Beta
শুক্রবার, ১৬ মে, ২০২৫
Beta
শুক্রবার, ১৬ মে, ২০২৫

‘নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহের ওপর নির্ভর করছে জিডিপি প্রবৃদ্ধি’

ইআরএফ মিলনায়তনে মঙ্গলবার ‘সামষ্টিক অর্থনীতির দৃষ্টিভঙ্গি এবং রাজস্ব ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক সেমিনার। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
ইআরএফ মিলনায়তনে মঙ্গলবার ‘সামষ্টিক অর্থনীতির দৃষ্টিভঙ্গি এবং রাজস্ব ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক সেমিনার। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
[publishpress_authors_box]

দেশের শিল্প কারখানায় নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি গ্যাস সরবরাহের ওপর জিডিপি প্রবৃদ্ধি নির্ভর করছে বলে মনে করছেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশ এর চেয়ারম্যান ড. মাশরুর রিয়াজ।

মঙ্গলবার রাজধানী ঢাকার পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) মিলনায়তনে এক সেমিনারে এ মন্তব্য করেন তিনি।

‘সামষ্টিক অর্থনীতির দৃষ্টিভঙ্গি এবং রাজস্ব ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক এ সেমিনার শুরু হয় ইআরএফ সভাপতি দৌলত আকতার মালার স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান।

মূল প্রবন্ধে মাশরুর রিয়াজ বলেন, “চলতি অর্থ বছরের শুরু থেকেই রাজনৈতিক অস্থিরতা, আইনশঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ও উচ্চ মূল্যস্ফীতির প্রভাবে দেশের সামষ্টিক অর্থনীতিতে যে স্থবিরতা তৈরি হয়েছে তা কাটিয়ে ওঠার জন্য অভ্যন্তরীণ চাহিদা ও উৎপাদন বৃদ্ধির উদ্যোগ নিতে হবে।”

রপ্তানি বাড়ানোর জন্য উৎপাদন বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়ার পরামর্শও দেন তিনি।

পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশ এর চেয়ারম্যান বলেন, “দেশের শিল্প কারখানায় নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। সম্প্রতি গ্যাসের দাম বৃদ্ধির কারণে যে কথা উঠছে তার চেয়ে জরুরি হচ্ছে সব শিল্পে গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করার মাধ্যমে উৎপাদন বাড়িয়ে রপ্তানি বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে।

“দেশের শিল্প কারখানায় নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করতে পারছেন কি না- তার ওপরে নির্ভর করছে জিডিপি প্রবৃদ্ধি।”

এসময় বিশ্ব ব্যাংক ও আইএমএফ সম্প্রতি বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির যে পূর্বাভাস দিয়েছে তা ইতিহাসে সবচেয়ে কম বলে উল্লেখ করে ড. মাশরুর রিয়াজ।

তিনি বলেন, “১৯৯১ সালের পরের প্রবৃদ্ধি গড় যেখানে ৫ শতাংশের উপরে সেখানে বিশ্ব ব্যাংকের ৩ দশমিক ৩ এবং আইএমএফের ৩ দশমিক ৮ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ‍খুব সুখকর নয়।

“এখন আমাদের প্রবৃদ্ধি কত হলো সে চিন্তা দূরে রেখে অর্থনীতির চাহিদা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে পারছি কিনা সেদিকে নজর দেওয়া উচিৎ।”

অনুষ্ঠানে এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান বলেন, দেশের অর্থনীতির জন্য সরকারি তহবিল থেকে যে পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করা দরকার সেই তুলনায় রাজস্ব আদায় না হওয়ার কারণে অর্থ ব্যয় করা সম্ভব হয় না।

তিনি বলেন, “আগেও আমাদের সেই পরিমাণ পুঁজি ছিল না। আমাদের রাজস্ব এতো কম আর ব্যয় এতো বেশি যে বিদেশ থেকে ঋণ নিয়ে দেশে অর্থায়ন করতে হয়েছে।”

এনবিআর চেয়ারম্যান জানান, এখন থেকে প্রত্যক্ষ কর বাড়িয়ে রাজস্ব আহরণ বাড়ানো।

তিনি বলেন, “এখন আমাদের ১ কোটি ১৫ লাখের মতো টিআইএনধারী আছেন। তাদের মধ্যে রিটার্ন দাখিল করেন মাত্র ৪০ লাখ। বাকি প্রায় ৭৬ লাখ কিন্তু রিটার্ন দেয় না।”

যেসব টিআইএনধারী ট্যাক্স দেন না তাদের কাছে নোটিস পাঠানো হচ্ছে বলে জানান এনবিআর চেয়ারম্যান। কর আহরণ ব্যবস্থা ডিজিটাল করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে বাংলাদেশের করনীতি ও এর বাস্তবায়ন নিয়ে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ পাওয়া যায় বলে সেমিনারে জানান ফরেইন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ফিকি) নির্বাহী পরিচালক নুরুল কবীর।

তিনি বলেন, বিনিয়োগকারীদের অভিযোগ বাংলাদেশে প্রত্যক্ষ করদাতার সংখ্যা কম হওয়ায় যারা নিয়মিত কর পরিশোধ করছেন তাদের ওপরই চাপ বাড়ানো হয়।

তাই প্রত্যক্ষ কর বাড়ানোর দিকে নজর দেওয়ার পরামর্শ দেন ফিকির নির্বাহী পরিচালক নুরুল কবীর।।

নিয়মিত করদাতাদের হয়রানি কমাতে রাজস্ব আদায় ব্যবস্থাকে শতভাগ ডিজিটাল করার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত