সাবেক পুলিশ প্রধান বেনজীর আহমেদের অবৈধ সম্পদ নিয়ে দুদকের অনুসন্ধানের মধ্যে গোপালগঞ্জে তার পরিবারের মালিকানাধীন সাভানা ইকো রিসোর্ট অ্যান্ড ন্যাচারাল পার্ক বন্ধ হয়ে গেছে।
সোমবার বিকালে পার্কের ফটকে সাময়িক বন্ধের নোটিসটি টানিয়ে দেওয়া হয়। তাতে লেখা আছে, “অনিবার্য কারণবশত সাময়িকভাবে সাভানা পার্ক বন্ধ থাকবে।”
সার্ভার সংক্রান্ত জটিলতায় এই সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছেন সাভানা ইকো রিসোর্ট অ্যান্ড ন্যাচারাল পার্কের বুকিং ম্যানেজার মো. সাব্বির হোসেন।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “পার্কের সার্ভারের সমস্যার কারণে দর্শনার্থীদের ভেতরে প্রবেশ করানো যাচ্ছে না। এ কারণে কয়েক দিনের জন্য পার্ক সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সার্ভার সমস্যা সমাধান হলে আগামী ৪/৫ দিনের মধ্যে পার্ক খুলে দেওয়া হবে।”
২০১৫ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত র্যাবের মহাপরিচালক এবং ২০২০ সাল থেকে থেকে ২০২২ পর্যন্ত আইজিপি থাকাকােল নিজের জেলা গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার বৈরাগীটোল এবং পাশের জেলা মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার কদমবাড়ি ইউনিয়নের ছোটখোলা গ্রামের ৬২১ বিঘা জমির ওপর ‘সাভানা ইকো রিসোর্ট’ গড়ে তোলেন বেনজীর।
এই জমির প্রায় সবই হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের ছিল। ভয় দেখিয়ে, জোর করে ও নানা কৌশলে এসব জমি কেনা হয় বলে এখন অভিযোগ তুলেছেন জমির মালিকরা।
এলাকাবাসী সাংবাদিকদের সামনে মুখ খোলার পর পার্ক কর্তৃপক্ষ পুলিশ এনে হামলা চালায় বলেও অভিযোগ ওঠে।
পুলিশের লাঠির আঘাতে চারজন আহত হয়। তারা হলেন- ইকোপার্ক সংলগ্ন সাহাপুর ইউনিয়নের বৈরাগীটোল গ্রামের বিনোদ বিহারি বলের ছেলে বিপ্লব বল, সন্তোষ বলের ছেলে সঞ্জয় বল ও সাগর বল এবং ওই এলাকার রনি নামের এক যুবক।
পরে পার্কের নিরাপত্তার জন্য পুলিশ মোতায়েন করা হলেও কর্তৃপক্ষ সোমবার থেকে সাভানা ইকো রিসোর্টটি বন্ধ করে দেয়।
গোপালগঞ্জের সন্তান বেনজীর দুই বছর আইজিপির দায়িত্ব পালনের পর ২০২২ সালে অবসরে যান। আইজিপির দায়িত্ব পালনের আগে তিনি র্যাবের মহাপরিচালকের দায়িত্বে ছিলেন। র্যাবের বিরুদ্ধে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে যুক্তরাষ্ট্র বেনজীরের ওপরও নিষেধাজ্ঞা দেয়।
সম্প্রতি কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে বেনজীরের বিপুল পরিমাণ অর্থ-বিত্তের মালিক হওয়ার অভিযোগ তোলা হয়। তারপর বেনজীরের সম্পদ অনুসন্ধানে আদালতে আবেদনও হয়। এরপর দুদকও তৎপর হয়।
পরে বেনজীর ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের তালিকা জমা পড়ে আদালতে। তারপর বেনজীর ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা বিভিন্ন সম্পত্তির দলিল, ঢাকায় ফ্ল্যাট ও কোম্পানির আংশিক শেয়ার জব্দের নির্দেশ দেয় ঢাকার আদালত।
এত জমি কেনার টাকার জোগানের ব্যাখ্যা দিতে বেনজীরকে ৬ জুন হাজির হতে তলব করেছে দুদক। তবে এর মধ্যে তিনি বিদেশে চলে গেছেন বলে খবর এসেছে।