কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ‘ছাত্র-জনতা হত্যার প্রতিবাদে ও সরকারের পদত্যাগ’ দাবিতে আগামী শুক্রবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন সংস্কৃতিকর্মীরা। সেদিন জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে বিকাল ৩টায় ‘নাগরিক শোক মিছিলের’ মাধ্যমে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে যাওয়ার ঘোষণাও দিয়েছেন তারা।
মঙ্গলবার বিকালে প্রায় দুই ঘণ্টা রাজধানীর গুলিস্তানের জিরো পয়েন্ট থেকে গোলাপশাহ মাজারমুখী সড়ক অবরোধ করে অবস্থানের পর নতুন এ কর্মসূচি ঘোষণার দিয়ে সড়ক ছাড়েন ৩১টি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
বিকাল সোয়া ৩টার দিকে সংস্কৃতিকর্মীরা নূর হোসেন চত্বর থেকে পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্ক অভিমুখে ‘গানের মিছিল’ শুরু করেন। জিপিও মোড়েই পুলিশ বাধা দেয় তাদের। প্রায় ১৫ মিনিট পুলিশের সঙ্গে হাতাহাতি ও বাকবিতণ্ডা হয় সংস্কৃতিকর্মীদের।
বিকাল ৩টা ৪০ মিনিটে তারা গোলাপ শাহ মাজার রোডে দখল করে বসে পড়ার ঘোষণা দেন। সেখানে তারা পুলিশের উদ্দেশে ‘খুনি খুনি’ বলে স্লোগান দেন এবং ‘প্রতিবাদী গান’ গাইতে থাকেন।
সে সময় উদীচীর সহ-সভাপতি জামশেদ আনোয়ার মাইকে ঘোষণা দেন, “যদি আমাদের যেতে না দেওয়া হয় তাহলে এখানেই বসে পড়তে হবে। এখানেই গান করব, কবিতা পড়ব। শহীদদের জন্য কাঁদব, তাদের জন্য হাহাকার করব। আমাদের শহীদরা যে সাহস দেখিয়েছে, সেই সাহসে আমরা প্রতিবাদ করব। যতক্ষণ না স্বৈরাচারের পতন হচ্ছে, ততক্ষণ আমরা লড়াই চালিয়ে যাব।”
এরপর সেখানে ধারাবাহিকভাবে গণসংগীত, কবিতা, বক্তব্য চলতে থাকে। বিকাল সোয়া ৫টার দিকে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে।
তিনি নতুন কর্মসূচি ঘোষণা দিয়ে বলেন, “আমরা আমাদের পূর্বঘোষণা অনুযায়ী শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদী গানের মিছিল নিয়ে পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্কে যাচ্ছিলাম। কিন্তু আমাদের এই অহিংস কর্মসূচিতে পুলিশ নিরাপত্তার অজুহাতে বাধা দেয়।
“তাই আমরা জিরো পয়েন্টেই অবস্থান নিয়ে গানের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানাই। আমরা কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে এবং হত্যার প্রতিবাদে ও বর্তমান সরকারের পদত্যাগের দাবিতে আগামী শুক্রবার বিকাল ৩টায় জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে শহীদ মিনারে শোক মিছিল করব। আমরা নিহতদের স্মরণে সেদিন শহীদ মিনারে ফুলেল শ্রদ্ধাঞ্জলি জানাব।”
সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনারা এখনই পদত্যাগ না করলে ছাত্র-জনতা আপনাদের ক্ষমতা থেকে টেনেহিঁচড়ে নামাবে। তাই সময় থাকতে নিজে থেকে পদত্যাগ করুন।”
বক্তব্য শেষে সংস্কৃতিকর্মীরা মিছিল নিয়ে পল্টন মোড়ে যান। এরপর জিরো পয়েন্ট থেকে গোলাপশাহ মাজারমুখী রাস্তায় যান চলাচল শুরু হয়।