Beta
শনিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২৪
Beta
শনিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২৪

সিলেটে বন্যার উন্নতি, আশ্রয়কেন্দ্র ছাড়ছে মানুষ

পানি নেমে যাওয়ার পর ঘরবাড়িতে ফিরতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
পানি নেমে যাওয়ার পর ঘরবাড়িতে ফিরতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
[publishpress_authors_box]

বৃষ্টি কম হচ্ছে সিলেট অঞ্চলে, সেইসঙ্গে কমতে শুরু করেছে নদীর পানিও। সুরমা, কুশিয়ারা, মনু, ধলাই, খোয়াইসহ সবকটি নদীর পানি কমেছে। ফলে উন্নতি হয়েছে বন্যা পরিস্থিতির।

তবে বন্যার পর এবার কিছু এলাকায় দেখা দিয়েছে নদী ভাঙ্গন। পানি নেমে যাওয়ার পর দুর্গত এলাকাগুলোয় দেখা দিয়েছে পানিবাহিত নানা রোগ। ভেসে উঠতে শুরু করেছে বন্যার ক্ষয়ক্ষতির চিত্র। পরিস্থিতি মোকাবেলায় কাজ শুরু করেছে প্রশাসন।

সিলেট

পানি উন্নয়ন বোর্ডের মঙ্গলবার বিকাল ৩টার তথ্য অনুযায়ী, সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল, যা গতকাল বইছিল ২১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে।

কুশিয়ারা নদীর পানি ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৯৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, যা সোমবার একই সময়ে বইছিল বিপৎসীমার ৯৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে। জকিগঞ্জের অমলসিদ পয়েন্টে কুশিয়ারা নদীর পানি বিপৎসীমার ২১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে বইছে, তবে বিয়ানীবাজারের শেওলায় একই নদীর পানি বিপৎসীমার বেশ নিচ দিয়েই প্রবাহিত হচ্ছে।

সিলেট আবহাওয়া অফিস বলছে, মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে বৃষ্টি হয়েছে ৪ দশমিক ১ মিলিমিটার। মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত সিলেটে বৃষ্টি হয়েছে ৫১ মিলিমিটার।

নগরীতে এখনও বন্যাকবলিত অবস্থায় রয়েছেন দুটি ওয়ার্ডের অন্তত ৩০০ মানুষ। আশ্রয়কেন্দ্রে আছেন ২০০ জন।

সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “নগর এলাকা থেকে বন্যার পানি নেমে যাওয়ায় এখন আমরা বন্যা পুর্নবাসনের কাজ শুরু করেছি। গতকাল রাতেও সিটি করপোরেশনের শাখা প্রধান ও কাউন্সিলরদের নিয়ে সভা করেছি। উপদ্রুত এলাকা থেকে  পানি নেমে যাওয়ায় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম জোরেশোরে  চলছে। তাছাড়া ছড়া খনন, ছড়া উদ্ধার, নদী খনন ও সুরমা নদীর উভয় তীরে  নগর রক্ষা বাঁধ নির্মাণের জন্য প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু করেছি।”

প্রশাসনের পক্ষ থেকে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে ত্রাণসামগ্রী। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
প্রশাসনের পক্ষ থেকে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে ত্রাণসামগ্রী। ছবি : সকাল সন্ধ্যা

পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ জানিয়েছেন, সুরমা ও কুশিয়ারার পানি ধীরগতিতে নামছে। নীচের দিকে প্রায় সব এলাকা প্লাবিত থাকায় এই ধীরগতি। উজানের পানি না আসায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে।

জেলার ১৩টি উপজেলার বেশিরভাগ ইউনিয়নই বন্যা কবলিত হয়েছিল।

জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান সকাল সন্ধ্যাকে বলেছেন, বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় গত তিন দিনে প্রায় ২০ হাজার মানুষ আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়ে নিজের বাড়িতে ফিরে গেছেন। উপদ্রুত এলাকায় রান্না করা খাবারের পাশাপাশি ত্রাণসামগ্রীও বিতরণ করা হচ্ছে।

সুনামগঞ্জ

সুনামগঞ্জেও বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। সুরমা, যাদুকাটা, কালনী, নলজুরসহ সবকটি নদীর পানি কমছে। শহরের বেশির ভাগ এলাকা থেকে বন্যার পানি নেমে গেছে। বন্যার কারণে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় জ্বর ও ডায়রিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি হাওর এলাকার মানুষের মধ্যে সাপ আতংক দেখা দিয়েছে।

সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ( সার্বিক) মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানিয়েছেন, গত তিন দিনে বাড়ি ফিরেছেন প্রায় ১২ হাজার মানুষ।

মৌলভীবাজার

মৌলভীবাজারে মনু, ধলাই, কুশিয়ারা নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। তবে জুড়ি নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

মৌলভীবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ( সার্বিক) মো.আব্দুস সালাম চৌধুরী জানিয়েছেন, আশ্রয়কেন্দ্রগুলোয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুকনো খাবার ও রান্না করা খাবার বিতরণ করা হচ্ছে। কাজ করছে ৬৮টি মেডিকেল টিম।

হবিগঞ্জ

হবিগঞ্জে খোয়াই নদীর পানি প্রতিটি পয়েন্টে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কুশিয়ারার পানিও শেরপুর পয়েন্টে বিপৎসীমার নিচে রয়েছে। সব মিলিয়ে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে।

জেলা প্রশাসন থেকে প্রাপ্ত সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, নবীগঞ্জ, বাহুবল ও আজমিরীগঞ্জ উপজেলায় ৬২৩ পরিবার পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক প্রভাংশু সোম মহান সকাল সন্ধ্যাকে জানিয়েছে, এরই মধ্যে ৫১০ মেট্রিকটন চাল ও ২ হাজার ৩০০ প্যাকেট শুকনো খাবার উপজেলাগুলোয় উপবরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত