মিরপুর স্টেডিয়ামের মাঠকর্মীদের সাধারণত জড়ো হয়ে কাজ করতেই দেখা যায় সবসময়। মাঠের কাজ ভিন্ন তাদের জড়ো হওয়ার আরেকটি উপলক্ষ্য আসে ঈদ বোনাসের সময়। কোন ক্রিকেটার ঈদ বোনাস দিলে তারা ভীড় করেন একসঙ্গে। কিন্তু গত বুধবার তাদের ভীড়টা হলো ভিন্ন কারণে।
খেলা না থাকায় মিরপুরের মাঠ নিয়ে খুব বেশি ব্যস্ততা নেই কর্মীদের। পরিচর্যা করাই এখন কাজ। বুধবার কাজ শেষে সবাই এক হয়ে ছুটলেন বিসিবি গ্রাউন্ডস কমিটির রুমে। কারণ, কমিটিতে অভিযোগ করবেন তাদের পাওনা পারিশ্রমিকের ব্যাপারে। অভিযোগ হলো মিরপুরের হেড কিউরেটর গামিনি ডি সিলভা তাদের পাওনা টাকা দিচ্ছেন না।
শ্রীলঙ্কার বংশোদ্ভুত এই কিউরেটরের বিরুদ্ধে সেরা মানের উইকেট না বানানোর অভিযোগ পুরোনো। বিসিবিও ঘরের মাঠের সুবিধা নেওয়ার জন্য সরাসরি গামিনির বিরুদ্ধে ধীর ও নিচু উইকেট বানানোর জন্য কোন ব্যবস্থা নেয় না। এবার এই কিউরেটরের বিরুদ্ধে কর্মীদের অর্থ আটকে রাখার অভিযোগ উঠলো।
মাঠকর্মীদের অভিযোগ আমলে নিয়ে দ্রুতই ব্যবস্থা নিয়েছে বিসিবি। গ্রাউন্ডস কমিটির ম্যানেজার আবদুল বাতেন সকাল সন্ধ্যাকে জানিয়েছেন, “হ্যাঁ, অভিযোগটা সত্য। আমরা মাঠকর্মীদের কাছে ব্যাপারটা জানতে পেরে সঙ্গে সঙ্গে গামিনিকে বলেছি ওদের টাকা দিয়ে দেওয়ার জন্য। সে কালকের মধ্যেই সবার টাকা দিয়ে দিয়েছে।”
বাতেন যোগ করলেন গামিনির মাঠকর্মীদের টাকা দেওয়ার ধরনটা একটু অন্যরকম, “আসলে সে যে টাকা একদমই দেয় না তা নয়। বিসিবি থেকে যে টাকা দেওয়া হয় সেটা সে নিজের কাছে রাখে, প্রতিজন কর্মীর নামে টাকা বেশি জমলে পরে দিয়ে দেয়। মানে জমিয়ে জমিয়ে দেয় আর কি। কালকেই দিয়েছে সবার টাকা।”
মাসের শুরুতে দেশের অস্থিতিশীল অবস্থার কারণে ছুটি নিয়ে শ্রীলঙ্কা চলে গিয়েছিলেন গামিনি। তার ছুটি শেষ হবে ২৭ আগস্ট। মাঝের সময়ে ভিডিও কলের মাধ্যমে মাঠ পরিচর্যার কাজ করছেন এই কিউরেটর। ছুটিতে থাকলে এভাবেই কাজ করেন তিনি।
গামিনির বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় অভিযোগ উইকেট বানানোর বিষয়ে। এক যুগেরও বেশি সময় ধরে মিরপুরের হেড কিউরেটর হিসেবে আছেন। বিসিবি এতদিনেও নতুন কারও কথা ভাবছে না। কিছুদিন আগেই অস্ট্রেলিয়ার প্রসিদ্ধ কিউরেটর টনি হেমিং বিসিবি থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন। মেলবোর্ন, দুবাইয়ের মতো স্টেডিয়ামের পিচ তৈরির অভিজ্ঞতা থাকলেও এই কিউরেটরকে মিরপুরের মাঠে ঢুকতে দেওয়া হতো না।
অথচ সিলেট স্টেডিয়ামের নিচু ও ধীর পিচকে বদলে দারুণ স্পোর্টিং উইকেট করে দিয়েছিলেন হেমিং। সেই টনি হেমিং বিসিবির চাকরি ছেড়ে চলে গিয়েছেন পাকিস্তানে। পিসিবির অধীনে আসন্ন বাংলাদেশ-পাকিস্তান টেস্ট সিরিজের পিচ তৈরি করবেন তিনি।