুট ও ডাকাতির খবরও পাওয়া যাচ্ছে।
দুর্গত এলাকার মানুষরা বলছেন, যারা ত্রাণ দিতে আসছেন, তারা অনেকেই প্রধান শহর, প্রধান সড়কে ত্রাণ দিয়ে চলে যাচ্ছেন। আবার কেউ কেউ কেবল ফটোশুটের জন্যও এসেছেন।
ত্রাণ নিয়ে ঢাকা থেকে ফেনীতে গেছেন সাবিনা ইয়াসমিন মাধবী। সমন্বয়হীনতার অভিযোগ করলেন তিনিও।
তিনি সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “এমনও দেেখছি, ১০০ পিস পানির বোতল নিয়ে ৩০ জন ঢাকা থেকে এসে কোমর পানিতে নেমে ছবি তুলছে। ৫০ পিস স্যানিটারি ন্যাপকিন নারীদের হাতে দিয়ে ৫০০টা ছবি তুলে ফেইসবুকে দিচ্ছে।”
গণমাধ্যমকর্মী মো. বোরহানুল আশেকীনও বলেন, ফেনী জেলায় পানি কমতে শুরু করেছে, পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে। রয়েছে পর্যাপ্ত ত্রাণ, কিন্তু ত্রাণ বিতরণে দরকার সমন্বয়।
ফেনীর পরশুরাম, ছাগলনাইয়া, ফুলগাজীতে পানি বেশি ছিল। সেখানে পানিবন্দিদের উদ্ধারে অনেকে নৌকা নিয়ে গিয়েছিল।
বোরহানুল বলেন, “কিন্তু সে নৌকাগুলো কোন দিকে যাবে, কার কাছে যাবে, কোন তথ্য উদ্ধারকারীদের কাছে ছিল না। ফলে সঠিক স্থানে যাওয়াও সম্ভব হয়নি।
“আবার ত্রাণ বিতরণের সময় দেখা গেছে, শহর এলাকায় যারা পানিবন্দি তারা পেয়েছেন, অনেকে একাধিকবারও পেয়েছেন। কিন্তু যারা একটু দূর এলাকায় পানিবন্দি, তাদের কাছে ত্রাণ যায়নি।”
নতুন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর স্থানীয় সরকারের সব প্রতিষ্ঠানের নির্বাচিত চেয়ারম্যানদেরে বরখাস্ত করেছে। ফলে জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভার মতো স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলো এখন অকার্যকর হয়ে আছে। আর তা ত্রাণ বিতরণের কাজে সমন্বয়হীনতা বাড়িয়ে তুলেছে।
ব্যক্তি উদ্যোগে যারা ত্রাণ দিতে যাচ্ছে, তাদের অনভিজ্ঞতার দিকটি দেখিয়ে ফেনীর এক বাসিন্দা সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “অনেকে নৌকা, ট্রলার, স্পিডবোট নিয়ে এসেছে, কিন্তু পরিমাণ মতো ডিজেল বা তেল আনে নাই। রাতে খোঁজ চালানোর জন্য লাইট আনে নাই, মোবাইল চার্জ দেওয়ার জন্য পাওয়ার ব্যাংক আনে নাই, এমনকি নিজেরা খেয়ে বেঁচে থাকার মতো খাবার সাথে রাখে নাই।”
ছাগলনাইয়ার ইলিয়াস হোসেন বলেন, “আপনারা একটু বোঝার চেষ্টা করেন, ফেনী মানে ফেনী টাউন আর মহিপাল না, ফেনী অনেক বড় জেলা, প্রায় ১৬ লাখ মানুষের বাস এখানে।
“গত পাঁচদিন বিদ্যুৎ নেই, একটা মোমবাতিও নিয়ে যায়নি কেউ। মাঝে-মধ্যে কেউ কেউ এসে মেইন রোড দিয়ে কয়েকটা প্যাকেট ছুড়ে ভিডিও করে চলে যায়।”
ফেনী ছাড়িয়ে নোয়াখালীর পাশের জেলা লক্ষ্মীপুরেও এখন পানি বাড়ছে। সোমবার সন্ধ্যায়ও যেখানে পানি ছিল না, মঙ্গলবার সেখানে কোমর সমান পানি।
ঢাকার একটি বেসরকারি টেলিভিশনের সাংবাদিক বেলায়েত গেছেন লক্ষ্মীপুরে। তিনি সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “এখানে নৌকা নাই, খাবার নাই, পানি নাই, ত্রাণ নাই, কিচ্ছু নাই ,,.. কিচ্ছু নাই।”
এই জেলার সন্তান বেলায়েত বলেন, “১৯৮৮ সালের বন্যার সময়েও লক্ষীপুরের এ অবস্থা হয়নি। ভারি বৃষ্টি ও নোয়াখালী থেকে আসা পানির ঢলে এখন উঁচু সড়কগুলোও ডুবে গেছে।
“মনোহরপুর, উত্তর জয়পুর, দত্তপাড়া, রতনের খিল, হাজিরপাড়াসহ অনেক গ্রামে গত পাঁচ দিন ধরে মানুষ পানিবন্দি, তাদের ত্রাণের খুব প্রয়োজন। রান্না নেই, ঘরে থাকা শুকনো খাবার শেষ। কিন্তু এই গ্রামগুলোতে কেউ আসেনি ত্রাণ দিতে।”
বেলায়েত বলেন, ত্রাণবাহী বেশিরভাগ গাড়ি কষ্ট হবে ভেবে প্রত্যন্ত এলাকাগুলোতে যাচ্ছে না।
লক্ষীপুরের জোবায়দা খাতুন তার ৬৩ বছরের জীবনে এমন অবস্থা আর দেখেননি। প্রায় দুই ফুট পানির নিচে তার ঘর, ঘরের সামনের নলকূপও পানির নিচে।
এলাকার কয়েকবাড়ি মিলিয়ে একমাত্র পানির উৎস ছিল তার এই নলকূপ। তার আশেপাশের সব মানুষ ভুগছে এখন পানির কষ্টে।
“চারিদিকে পানি, কিন্তু হাতের আঁজলায় কইরা খাওয়ার মতো পানিও পাচ্ছি না,” বলেন জোবায়দা।
ত্রাণও ডাকাতি
ত্রাণ নিয়ে ব্যক্তি উদ্যোগে ফেনীতে গিয়েছিলেন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় কর্মরত কাওসার শাকিল। তিনিও সমন্বয়হীনতা অভিযোগ করেছেন।
সেইসঙ্গে বলেন, “আরেকটা খারাপ খবর হলো, এদিকে খুব ডাকাতি হচ্ছে। ত্রাণের গাড়ি আটকে জিনিস ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে কয়েকটা জায়গায়।”
ডাকাত সন্দেহের এলাকায় ওইসব এলাকায় আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। তার ভুক্তভোগী হয়েছেন ঢাকা থেকে ত্রাণ নিয়ে ফেনীতে যাওয়া সাবিনা ইয়াসমিন মাধবী।
ঘটনার বর্ণনায় তিনি সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “দুদিন আগে ফেনীর ফাজিলপুর থেকে উদ্ধার ও ত্রাণ বিতরণ শেষে ফিরছিলাম মাঝরাতে। পথে নৌকার ইঞ্জিনের শব্দে এলাকাবাসী ডাকাত সন্দেহে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। মাইকে বলতে থাকে এলাকায় ডাকাত ঢুকছে। এরপর ইঞ্জিন বন্ধ করা হয়, কথা বলতে হয় মসজিদে গিয়ে।”
ধৈর্যের সঙ্গে সবাইকে বুঝিয়ে পার পান মাধবীরা। তিনি বলেন, “ত্রাণ সংগ্রহ করা সহজ, কিন্তু ত্রাণ প্রকৃত ভুক্তভোগীর কাছে পৌঁছানো কঠিন থেকে কঠিনতর কাজ।”
