বাংলাদেশে বৃষ্টিপ্রবণ মাস ধরা হয় শ্রাবণকে। সেই শ্রাবণ বিদায় নিয়েছে সাত দিন আগে। কিন্তু ভাদ্রের শুরুতেই ভারি বৃষ্টি দেখছে বাংলাদেশ। তারমধ্যে সিলেট, কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী, চট্টগ্রামে দেখা দিয়েছে বন্যা।
উজানের ঢলে সিলেটে বন্যা দেখা গেলেও কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালীতে এমন বন্যা নিকট অতীতে দেখা যায়নি।
তাহলে কেন এখন এমন বন্যা দেখা দিল? সেই আলোচনা চলছে ব্যাপকভাবে। বিশেষজ্ঞরা অবশ্য বলছেন, সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর মধ্যে পাহাড়ি ঢল আর সাগরে লঘুচাপ এই বন্যাকে ভয়ঙ্কর রূপ দিয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, মৌসুমি বায়ুর অক্ষের বর্ধিতাংশ ভারতের পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ থেকে বাংলাদেশের ওপর দিয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে। বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরের মাঝারি থেকে প্রবল অবস্থায় রয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, মৌসুমি বায়ুর প্রভাব ছাড়াও বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ ও পূর্ণিমা, এই দুটি বন্যাকে মারাত্মক রূপ দিয়েছে।
তিনি জানান, উত্তর বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি দুর্বল হয়ে গেলেও সমতলে এসে গতিপথ পরিবর্তন করে। বাংলাদেশের মধ্যঞ্চলে এসে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ হয়ে বিহারের দিকে যাওয়ার কথা ছিল। সেটি না হয়ে লঘুচাপটি চলে গেছে আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরার দিকে।
উদয় রায়হান বলেন, আগস্টের ১৯ তারিখ থেকে লঘুচাপ ও মৌসুমি বায়ুর কারণে উত্তর-পূর্ব ভারত ও এর পাশের বাংলাদেশ অংশে সিলেট, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, ফেনীতে অতি ভারি বৃষ্টি ঝরাচ্ছে। এসব অঞ্চলে পাহাড়ি ঢলে পানির স্রোত আরও তীব্র হয়েছে।
বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চল ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে নদীগুলো এসেছে ভারত থেকে। সেখানে ত্রিপুরা রাজ্য প্রবল বৃষ্টিপাতে বিপর্যস্ত। ফলে গোমতী, ফেনী ও মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে। এই নদীগুলোর মধ্যে গোমতীর পানি মেঘনা হয়ে, ফেনী ও মুহুরীর পানি সরাসরি বঙ্গোপসাগরে যাওয়ার কথা।
পাহাড়ি ঢলের পানি নদীতে এসেও দ্রুত সরতে পারছে না কেন- সেই ব্যাখ্যায় প্রকৌশলী উদয় বলেন, “লঘুচাপ সমতলে ওঠার আগে দীর্ঘ সময় বঙ্গোপসাগরে স্থির ছিল। তাই সাগরের পানির উচ্চতা বেশি রয়েছে। আবার ক’দিন আগে ভরা পূর্ণিমা ছিল। পূর্ণিমা তিথির জন্য উপকূল অঞ্চলে নদী-খালগুলোয় স্বাভাবিকের চেয়ে এখন বেশি জোয়ার হচ্ছে। সবকিছুর মিলিত প্রভাবে বন্যা ভয়াবহ হয়েছে।”
বৃষ্টিপাত কতটা
বাংলাদেশে মধ্য জুন থেকে মধ্য আগস্ট পর্যন্ত মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টি হয়। এর মধ্যে জুন মাসে বৃষ্টির পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। মৌসুমি বায়ুর প্রভাব থাকে জুন মাসে প্রথম সপ্তাহ থেকে সেপ্টেম্বর মাসের শেষ অবধি।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, এবার ভাদ্র মাসে মৌসুমি বায়ুর সক্রিয়তা আষাঢ়-শ্রবাণের চেয়ে বেশি।
চট্টগ্রাম এবং সিলেট বিভাগের পুরোটা অংশজুড়েই ভারি থেকে অতিভারি বৃষ্টির খবর দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
বৃহস্পতিবার ৬টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে কক্সবাজারে, ২৭৫ মিলি মিটার। এছাড়া রাঙ্গামাটিতে ১৫৩ মিলি মিটার, চট্টগ্রামে ১৫২ মিলি মিটার, কুমিল্লায় ১৯৪ মিলি মিটার, চাঁদপুরে ১১০ মিলি মিটার, নোয়াখালীতে ৮০ মিলি মিটার বৃষ্টি রেকর্ড হয়েছে।
আগের ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত ছিল কুমিল্লায় ১৮৮ মিলিমিটার। তখন চাঁদপুরে ১৪০, নোয়াখালীতে ১৪৭, কক্সবাজারে ১৬২, চট্টগ্রামে ৮৯ মিলি মিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।
বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ভারতের ত্রিপুরা, আসাম, মেঘালয় রাজ্যের বৃষ্টির পরিমাণ আরও বেশি ছিল। বৃহস্পতিবার সকার পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় ত্রিপুরার সুনামুরায় ২৬৯ মিলিমিটার এবং আগরতলায় ২৩৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। ফেনী সীমান্তবর্তী বিলোনিয়ায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল ২৪২ মিলিমিটার। বন্যায় ত্রিপুরায় ১০ জনের মৃত্যুর খবরও এসেছে।
ত্রিপুরা থেকে বাংলাদেশে আসা বড় নদীগুলোর মধ্যে রয়েছে গোমতী, মুহুরী ও ফেনী। গোমতী ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও কুমিল্লায় এবং মুহুরী ও ফেনী নদী ফেনী জেলা দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকেছে। উজান থেকে আসা পানিতে এই নদীগুলো এখন বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে।
বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, গোমতী, ফেনী, মুহুরী পাশাপাশি হালদা, কুশিয়ারা, মনু, ধলাই ও খোয়াই নদী বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে।
ফেনী নদী রামগড়ে বিপৎসীমার ২১৮ সেন্টি মিটার ওপর দিয়ে, গোমতী কুমিল্লায় বিপৎসীমার ৭৭ সেন্টি মিটার ওপর দিয়ে, খোয়াই হবিগঞ্জে বিপৎসীমার ২৭৬ সেন্টি মিটার ওপর দিয়ে, মনু মৌলভীবাজারে বিপৎসীমার ১১৫ সেন্টি মিটার ওপর দিয়ে, কুশিয়ারা সিলেটের অমলশীদে বিপৎসীমার ২৩ সেন্টি মিটার ওপর দিয়ে বইছে।
কুমিল্লা, ফেনী, চট্টগ্রাম, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার এই পাঁচটি জেলাকে এখন বন্যাকবলিত বলে দেখাচ্ছে বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্র। এ্ হিসাবে নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর না থাকলেও সেখানেও জেলা শহর, মহাসড়কসহ অনেক এলাকা এখন পানির নিচে।
তবে আগামী ২৪ ঘণ্টায় বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে ভারি বৃষ্টিপাত কমে আসার আভাস দিয়েছে বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
পানি কমে গেলেও বন্যার ক্ষতির প্রভাব হবে দীর্ঘস্থায়ী- সেকথা জানিয়ে প্রকৌশলী উদয় বলেন, শুক্রবার থেকে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি দেখা যাবে। শনিবার ও রবিবার বন্যার পরিস্থিতির ব্যাপক উন্নতি হতে পারে। তবে আকস্মিক এই ভয়াবহ বন্যায় ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রামে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
ত্রিপুরার বাঁধের কী প্রভাব
আকিস্মক এই বন্যার কারণ হিসেবে ত্রিপুরা রাজ্যের ডুম্বুর বাঁধের জলকপাট খুলে দেওয়াকে কারণ হিসাবে দেখিয়ে বেশ আলোচনা চলছে সোশাল মিডিয়ায়।
এর পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, “ত্রিপুরার গোমতি নদীর ওপর ডুম্বুর বাঁধ খুলে দেওয়ার কারণে বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্তের জেলাগুলোতে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে বাংলাদেশে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। এটি তথ্যগতভাবে সঠিক নয়।
