ইউরোপের দেশ জার্মানি হলো বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানি বাজার। ফ্রান্সেও তৈরি পোশাকের বড় বাজার হয়েছে। এ দুটি দেশের সঙ্গে ব্যবসা আরও বিস্তৃতির বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। দুটি দেশই বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে আগ্রহী।
বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) বাংলাদেশে নিযুক্ত ফ্রান্স ও জার্মানির রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আলাদা বৈঠক শেষে এসব কথা জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
দুপুরে সেগুনবাগিচায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রথমে ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত মেরি ম্যাসদুপুই ও পরে জার্মানির রাষ্ট্রদূত আখিম ট্রোস্টার মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে যান। দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে নির্বাচিত হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পাঠানো ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ও জার্মান চ্যান্সেলরের অভিনন্দন বার্তা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন।
বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, “ফ্রান্স ও জার্মানি বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন অংশীদার। স্বাধীনতার পরপরই যে দেশগুলো আমাদের স্বীকৃতি দিয়েছিল, এই দেশ দু’টি তাদের অন্যতম। বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানি বাজার হচ্ছে জার্মানি। ফ্রান্সও আমাদের রপ্তানি বাণিজ্যের ক্ষেত্রে, বিশেষ করে তৈরি পোশাক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ওপরের দিকে। সম্পর্ক গভীর করতে আমাদের বিজনেস বাস্কেট বিস্তৃত করা নিয়ে আলোচনা করেছি।”
ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে এয়ারবাস কেনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, “ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের সফরে এটি আলোচনা হয়েছিল। আমাদের ইকোনোমি যখন পারমিট করবে তখন আমরা পারব।”
জার্মান রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে কী বিষয়ে আলোচনা হয়েছে জানতে চাইলে হাছান মাহমুদ বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের পর আমাদের যুদ্ধশিশুদের নিয়েছিল জার্মানি। ফ্রান্সও কিছু নিয়েছিল। জার্মানি ওই সময় অনাথ হয়ে যাওয়া শিশুদের ব্যাপক হারে নিয়ে গিয়েছিল। বেশিরভাগ যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাকে চিকিৎসা দিয়েছিল জার্মানি। এ জন্য তাদের ধন্যবাদ জানিয়েছি।”
প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোর সফরে বাংলাদেশের জন্য দ্বিতীয় স্যাটেলাইটের বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছিল। সে প্রসঙ্গে কতটুকু অগ্রগতি হয়েছে তা জানতে চান সাংবাদিকরা।
মন্ত্রী বলেন, “বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ আমাদের একটা অগ্রাধিকার। বিশেষ করে, আবহাওয়া বার্তা পাঠানোর জন্য, নিরাপত্তা ইস্যুতে এটি অত্যন্ত গুরত্বপূর্ণ। এটা নিয়ে সেপ্টেম্বরে এমওইউ হয়েছে। এর মধ্যে আমাদের নির্বাচন ছিল। নিশ্চয়ই কাজটি দ্রুত এগুবে।”
ফেব্রুয়ারিতে মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্সে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জার্মানি যাবেন। সেখানে সাইডলাইনে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের বিষয়ে আলোচনা চলছে বলেও জানান মন্ত্রী।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গ নিয়ে কোনও আলোচনা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “নির্বাচন নিয়ে কোনও আলোচনাই দুই দেশের রাষ্ট্রদূত তোলেননি। বরং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবারও নির্বাচিত হওয়ায় জার্মানির চ্যান্সেলর ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের অভিনন্দন বার্তার হার্ডকপি আমার কাছে পৌঁছে দিয়েছেন তারা।”