ব্যক্তিগত বিমানে করে হঠাৎ দেশ ছেড়েছেন থাইল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রা। চিকিৎসার জন্য এই যাত্রা, তিনি এমন দাবি করলেও ধারণা করা হচ্ছে, কারাগারে এড়াতেই দেশ ছেড়েছেন তিনি।
আর কয়েকদিন পরই থাকসিনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মামলার রায় দেওয়ার কথা রয়েছে আদালতের। ধারণা করা হচ্ছে, সেই রায়ে তার কারাদণ্ডও হতে পারে তার।
বৃহস্পতিবার দেশ ছাড়েন ৭৬ বছর বয়সী থাকসিন সিনাওয়াত্রা, তার একদিন পর শুক্রবার নতুন প্রধানমন্ত্রী বেছে নেওয়ার কথা রয়েছে দেশটির পার্লামেন্টের , গঠন করার কথা নতুন সরকার।
২০০১ সালে প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন থাকসিন সিনাওয়াত্রা। এরপর ২০০৫ সালে তিনি পুনর্নির্বাচিত হন। তবে ক্ষমতার দ্বিতীয় মেয়াদ এক বছর হওয়ার আগেই ২০০৬ সালে সেনা অভ্যুত্থানে ক্ষমতা ছাড়তে হয় তাকে। সেসময় তিনি পালিয়ে গিয়েছিলেন লন্ডনে।
২০০৬ সালে দেশত্যাগের পর থাকসিনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে একাধিক মামলা হয়। তার পতনের পরও থাইল্যান্ডের রাজনীতিতে থাকসিন পরিবারের প্রভাব অব্যাহত থাকে। তখন থেকে এ পর্যন্ত প্রায় সবগুলো নির্বাচনে তার জোট জয় লাভ করে।
২০২৩ সালে তার মেয়ে পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর এসব মামলার বিচার প্রক্রিয়া স্থগিত হয়ে যায়। সেই সুযোগে তিনি দেশে ফিরে আসেন।
তবে গত আগস্টে আদালতের আদেশে পেতংতার্নকে পদত্যাগ করতে হওয়ায় থাকসিনের দেশে থাকাও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছিল।
শুক্রবার সকালে এক ফেইসবুক পোস্টে থাকসিন লিখেছেন, ‘চিকিৎসার জন্য’ সিঙ্গাপুর যাচ্ছিলেন, কিন্তু থাই ইমিগ্রেশনে তাকে কয়েক ঘণ্টা আটকে রাখা হয়।
পরে অবশ্য থাকসিনকে ছেড়ে দিয়ে পুলিশ জানায়, তার দেশত্যাগে আদালতের কোনও নিষেধাজ্ঞা ছিল না।
হাজার হাজার থাই নাগরিক ফ্লাইট ট্র্যাকার অ্যাপে থাকসিনের বিমানের গতিপথ অনুসরণ করছিল। তাতে দেখা যায়, থাকসিনের ব্যক্তিগত বিমানটি ব্যাংককের দন মুয়াং বিমানবন্দর থেকে সন্ধ্যা ৭টার পর উড্ডয়ন করে। প্রথমে এটি সিঙ্গাপুরের দিকে গেলেও পরে সেটি দিক পরিবর্তন করে ভারতের দিকে মোড় নেয়।
থাকসিন বলেন, “সিঙ্গাপুরের সেলেটার বিমানবন্দর রাত ১০টার পর বন্ধ হয়ে যায় বলে পাইলট সেখানে নামতে পারেননি, পরে তিনি দুবাই যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। দুবাইয়ে তার নিয়মিত হাড় ও ফুসফুস চিকিৎসক রয়েছেন। বিমানটি দুবাইয়ের অনুমতি না পাওয়া পর্যন্ত আকাশে কিছুক্ষণ চক্কর কাটে।”
আগামী ৯ সেপ্টেম্বর দেশে ফিরে আদালতের রায় শুনতে চান বলেও জানিয়েছেন থাকসিন। তিনি বরাবরই তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করে এসেছেন।
তথ্যসূত্র : সিএনএন



