Beta
শুক্রবার, ৭ নভেম্বর, ২০২৫
Beta
শুক্রবার, ৭ নভেম্বর, ২০২৫

সোনা : ১৭০ টাকা থেকে ২ লাখ ১৬ হাজার ছাড়াল যেভাবে

Gold_02
[publishpress_authors_box]

বিশ্ববাজারের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দেশের বাজারেও সোনার দর চড়ছেই। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে; যেন পাগলা ঘোড়ার মতো ছুটছে মূল্যবান এই ধাতুর দাম। রেকর্ডের পর রেকর্ড হচ্ছে; গড়ছে ইতিহাস।

২৪ ঘণ্টা না যেতেই সবচেয়ে ভালো মানের (২২ ক্যারেট) প্রতিভরি সোনার দাম আরও ২ হাজার ৬১৩ টাকা বাড়িয়েছে স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)। আর এতে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে ভরি ২ লাখ ১৬ হাজার ৩৩২ টাকায় উঠেছে।

বাংলাদেশের ইতিহাসে এর আগে কখনই সোনার দর এত উচ্চতায় ওঠেনি। চলতি অক্টোবর মাসের ১৪ দিনেই বেড়েছে ২১ হাজার টাকা।

কোথায় গিয়ে থামবে, আদৌ থামবে কি না—সেটাই এখন এ খাতের ব্যবসায়ীদের বড় চিন্তার বিষয়। কেননা, আকাশ ছোঁয়া দামে জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে বেচাবিক্রিতে ধস নেমেছে; ব্যবসা ব্যাপকভাবে পড়ে গেছে। দোকানে ক্রেতা নেই বললেই চলে।

এদিকে দাম বেশি হওয়ায় অনেকেই সোনার অলংকার কেনার বদলে বিক্রি করছেন। জুয়েলার্স ব্যবসায়ীরা বলছেন, অনেক গ্রাহক আগে কেনা গয়না এখন বেশি দামে বিক্রি করে দিচ্ছেন।

আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ায় দেশের বাজারেও মূল্যবান এই দাতুর দাম বাড়ানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা। আগস্টের মাঝমাঝি সময় থেকে বিশ্ববাজারে সোনর দাম বাড়ছে। তার সঙ্গে সমন্বয় করে দেশের বাজারেও বাড়ানো হচ্ছে।

এই দুই মাসে দু-এক বার প্রতিবারই দাম বাড়িয়েছে বাজুস। সেই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবারও আরেক দফা বাড়ানো হয়েছে। এ দফায় ২২ ক্যারেট মানের সোনার দাম ভরিতে বাড়ানো হয়েছে ২ হাজার ৬১৩ টাকা। আর তাতেই নতুন রেকর্ড গড়ে ভরি উঠেছে ২ লাখ ১৬ হাজার ৩৩২ টাকা।

অন্যান্য মানের সোনার দরও একই হারে বাড়িয়েছে বাজুস।

২৪ ঘণ্টা আগে সোমবার রাতে ২২ ক্যারেট মানের সোনার দাম ভরিতে ৪ হাজার ৬১৯ টাকা বাড়ানো হয়; ভরি ওঠেছিল ২ লাখ ১৩ হাজার ৭১৯ টাকায়।। মঙ্গলবার সারা দেশে এই দরে বিক্রি হয় সোনার গহনা বা অলঙ্কার।

তার পাঁচ দিন আগে ৮ অক্টোবর ৬ হাজার ৯০৫ টাকা বাড়ানো হয়; ভরি উঠেছিল ২ লাখ ৯ হাজার ১০০ টাকায়। তার একদিন আগে ৭ অক্টোবর ১ হাজার ৪৭০ টাকা বাড়ানোর ঘোষণা দেয় বাজুস। ৮ অক্টোবর ২ লাখ ২ হাজার ১৯৫ টাকা ভরিতে বিক্রি হয়।

৬ অক্টোবর ২২ ক্যারেট সোনার দাম ভরিতে ৩ হাজার ১৪৯ টাকা বাড়ানো হয়। ভরি ২ লাখ টাকার মাইলফলক ছাড়িয়ে ২ লাখ ৭২৬ টাকায় ওঠে।

তার দুই দিন আগে ৪ অক্টোবর বাড়ানো হয় ভরিতে ২ হাজার ১৯৩ টাকা বাড়ানো হয়; ভরি ওঠে ১ লাখ ৯৭ হাজার ৫৭৬ টাকায়।

২৯ সেপ্টেম্বর বাড়ানো হয় ২ হাজার ৪১৪ টাকা বাড়ানো হয়; ভরি ওঠে ১ লাখ ৯৫ হাজার ৩৮৪ টাকায়।

তার আগে কয়েক দফা বাড়ানোয় দেশের বাজারে সোনার ভরি রেকর্ড গড়ার পর ২৭ সেপ্টেম্বর ভরিতে ১ হাজার ৮৯০ টাকা কমানোর ঘোষণা দেয় বাজুস। এতে ভরি নামে ১ লাখ ৯২ হাজার ৯৬৯ টাকায়।

২৩ সেপ্টেম্বর এই মানের সোনার দাম ভরিতে ৩ হাজার ৬৬২ টাকা বাড়ানো হয়েছিল।

তার আগে টানা আট দফায় সবচেয়ে ভালো মানের (২২ ক্যারেট) সোনার ভরি ১৮ হাজার টাকার বেশি বাড়ানোর পর ১৭ সেপ্টেম্বর ১ হাজার ৪৭০ টাকা কমিয়েছিল বাজুস।

১৮ সেপ্টেম্বর থেকে এই মানের সোনা ১ লাখ ৮৮ হাজার ১৫২ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল। দুই দিন না যেতেই ২০ সেপ্টেম্বর সোনার দাম ফের বাড়ানো হয়; ভরিতে বাড়ে ১ হাজার ১৫০ টাকা।

২১ সেপ্টেম্বর ২২ ক্যারেটের প্রতিভরি সোনা ১ লাখ ৮৯ হাজার ৩০৭ টাকায় বিক্রি হয়। একদিন পর ২২ সেপ্টেম্বর আরও ১ হাজার ৮৯০ টাকা বাড়ানো হয়।

১ সেপ্টেম্বর ২২ ক্যারেট সোনার দাম ভরিতে ১ হাজার ৪৭০ টাকা বাড়ানো হয়। ৩ সেপ্টেম্বর বাড়ানো হয় ৩ হাজার ৪৪ টাকা।

তার আগে গত ৩০ আগস্ট ভরিতে ১ হাজার ৬৬৮ টাকা বাড়ানো হয়। ২৬ আগস্ট বাড়ানো হয়েছিল ১ হাজার ৫০ টাকা।

এর আগে প্রায় এক মাস দেশের বাজারে মূল্যবান এই ধাতুর দাম একই জায়গায় স্থির ছিল।

বাজুসের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, সেপ্টেম্বর মাস জুড়ে অস্থির ছিল দেশের সোনার বাজার। পুরো মাসে মোট ১২ বার দাম সমন্বয় করেছে বাজুস। এর মধ্যে ১০ বারই বেড়েছে দাম, কমেছে মাত্র দুইবার।

সেপ্টেম্বর মাসে ২২ ক্যারেট মানের প্রতিভরি সোনার দাম বেড়েছে ২১ হাজার ৬৬ টাকা।

সেই উল্লম্ফন অক্টোবর মাসেও চলছে। এই মাসের ১৪ দিনে ছয় দফায় ২২ ক্যারেট মানের সোনর দাম ভরিতে ২০ হাজার ৯৪৭ টাকা বেড়েছে।

চলতি বছর (২০২৫ সাল) এখন পর্যন্ত মোট ৬৫ বার সোনার দাম সমন্বয় করেছে বাজুস। এর মধ্যে ৪৭ বারই বেড়েছে, আর কমেছে মাত্র ১৮ বার।

গত বছর (২০২৪ সাল) পুরো সময়ে দাম সমন্বয় হয়েছিল ৬২ বার।

গত ২০ আগস্ট থেকে বিশ্ববাজারে সোনার দাম টানা বাড়ছে। সেই দামের সঙ্গে সমন্বয় করে বাজুসও দেশের বাজারে এই ধাতুর দাম বাড়িয়ে চলেছে। মাঝে দুই দিন নিম্মমুখী হওয়ায় দেশের বাজারেও কিছুটা কমানো হয়।

বাজুস সাধারণত রাত সাড়ে ৮টা থেকে ৯টার দিকে সোনার দাম বাড়ানো-কমানোর ঘোষণা দিয়ে থাকে। পরের দিন থেকে সারা দেশে সেই দরে সোনা বিক্রি হয়।

তবে মাঝে-মধ্যে দিনে দুই বারও সোনার দাম বাড়ানো-কমানোর ঘোষণা দিয়ে থাকে সংগঠনটি।

মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে সোনার দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয় বাজুস। দাম বাড়ানোর ব্যাখ্যায় সংগঠনটির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

বাজুসের নতুন ঘোষণা অনুযায়ী, বুধবার থেকে দেশের বাজারে হলমার্ক করা এক গ্রাম ২২ ক্যারেট মানের সোনা ১৮ হাজার ৫৪৭ টাকায় বিক্রি হবে। ১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রামে এক ভরি হিসাবে প্রতিভরি বিক্রি হবে ২ লাখ ১৬ হাজার ৩৩২ টাকায় বিক্রি হবে। ২১ ক্যারেটের এক ভরি কিনতে লাগবে ২ লাখ ৬ হাজার ৪৯৯ টাকা।

১৮ ক্যারেটের ১ লাখ ৭৭ হাজার ১ টাকায় এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতিভরি সোনা ১ লাখ ৪৭ হাজার ৩৫১ টাকায় বিক্রি হবে।

মঙ্গলবার দেশের বাজারে ২২ ক্যারেট মানের প্রতিভরি সোনা ২ লাখ ১৩ হাজার ৭১৯ টাকায় বিক্রি হয়। ২১ ক্যারেটের বিক্রি হয় ২ লাখ ৪ হাজার ৩ টাকায়।

এছাড়া ১৮ ক্যারেটের ১ লাখ ৭৪ হাজার ৮৫৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতিভরি সোনা ১ লাখ ৪৫ হাজার ৫২০ টাকায় বিক্রি হয়।

হিসাব বলছে, এক দিনের ব্যবধানে প্রতিভরি ২২ ক্যারেটের সোনার দাম বাড়ছে ২ হাজার ৬১৩ টাকা। ২১ ক্যারেটের বাড়ছে ২ হাজার ৪৯৬ টাকা।

১৮ ক্যারেটে ২ হাজার ১৪৬ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতিভরি সোনার দাম বাড়ছে ১ হাজার ৮৩১ টাকা।

যেভাবে ছুটেছে

দেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় সোনার ভরি ছিল ১৭০ টাকা। তার পরের পাঁচ দশকে সোনার দাম বেড়ে ১ হাজার ২৭২ গুণ হয়েছে। এখন সবচেয়ে ভালো মানের অর্থাৎ ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ২ লাখ ১৬ হাজার ৩৩২ টাকা। এর মধ্যে গত আড়াই দশকে সোনার দাম বেশি বেড়েছে।

জুয়েলার্স সমিতির তথ্যানুযায়ী, ২০০০ সালে ২২ ক্যারেটের সোনার ভরি ছিল ৬ হাজার ৯০০ টাকা। পরের পাঁচ বছরে সেটি দ্বিগুণ হয়। ২০১০ সালে সোনার দাম তিন গুণ বেড়ে হয় ৪২ হাজার ১৬৫ টাকা। ২০১৫ সাল পর্যন্ত দাম খুব একটা না বাড়লেও তার পরের পাঁচ বছরে ভরিপ্রতি দাম প্রায় ২৭ হাজার টাকা বেড়ে যায়। ২০২২ সালে সোনার দাম ছিল সর্বোচ্চ ৮৮ হাজার টাকা। পরের বছর ২১ জুলাই সোনার দাম প্রথমবারের মতো ১ লাখ টাকা ছাড়িয়ে যায়। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে প্রথমবার সোনার দাম দেড় লাখ টাকা ছাড়ায়।

দুই লাখ টাকা ছাড়ায় এক সপ্তাহ আগে ৬ অক্টোবর।

রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পাশাপাশি সোনার দামও পাগলা ঘোড়ার মতো ছুটতে থাকায় জুয়েলারি ব্যবসায় মন্দাভাব দেখা দিয়েছে। সোনার অলংকার এখন সাধারণের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। মুদ্রার উল্টো পিঠ হচ্ছে, দাম বেড়ে যাওয়ায় পুরোনো সোনা কিংবা অলংকারের সম্পদমূল্য বেড়েছে। ফলে যাদের সিন্দুকে গচ্ছিত পুরোনো অলংকার রয়েছে, তারা দাম কতটুকু বাড়ল সেই হিসাব কষছেন।

জুয়েলারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত বছরের আগস্টে ক্ষমতার পটপরিবর্তনের কারণে দেশে সব ধরনের ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। তবে সোনার দাম বেড়ে যাওয়ায় জুয়েলারি ব্যবসায় সেই প্রভাব কিছুটা বেশি। গত দুই মাসে সোনার অলংকারের বেচাবিক্রি গড়ে ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত কমে গেছে।

সোনার বাজারের অস্থিরতায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বাজুসের সহসভাপতি এবং বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং-এর চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে নিত্যপণ্য কিনতেই হিমশিম খাচ্ছেন অনেকে। অন্যদিকে সোনার দামও বেশি। সব মিলিয়ে গত দুই মাসে সারা দেশের জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানের বিক্রি ৬০-৭০ শতাংশ বিক্রি কমে গেছে।

“এ অবস্থায় আমরা বড় বিপদের মধ্যে আছি। ব্যবসা টিকিয়ে রাখাই কঠিন হয়ে পড়েছে।”

সোনার দাম কেন বেড়েই চলেছে

দেশের বাজারে সোনার মূল্যবৃদ্ধির আসল কারণ বৈশ্বিক বাজারে মূল্যবান এই ধাতুর মূল্যবৃদ্ধি। ইতিহাস ঘেটে দেখা গেছে, যখনই বিশ্বে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে, তখনই সোনার দাম বেড়েছে।

সোনার দামের সঙ্গে বিশ্ব অর্থনীতির গভীর সম্পর্ক রয়েছে। বিশ্ব অর্থনীতিতে অনিশ্চয়তা মানে সোনার বাজারে সুদিন। উচ্চ মূল্যস্ফীতির সময় সোনার দাম বাড়তে থাকে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় অর্থাৎ ২০২০ সালের আগস্টের প্রথম সপ্তাহে বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স সোনার দাম ২ হাজার ডলার ছাড়িয়ে যায়। তখন পর্যন্ত ওই দামই ছিল ইতিহাসের সর্বোচ্চ।

এখন আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দাম বৃদ্ধির পেছনে মূল কারণ হিসেবে কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্রে সুদের হার কমার সম্ভাবনা, ভূরাজনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর সোনা কেনার হিড়িক।

অর্থনৈতিক মন্দা, অস্থিরতা ও উচ্চ মূল্যস্ফীতির সময়ে স্বর্ণকে সবচেয়ে নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সংকটকালে স্বর্ণের দাম কমে যাওয়ার বদলে উল্টো বাড়ে বা স্থিতিশীল থাকে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থেকে শুরু করে গাজা সংঘাত পর্যন্ত চলমান ভূরাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে বিশ্বজুড়ে বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে সোনার দিকে ঝুঁকছেন।

এর আগেও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য যুদ্ধ এবং ফেডারেল রিজার্ভের ওপর তার হস্তক্ষেপের সময়ও সোনার দাম বেড়েছিল।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো ২০২২ সাল থেকে প্রতিবছর ১ হাজার টনের বেশি সোনা কিনছে। অথচ ২০১০ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত এই পরিমাণ ছিল গড়ে ৪৮১ টন। বিবিসির এক প্রতিবেদন অনুসারে, গত বছর স্বর্ণ কেনার তালিকায় শীর্ষে ছিল পোল্যান্ড, তুরস্ক, ভারত, আজারবাইজান ও চীন।

বাংলাদেশ বিপুল পরিমাণে স্বর্ণ আমদানি না করলেও দেশের বাজার আন্তর্জাতিক প্রবণতার ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ার পাশাপাশি ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

২০২১ অর্থবছর থেকে এখন পর্যন্ত ডলারের বিপরীতে টাকার মান ৪৩ শতাংশ কমেছে, যা আমদানি খরচ বাড়িয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ব্যাগেজ রুলসের আওতায় মূলত যাত্রীদের মাধ্যমেই দেশে সোনা আসে।

বিশ্ববাজারে আউন্স উঠল ৪ হাজার ১৫০ ডলারে

বিশ্ববাজারেও সোনার দর রেকর্ডের পর রেকর্ড গড়ছে। প্রতি আউন্সের (৩১.১০৩৪৭৬৮ গ্রাম) দাম প্রায় ৪ হাজার ১৫০ ডলারে উঠেছে।

মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় রাত ১২টায় বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স সোনার দাম ৩৪ ডলার ৬৯ সেন্ট বেড়ে ৪ হাজার ১৪৭ ডলার ২৩ সেন্টে উঠেছে। শতাংশ হিসাবে বেড়েছে প্রায় ১ শতাংশ।

গত ১৩ অক্টোবর রাতে বাজুস যখন দেশের বাজারে সোনার দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয় তখন প্রতিআউন্স সোনার দাম ছিল ৪ হাজার ৯৭ ডলার ৮২ সেন্ট।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত ২ এপ্রিল বিভিন্ন দেশের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপ করার পর সোনার দাম হু হু করে বাড়ছিল। ২২ এপ্রিল প্রতি আউন্স সোনার দাম ৩ হাজার ৫০০ ডলার ছাড়ায়।

এরপর আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার দর ৩ হাজার ৫০০ ডলারের নিচে লেনদেন হচ্ছিল। আগস্টের মাঝামাঝি সময় থেকে বাড়তে থাকে মূল্যবান এই ধাতুর দর।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত