Beta
বৃহস্পতিবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০২৪
Beta
বৃহস্পতিবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০২৪

আমির হোসেন আমু রিমান্ডে

আমির হোসেন আমু
গত ৬ নভেম্বর গ্রেপ্তার করার পরদিন আমির হোসেন আমুকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। ফাইল ছবি : সকাল সন্ধ্যা
[publishpress_authors_box]

ঢাকার নিউমার্কেট এলাকায় ব্যবসায়ী আব্দুল ওয়াদুদ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমুকে ছয় দিন হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি পেয়েছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার আমির হোসেন আমুকে আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের রমনা জোনাল টিমের পুলিশ পরিদর্শক জাহাঙ্গীর আরিপ।

অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা রিমান্ড আবেদন বাতিলের পাশাপাশি আসামির জামিনের আবেদন করেন।

উভয়পক্ষের আবেদনের শুনানি শেষে দুপুরে ঢাকার মহানগর হাকিম শাহিন রেজার আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ড আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন।

বুধবার ঢাকার ধানমন্ডি এলাকা থেকে আমির হোসেন আমুকে গ্রেপ্তার করার কথা জানায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ১৯ জুলাই বিকালে ঢাকার নিউমার্কেট থানাধীন নীলক্ষেত এলাকায় পুলিশের গুলিতে ব্যবসায়ী আব্দুল ওয়াদুদ মারা যান। এ ঘটনায় তার শ্যালক আব্দুর রহমান বাদী হয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ ১৩০ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।

ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের সরকার পতন হলে দলটির সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন স্থানে মামলা হতে শুরু করে। এসব মামলার অনেকগুলোতে শেখ হাসিনার সঙ্গে আসামি করা হয়েছে আমির হোসেন আমুকেও।

১৯৭৩ সালের প্রথম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে বাকেরগঞ্জ-৭ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আমির হোসেন আমু। ২০০০ সালে ঝালকাঠি-২ আসনের উপনির্বাচনেও বিজয়ী হয়ে সংসদ সদস্য হয়েছিলেন তিনি।

এরপর নবম জাতীয় সংসদ থেকে সর্বশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদেরও নির্বাচিত সদস্য ছিলেন আমির হোসেন আমু।

শেখ হাসিনার প্রধানমন্ত্রীত্বে আওয়ামী লীগের প্রথম দফার সরকারে স্বল্প মেয়াদে খাদ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন আমু। পরে আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় দফার সরকারেও স্বল্প মেয়াদে ভূমি এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ টানা দ্বিতীয়বারের মতো সরকার গঠন করার পর শিল্পমন্ত্রীর দায়িত্ব পান আমু।

একাদশ ও দাদ্বশ সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ আরও দুই দফায় সরকার গঠন করলেও মন্ত্রিসভায় আর জায়গা হয়নি আমুর। তবে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের মুখপাত্রের দায়িত্বে ছিলেন তিনি।

আমুর আইনজীবীকে মেরে আদালত থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ

আদালতে আমুর বিরুদ্ধে করা রিমান্ড আবেদনের বিরোধিতা করে শুনানি করার সময় তার আইনজীবী স্বপন রায় চৌধুরীকে মারধর করে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

জানা যায়, রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ড আবেদনের পক্ষে শুনানিতে নিজের বক্তব্য উপস্থাপনের পর তার বক্তব্যকে ‘রাজনৈতিক’ বলে মন্তব্য করেন আমুর আইনজীবী স্বপন। এ সময় একদল আইনজীবী বিচারকের সামনেই স্বপন রায় চৌধুরীকে মারধর শুরু করেন। পরে ধাক্কা দিয়ে আদালত থেকে তাকে বের করে দেন ওই আইনজীবীরা।

পরে স্বপন রায় চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, “আদালত চলাকালে আমাকে মারধর করে আদালত থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আদালত কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।”

আদালতে ন্যায়বিচার নেই দাবি করে তিনি বলেন, “এখানে ন্যায়বিচার নেই। আমি বিচার চাই।”

আদালতে যা বললেন আমু

আইনজীবীকে মারধর করে আদালত থেকে বের করে দেওয়ার পর আমু নিজেই আদালতে কথা বলেন।

তিনি বলেন, “আমি ঢাকা বারের সদস্য, হাইকোর্ট বারের সদস্য। এখানকার পরিবেশ দেখে দুঃখিত। এই পরিবেশে কিছু বলা উচিত না। মামলা চলবে, ভবিষ্যতে আমি আমার বক্তব্য উপস্থাপন করব।

“রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অনেক কথা বলেছেন। আমি একজন রাজনিতিবিদ। রাজনৈতিক বক্তব্য দিতে গেলে দুই ঘণ্টা লেগে যাবে।”

আমু বলেন, “আমরা একে অপরের ভাই ভাই। মিলে-মিশে থাকা উচিত। আমরা এক সাথে থাকব। কেন দ্বন্দ্বে জড়াব? আশা করছি, এ পরিবেশ থাকবে না।”

তখন বিএনপির আইনজীবীরা চিৎকার শুরু করেন। তারা বলেন, “তিনি ভয় দেখাচ্ছেন।” তখন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী তাদের শান্ত করেন।

পরে আমু বলেন, “আমরা যার যার পক্ষ অবলম্বন করব। নিজেরা নিজেরা কেন দ্বন্দ্বে জড়াব।”

এরপর ওমর ফারুক বলেন, “যখন তিনি ক্ষমতায় ছিলেন তখন কি খবর নিয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্ট, ঢাকা বারের। নির্বাচনের সময় সিল মেরে ভোট নিয়ে গেছে, আইনজীবীদের মারধর করেছে, তখন তিনি কী ভূমিকা নিয়েছিলেন?”

পরে আমু বলেন, “প্রথমবার যখন গোলমাল হয় আমি এর বিরোধিতা করি। ভোট দিতে আসিনি, বয়কট করেছি।”

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত