কক্সবাজারের সংরক্ষিত জায়গায় ফুটবল ট্রেনিং সেন্টার নির্মাণ নিয়ে শুরু থেকেই পরিবেশবাদী সংগঠন প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিল। সেটা আমলে নেয়নি বাফুফে। চূড়ান্ত করেছিল রামু উপজেলার খুনিয়াপালংয়ে ফিফার অর্থায়নে তারা ট্রেনিং সেন্টার করবে। এই প্রকল্প রোববার বাতিল করে দিয়েছে অন্তর্বতীকালীন সরকার।
যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রণালয়ের এই আদেশ কক্সবাজার জেলা প্রশাসক ও বাফুফেকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছেন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব।
বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান কক্সবাজারে বাফুফের ট্রেনিং সেন্টারের স্থান সম্পর্কে বলেন, “এটি ছিল সংরক্ষিত বন যা কেবল রিজার্ভ ফরেস্ট, সরকার প্রধান ডিরিজার্ভ করতে পারেন। বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় সরকার প্রধানকে লিখেছে যেন তিনি ডিরিজার্ভ করার আগের আদেশটি প্রত্যাহার করেন। পাশাপাশি যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করা হয়েছে বিকল্প একটি স্থান বেছে নেওয়ার। সেই মোতাবেক যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় থেকে বিকল্প জায়গা বেছে নেয়ার চিঠি দেয়া হয়েছে।”
ফিফার অর্থায়নে ফুটবল সেন্টার করতে ২০২২ সালে রামুর গহীন বনে ২০ একর জমি বাফুফেকে দিয়েছিল আওয়ামীলীগ সরকার। ওই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বন অধিদপ্তর সংরক্ষিত জমি ক্রীড়া মন্ত্রণালয়কে হস্তান্তরও করেছিল যা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের মাধ্যমে বুঝে পায় বাফুফে।
ওখানে ফুটবল ট্রেনিং সেন্টারের জন্য বাফুফে ৩.৩ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ৩৬ কোটি টাকা) পাবে ফিফার কাছ থেকে। যেহেতু বনের জায়গা এবং পরিবেশগত ঝামেলা ছিল, তাই ফিফা বাফুফের কাছ থেকে পরিবেশ সমীক্ষার প্রতিবেদন চেয়েছিল। বাফুফে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ দলের মাধ্যমে প্রায় ৩০ লাখ টাকা খরচ করে এই প্রতিবেদন পাঠায় ফিফার কাছে।
কিন্তু তাদের সেই উদ্যোগ ভেস্তে দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ বাফুফেকে বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছে। রামুতে রশিদনগর ইউনিয়নের ধলিরছড়া মৌজার পরিত্যক্ত প্রায় ১৯.১ একর জায়গায় ট্রেনিং সেন্টার করতে পারে বাফুফে।
বাফুফের সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষার জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের চিঠির প্রসঙ্গে বলেন, “সরকার আমাদের জায়গা দিয়েছিল, বাতিল করার এখতিয়ারও তাদের। ফুটবল উন্নয়নের জন্য ট্রেনিং সেন্টার নির্মাণ প্রয়োজন। আমাদের অনুরোধ থাকবে ঢাকার নিকটবর্তী কোনও জায়গায় যেন খাস জমি বিকল্প হিসেবে বাফুফেকে দেওয়া হয়।”