“আমরা উল্লেখ করতে চাই, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত গোমতি নদী ও আশপাশের বিস্তৃত এলাকাজুড়ে গত কয়েক দিনে এই বছরের সবচেয়ে ভারি বৃষ্টি হয়েছে। এই বিস্তৃত এলাকার পানি বাঁধের নিচের দিকে প্রবাহিত হওয়ার কারণে প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশে বন্যা দেখা দিয়েছে।”
সচিবালয়ে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা উপদেষ্টা ফারুক-ই আযমকেও সাংবাদিকরা এনিয়ে প্রশ্ন করেন।
তিনি তখন বলেন, “এটার বিষয়ে যোগাযোগ হচ্ছে। সঠিকভাবে এ বিষয়ে এখন বলতে পারছি না এবং এটা শুনেছি উপরে বাঁধ খুলে দেওয়া হয়েছে। সরকারিভাবে বিস্তারিত জানি না। বাঁধ খোলা হয়েছে, এটা পত্র-পত্রিকায় লিখেছে, বিভিন্ন মাধ্যমে আসছে। সরকারিভাবে ভারতের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা হচ্ছে।”
রাঙ্গামাটি ও কক্সবাজারে দুজনের মৃত্যু
রাঙ্গামাটির নানিয়ারচর উপজেলায় চেঙ্গী নদীতে ডুবে শ্রেষ্ঠ চাকমা (৩) নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকালে উপজেলার বুড়িঘাট ইউনিয়নের কুকুর মারা এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। শ্রেষ্ঠ চাকমা ওই এলাকার বাসিন্দা পেশায় সিএনজি অটোরিকশা চালক মৃদুল চাকমার ছেলে।
কক্সবাজারে স্রোতে ভেসে মারা গেছেন এক যুবক। নিখোঁজ রয়েছে আরও ২ জন। বৃহস্পতিবার দুপুরে রামু উপজেলার ঈদগড়ে পানিতে ডুবে মারা যান রাখাইন ওই যুবক।
এছাড়া গর্জনিয়ায় উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের স্রোতে দুই যুবক ভেসে গেছে বলে জানিয়েছেন রামু থানার ওসি মো. আবু তাহের দেওয়ান।
মৃতের নাম জানা যায়নি। নিখোঁজরা হলেন- গর্জনিয়া ইউনিয়নের পূর্বজুমছড়ি গ্রামের ছৈয়দ হোসেনের ছেলে আমজাদ হোসেন (২২) এবং নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার দোছড়ি ইউনিয়নের ছালেহ আহমদের ছেলে রবিউল আলম (৩৫)।
গর্জনিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আবদুল জব্বার জানান, বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে বাড়িঘর, রাস্তাঘাট, ফসলি জমি। গর্জনিয়া, কচ্ছপিয়া, কাউয়ারখোপ ও জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নের অন্তত ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে।
বৃষ্টিতে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের পানিতে প্লাবিত হয়ে যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। একই সঙ্গে উখিয়া ও টেকনাফের ১০ গ্রামের মানুষ পানিবন্দি রয়েছে।
মৌলভীবাজার-হবিগঞ্জে কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দি
অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে মৌলভীবাজারে মনু ও ধলাই এবং হবিগঞ্জে খোয়াই নদীর বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা। সিলেট ও সুনামগঞ্জে প্রতিটি নদীর পানি বাড়ছে।
হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, সদর, মাধবপুর, শায়েস্তাগঞ্জ, চুনারুঘাট ও নবীগঞ্জ উপজেলার ২২টি ইউনিয়নে পানিবন্দি মানুষের সংখ্যা ৩৩ হাজার ৪৬৮ জন।
হবিগঞ্জের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক প্রভাংশু সোম মহান সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, ইতোমধ্যে ১১৬টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। বন্যা দুর্গতদের জন্য ৯৬৫ মেট্রিক টন চাল, ১৫৬০ প্যাকেট শুকনো খাবার ও ২৩ লাখ ২৭ হাজার ৫০০ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ, কুলাউড়া, রাজনগর, জুড়ী, বড়লেখা ও সদর উপজেলায় অন্তত ৩ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
