গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের অবরোধের মধ্যে ২০ জন ফিলিস্তিনি না খেতে পেয়ে মারা গেছেন। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল-কুদরা বুধবার এ তথ্য জানিয়েছেন।
এক বিবৃবিতে আশরাফ আল-কুদরা বলেছেন, “গাজার উত্তরাঞ্চলে দুর্ভিক্ষ চরম আকার ধারণ করেছে। বিশেষ করে শিশু, অন্তঃসত্ত্বা নারী ও দীর্ঘস্থায়ী রোগে ভোগা ব্যক্তিরা অনাহারের শিকার হচ্ছেন বেশি।
“আমরা মনে করি, হাসপাতালে পৌঁছার আগেই ক্ষুধার কারণে আরও অনেকে নীরবে মৃত্যুর দিকে ধাবিত হচ্ছে।”
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের বরাতে বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজেন্সি জানিয়েছে, গাজা উপত্যকার উত্তরে আল শিফা-মেডিকেল কমপ্লেক্স ও কামাল আদওয়ান হাসপাতালে বুধবার অপুষ্টি ও পানি শূন্যতায় ১৫ বছরের একটি ছেলে ও ৭২ বছরের এক ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করেন।
গাজার আরও হাজারো মানুষ অনাহারের ঝুঁকিতে আছে বলে সতর্ক করেছেন ফিলিস্তিনের এই কর্মকর্তা। এর পাশাপাশি পরিস্থিতি সামাল দিতে গাজায় অবিলম্বে মানবিক ও চিকিৎসা সহায়তা প্রবেশে বাধা দূর করার ব্যবস্থা নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর কর্মকাণ্ডের তীব্র সমালোচনা করে আল-কুদরা বিবৃতিতে বলেন, “গাজার হাজার হাজার ক্ষুধার্ত মানুষকে জেনেবুঝে ভয়াবহভাবে হত্যা করছে তারা।”
গাজায় মানবিক ও স্বাস্থ্য বিপর্যয় ঠেকাতে জরুরি পদক্ষেপ নিতে জাতিসংঘের কাছে আবেদনও জানান তিনি।
গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান ১৫৩তম দিনে ঠেকেছে। গত বছরের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের হামলার জবাবে এই অভিযান শুরু করে তারা, যা এখনও চলছে।
ইসরায়েলের হামলায় গাজায় এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৩০ হাজার ৭১৭ জন প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন ৭২ হাজার ১৫৬ জন। অন্যদিকে ইসরায়েলে হামাসের হামলায় মারা গেছে ১ হাজার ১৩৯ জন।
গাজায় নির্বিচারে হামলা চালিয়েই ক্ষান্ত হয়নি ইসরায়েল, সেখানে তারা অবরোধও আরোপ করেছে। ফলে বিভিন্ন দেশের ত্রাণ যুদ্ধবিধ্বস্ত ভূখণ্ডে পৌঁছতে পারছে না।
ইসরায়েলের অবরোধ অবধারিতভাবেই গাজার মানুষ বিশেষ করে উত্তর গাজার বাসিন্দাদের অনাহারের দ্বারপ্রান্তে দাঁড় করিয়েছে।
দেশটির সেনাবাহিনীর ক্রমাগত বোমাবর্ষণের ফলে ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছে। ঘরবাড়ি হারিয়ে তারা এখন খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে দিনাতিপাত করছে।
জাতিসংঘের তথ্য বলছে, ইসরায়েলের অভিযানে গাজার ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।