গাজায় ইসরায়েলের চলমান গণহত্যার প্রতিবাদে ফিলিস্তিনের পক্ষে সোমবার গোটা বিশ্বে ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে।
গাজায় ১৮ মাস ধরে চলা ইসরায়েলের গণহত্যা বন্ধে ফিলিস্তিনের বিভিন্ন গোষ্ঠী একযোগে এই কর্মসূচি ডেকেছে বলে জানিয়েছে তুরস্কের সংবাদ সংস্থা আনাদোলু।
বিশ্বব্যাপী এই ধর্মঘট সফল করার আহ্বান জানিয়ে এই গোষ্ঠীগুলো রবিবার এক বিবৃতিতে বলেছে, “ইসরায়েলি বাহিনীর ভয়াবহ গণহত্যা ও অপরাধের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ সংগ্রাম বেগবান করতে সবার সোচ্চার হওয়া প্রয়োজন।
“ফিলিস্তিনিদের তাদের ভূমি থেকে উচ্ছেদ করতে নারী, শিশুসহ বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা করার পাশাপাশি ফিলিস্তিনে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে জায়নবাদী রাষ্ট্রটি।”
বিবৃতিতে ইসরায়েলের গণহত্যা বন্ধে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা একত্রিত করার গুরুত্ব তুলে ধরা হয় এবং ফিলিস্তিনিদের অধিকার ও আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের জন্য ইসরায়েলকে জবাবদিহির আওতায় আনার ওপর জোর দেওয়া হয়।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার প্রতিক্রিয়ায় গাজায় সর্বাত্মক সামরিক অভিযান শুরু করেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বিশ্বের অগুনতি মানুষ নেতানিয়াহুর প্রতি বারবার গাজায় আগ্রাসন বন্ধের আহ্বান জানালেও তাতে কর্ণপাত করছেন না তিনি।
ওয়াফা নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদে আওয়াজ তুলছে ইসরায়েলের মানুষও।
এই ১৮ মাসে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর হাতে গাজায় নিহত হয়েছে ৬৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি, যাদের মধ্যে আছে অনেক শিশু। বোমা মেরে পুরোপুরি ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে গাজার রাফাহ, খান ইউনিসসহ অন্যান্য শহর।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, মসজিদ, শরণার্থী শিবির-কোনও স্থাপনাই ইসরায়েলের হামলার হাত থেকে রেহাই পায়নি।
দেশটির এই হামলা বন্ধে ফিলিস্তিনিদের ডাকা বিশ্বব্যাপী ধর্মঘটে সংহতি জানিয়েছেন বিশ্বের নানা প্রান্তের অধিকারকর্মীরাসহ শান্তিকামী মানুষ।
সোশাল মিডিয়ায় রবিবার তারা গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধে ডাকা ধর্মঘট সফল করার আহ্বান জানান। তাদের ‘নো ওয়ার্ক নো স্কুল আনটিল দ্য জেনোসাইড স্টপস’ লেখাসম্বলিত ফটোকার্ডে সয়লাব ফেইসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও এক্স।
ফিলিস্তিনিদের জন্য বিশ্বব্যাপী ধর্মঘটের প্রতি সংহতি জানিয়েছেন বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাও। তারা বলেছে, সোমবার তারা ক্লাসে যাবেন না, পরীক্ষায় বসবেন না।
দ্য ডেইলি স্টারের প্রতিবেদনে বলা হয়, রবিবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কমপক্ষে ১২টি বিভাগ, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট), খুলনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট), মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (এমআইএসটি), ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় ও গ্রিন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা গাজায় চলমান সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে সব ধরনের অ্যাকাডেমিক ও পেশাগত কার্যক্রম বন্ধ রাখার আহ্বান জানান।