অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে করা মামলায় নিজেকে যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতা পরিচয় দেওয়া আলোচিত ঠিকাদার এস এম গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীমকে সাড়ে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
এছাড়া এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে ৬ মাসের কারাদণ্ডের পাশাপাশি জি কে শামীমের ২৯৭ কোটি ৮ লাখ ৯৯ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
এই মামলার আরেক আসামি জি কে শামীমের মা আয়েশা আক্তারের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে বেকসুর খালাস দিয়েছে আদালত।
বৃহস্পতিবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক মো. রবিউল আলম রায়ে এসব নির্দেশ দেন বলে নিশ্চিত করেছেন দুদকের কৌঁসুলি প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম।
আওয়ামী লীগ সরকার আমলে ২০১৯ সালে দেশে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান চলাকালে ঢাকার গুলশানে নিজ কার্যালয় থেকে জি কে শামীমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এরপর গুলশান থানায় তার বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদক এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে তিনটি মামলা হয়।
এছাড়া সে বছরের ২১ অক্টোবর জি কে শামীম ও তার মা আয়েশা আক্তারের বিরুদ্ধে ২৯৭ কোটি ৮ লাখ ৯৯ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করেন দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এর উপপরিচালক মো. সালাহউদ্দিন।
২০২১ সালের ১৭ জানুয়ারি আদালতে এই মামলার অভিযোগপত্র জমা দেন দুদক কর্মকর্তা সালাহউদ্দিন। পরের বছরের ১৮ অক্টোবর তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেয় আদালত।
এই মামলার তদন্তে জি কে শামীমের বিরুদ্ধে ৩০০ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের প্রমাণ পাওয়ার কথা জানায় দুদক।
গ্রেপ্তারের আগে নিজেকে যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতা হিসেবে পরিচয় দিতেন জি কে শামীম। এছাড়া যুবলীগের সমবায়বিষয়ক সম্পাদক ও নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি হিসেবেও পরিচয় দিতেন তিনি।
তবে জি কে শামীমের সঙ্গে কোনও ধরনের সম্পৃক্ততা নেই বলে জানায় আওয়ামী লীগের যুব সংগঠনটি। তবে ওই অভিযানের পর যুবলীগে ব্যাপক পরিবর্তনে নেতৃত্ব বদলে দেওয়া হয়।
জি কে শামীম আলোচিত ছিলেন সাতজন সশস্ত্র দেহরক্ষী নিয়ে চলাফেরার জন্য। ক্ষমতা দেখিয়ে গণপূর্ত অধিদপ্তরের বড় ঠিকাদারী কাজের প্রায় সবই নিজের প্রতিষ্ঠানের দখলে নিতেন তিনি।
২০২২ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর জি কে শামীম ও তার সাত দেহরক্ষীকে অস্ত্র মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ শেখ ছামিদুল ইসলাম।
সাজা পাওয়া তার সাত দেহরক্ষী হলেন মো. জাহিদুল ইসলাম, মো. শহিদুল ইসলাম, মো. কামাল হোসেন, মো. সামসাদ হোসেন, মো. আমিনুল ইসলাম, মো. দেলোয়ার হোসেন ও মো. মুরাদ হোসেন।
এছাড়া অর্থপাচারের মামলায় জি কে শামীমকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয় আদালত।