ফেনীর বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতির বিষয়ে জানতে চাইলে সোনাগাজীর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল হাসান সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “ডাকাতির কথা শুনেছি। এ নিয়ে আজ (মঙ্গলবার) কিছুক্ষণ আগেই সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা, সোনাগাজী থানার ওসি এবং আমি মিটিং করলাম।
“যতদূর মনে হচ্ছে এখন পর্যন্ত “রিউমার। রিউমার হলেও আমরা সতর্ক রয়েছি, সাবধানতা অবলম্বন করছি।”
টিকটকারদের দৌরাত্ম্যে ক্ষোভ
বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে অনেকে ত্রাণ নিয়ে যাচ্ছে, ত্রাণ বিতরণের ছবি ভিডিওতে সয়লাব এখন সোশাল মিডিয়া। ত্রাণ যাচ্ছে, বিলিও হচ্ছে, তা অস্বীকার করার কোনও সুযোগ নেই। তবে এরমধ্যে স্থানীয়দের ক্ষোভ বাড়িয়েছে ফটোসেশন, ভিডিওর দৌরাত্ম্য।
মো. ইলিয়াস বলেন, “হাত জোড় করে বলি, আপনার টাকা, আপনার ত্রাণ দিয়ে আর টিকটকার আর ভিউ ব্যবসায়ীদের ফেনীতে পাঠায়েন না। এরা বেশিরভাগই যাচ্ছে পিকনিক করতে, ভিডিও করে পেছনে করুণ মিউজিক লাগিয়ে আইডি রিচ বাড়াতে।”
গণমাধ্যমকর্মী আদিত্য আরাফাতের বাড়ি ফেনীতে। নিজের এলাকার ঘটনার বিবরণ দিয়ে তিনি বলেন, অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ ফেনী জেলা। বাংলাদেশে যেসব জেলাগুলোতে সবচেয়ে বেশি রেমিটেন্স আসে, তার একটি ফেনী। ঢাকা ও চট্টগ্রামের মাঝে হওয়ায় এ জেলার গুরুত্বও অনেক।
“যারা ফেনী যাচ্ছেন খাবার পানি দিতে, তাদের কাছে অনুরোধ, অনুগ্রহ করে ফটোসেশন বন্ধ করে বিপদে পড়া মানুষগুলোর পাশে দাঁড়ান। যিনি খাবার পানি নিচ্ছেন, তার ছবি তুলবেন না।”
স্থানীয় অনেকেই ত্রাণ দেওয়ার নাম করে সেখানে টিকটকার, ভিডিও করে ‘ভিউ কামানোর ধান্দা’র সমালোচনা করছেন।
স্বপন মোল্লা নামের একজন বললেন, “অনেকে রাস্তার পাশে ট্রাক থামিয়ে লোকজন জড়ো করে ত্রাণের নামে মশকরা শুরু করেছে। মূল সড়ক থেকে অন্তত দুই কিলোমিটার ভেতরে এখনও বুকসমান পানি এখনও। ছাদে আশ্রয় নেওয়া মানুষ ক্ষুধার্ত। পানিতে ভাসছে মুরগী, দুর্গন্ধ চরমে।”
ওই এলাকা বাসিন্দারাা বলছেন, এমন বন্যার মুখে তারা কখনও পড়েননি, ফলে ত্রাণ নেওয়ার অভিজ্ঞতাও কারও নেই। ফলে লজ্জায় অনেকে হাত পাততেও পারছেন না।
ত্রাণ বিতরণ যাওয়াদের উদ্দেশে আদিত্য বলেন, “সড়কের পাশে ছুড়ে ফেলে নয়, ভাই বন্ধু মনে করে খাবার-বিশুদ্ধ পানি দিয়ে আসুন। গ্রামের দালান কোঠাগুলোতেও যান। ওইসব বাসার বাসিন্দারা কোনোরকম খেয়ে না খেয়ে আছে। অনেক ঘরে ছোট ছোট মাসুম বাচ্চা কাঁদছে দুধের অভাবে। ওইসব ঘরের মানুষ বলবে না যে খাবার দিয়ে যান।”