বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫৩ তম বার্ষিকী এবং জাতীয় দিবস উপলক্ষে জর্ডানে নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজন করেছিল অন্যরকম এক ফ্যাশন শো। আম্মানের একটি পাঁচ তারকা হোটেলের মঞ্চে আয়োজিত সেই ফ্যাশন শোয়ে হেঁটেছেন জর্ডানের পোশাক খাতে কর্মরত বাংলাদেশি নারী পোশাককর্মীরা।
গত ৩০ এপ্রিল সন্ধ্যায় আয়োজিত এই ফ্যাশন শো পরিচালনা করেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ডিজাইনার ও মডেল বিবি রাসেল। ‘দ্য ম্যাজিকাল থ্রেডস অব বাংলাদেশ’ শিরোনামের এই ফ্যাশন শো’তে মডেল হিসেবে ছিলেন প্রবাসী বাংলাদেশি ও জর্ডানের নারী পোশাক শ্রমিকরা।
দেশটির পোশাক কারখানাগুলোয় প্রচুর বাংলাদেশি নারী শ্রমিক কাজ করেন। ২০১০ সাল থেকেই ব্যবসায়ীক চুক্তির মাধ্যমে জর্ডানে শ্রমিক রপ্তানি করে বাংলাদেশ। এ পর্যন্ত যত শ্রমিক দেশটিতে গিয়েছেন তার অর্ধেকের বেশিই নারী। যাদের একটি বড় অংশ স্থানীয় পোশাক কারখানায় কর্মরত।
মডেলরা পরেছিলেন সুতি, জামদানি, তাঁতসহ বিভিন্ন ধরনের শাড়ি। ছিল নানা বৈচিত্র্যের আর নকশার পোশাক। বিবি রাসেল মানেই, নকশায় বিচিত্রতা-নিরীক্ষা। আম্মানের এই ফ্যাশন শোও তার ব্যতিক্রম ছিল না। তার পরিচালনায় অপেশাদার মডেলরাও তাই দারুণ আভিজাত্যের সঙ্গে মঞ্চে হেঁটেছেন, তুলে ধরেছেন বাংলাদেশকে।
যা দেখে মুগ্ধ হয়েছেন উপস্থিত দর্শক।
বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জর্ডানের প্রধানমন্ত্রী বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ওয়াজিহ তাইয়েব আজাইজেহ।
উপস্থিত ছিলেন জর্ডানে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, কূটনীতিক, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা এবং প্রটোকল প্রধানসহ জর্ডানের অন্যান্য মন্ত্রণালয়, সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তা, সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।
জর্ডানের বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত নাহিদা সোবহান নিজের বক্তব্যে সাম্প্রতিক বছরগুলোয় বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কথা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, “গার্মেন্টস শিল্পে কর্মরত মেয়েদের বিবি রাসেলের মডেল হিসেবে এমন একটি মর্যাদাপূর্ণ আয়োজনে সম্পৃক্ত করা অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ প্রতিষ্ঠার একটি ক্ষুদ্র প্রয়াস। বাংলাদেশের মানুষের জীবন, উৎসব, আধ্যাত্মিকতা, পোশাক এবং সামাজিক সম্প্রীতির চিত্র এই ফ্যাশন শো’তে প্রতিফলিত হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশকে বিশ্বব্যাপী দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানিকারক হিসেবে গড়ে তোলার পেছনে সুবিধাবঞ্চিত প্রান্তিক জনগোষ্ঠী থেকে উঠে আসা নারী পোশাক শ্রমিকদের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।”
পোশাক শিল্প, ইলেকট্রনিক্স, ফার্মাসিউটিক্যালস, আইটি এবং জাহাজ নির্মাণের মতো বিভিন্ন খাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির ফলে বাংলাদেশ বিশ্ব বাজারে বিশেষ অবস্থান দখল করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “বিনিয়োগ ও বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ এখন উল্লেখযোগ্য গন্তব্য।”