বৃহস্পতিবার ভোরে জেলার রাজনগর উপজেলার কদমহাটা এলাকায় মনু নদীর বন্যা প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়ে। ফলে বন্ধ হয়ে পড়েছে মৌলভীবাজার-রাজনগর-ফেঞ্চুগঞ্জ এবং মৌলভীবাজার-কুলাউড়া-বড়লেখা সড়কে যান চলাচল।
জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, সাত উপজেলায় বন্যাক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ১ লাখ ২২ হাজার ৬৮৭ জন এবং ১৬টি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে ৪ হাজার ৩২৫ জন।
২৬০ জনকে উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস
বন্যা দুর্গত এলাকায় উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স। তাদের নিয়মিত কর্মীদের সঙ্গে রয়েছেন স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকরাও।
২১ আগস্ট থেকে ২২ আগস্ট বিকাল পর্যন্ত দুর্গত এলাকার বিভিন্ন স্থানে আটকে পড়া ২৬০ জন নারী-পুরুষ ও শিশুকে উদ্ধার করে নিরাপদ আশ্রয়ে স্থানান্তর করা হয়েছে বলে ফায়ার সার্ভিস জানায়।
ফায়ার সার্ভিস মিডিয়া সেলের প্রধান মো. শাহজাহান জানান, এদের মধ্যে ১৩৯ জন পুরুষ, ৯৯ জন নারী (যাদের মধ্যে ২ জন গর্ভবতী) ও ২২টি শিশু।
ফায়ার সার্ভিসের সেবা গ্রহণের জন্য হটলাইন নম্বর ১০২ এবং নিয়ন্ত্রণ কক্ষের নিয়মিত নম্বর ০২২২৩৩৫৫৫৫৫ চালু রয়েছে। পাশাপাশি সার্বক্ষণিক যোগাযোগের জন্য মনিটরিং সেলের ০১৭১৩-০৩৮১৮১ মোবাইল নম্বরে বা জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এও কল করা যাবে।
স্বাস্থ্য বিভাগের ৮ নির্দেশনা
বন্যাকবলিত এলাকার জন্য আটটি নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সেখানে কন্ট্রোল রুম, চিকিৎসা সরঞ্জামানাদি, প্রয়োজনীয় ওষুধ, অ্যাম্বুলেন্সসহ সবকিছু প্রস্তুত রাখার জন্য বলা হয়েছে।
আট নির্দেশনায় বলা হয়েছে, বন্যাকবলিত এলাকার সব সিভিল সার্জন এবং উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা কার্যালয়ে সার্বক্ষণিক কন্ট্রোল রুম চালু রাখতে হবে, প্রাথমিক চিকিৎসা সরঞ্জামাদিসহ মেডিকেল টিম গঠন করে দুর্যোগ মোকাবেলায় সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রাখতে হবে।
দুর্গত জেলাগুলোর চিকিৎসক, নার্সসহ সব কর্মকর্তা-কর্মচারী বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) এর অনুমতি ছাড়া কর্মস্থল ছাড়তে পারবে না।
বন্যাকবলিত এলাকায় প্রতিটি স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানে সম্ভাব্য স্বাস্থ্য ঝুঁকি ডায়রিয়া, সর্প দংশনসহ বন্যা সংক্রান্ত অন্যান্য রোগের চিকিৎসার জন্য যথাপোযুক্ত প্রস্তুতি রাখতে হবে। প্রচুর পরিমাণে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, খাবার স্যালাইন, অ্যান্টি ভেনম ইত্যাদি মজুদ রাখতে হবে।
দুর্গত হাসপাতালসমূহে যন্ত্রপাতিগুলো যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেজন্য উঁচু স্থানে সংরক্ষণ করতে হবে। জরুরি ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সামগ্রী মজুদ এবং প্রাথমিক চিকিৎসা সামগ্রীসহ অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রাখতে হবে।
চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে ৪০টি উপজেলার ২৬০টি ইউনিয়ন এখন বন্যাক্রান্ত জানিয়ে এসব এলাকায় ১ হাজার ১৯৬টি মেডিকেল টিম কাজ করছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
অধিদপ্তরে বন্যা বিষয়ক কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে (মোবাইল নং ০১৭৫৯১১৪৪৮৮) যার মাধ্যমে দেশের সব স্বাস্থ্য স্থাপনা সার্বক্ষণিক সংযুক্ত আছে বলে জানানো হয়।
[এই প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়েছেন সকাল সন্ধ্যার সিলেট ও কক্সবাজারের আঞ্চলিক প্রতিবেদক]