গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) শিক্ষকরা পদোন্নতির দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন।
উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে গত রবিবার থেকে সেখানেই অবস্থান করছেন শিক্ষকরা।
তবে শিক্ষার্থীদের যাতে ক্ষতি না হয়, সেজন্য শিক্ষকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস ও পরীক্ষা কার্যক্রম চালু রেখেছেন।
পাঁচ দিনের মধ্যে দাবি পূরণে উপাচার্যকে সময় বেঁধে দিয়ে শিক্ষকরা কর্মসূচিতে নামলেও তিন দিনেও সংকট সমাধানের কোনও উদ্যোগ নেয়নি কর্তৃপক্ষ।
বুধবার সকালেও উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে অবস্থানে দেখা গেছে শিক্ষকদের। তালা ঝুলতে দেখা যায় উপাচার্য এ কিউ এম মাহবুব এবং উপ-উপাচার্য সৈয়দ সামসুল আলমের কক্ষের দরজায়।
দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত এ কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন বশেমুবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. ফায়েকুজ্জামান মিয়া।
শিক্ষকদের অভিযোগ, আপগ্রেডেশন বঞ্চিত ৩০ জন শিক্ষকের বিষয়টি গত ২৯ মে ৩৯তম রিজেন্ট বোর্ডে পাস হওয়ার কথা। কিন্তু রিজেন্ট বোর্ডের সভায় বিষয়টি উত্থাপন করেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
শিক্ষক সমিতির সভাপতি ফায়েকুজ্জামান বলেন, “গত এক বছর ধরে দাবি আদায়ের লক্ষ্যে বিভিন্ন আলোচনা ও সমস্যা নিয়ে কথা বলেছি। কিন্তু এ বিষয়ে কোনো অগ্রগতি লক্ষণীয় নয়।
“তাই আমরা গত রবিবার থেকে আমাদের পদোন্নতি ও ডিউডেটর দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, প্রোভিসি ও রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি।”
গত সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে একটি বৈঠক হয়েছিল, সেখানে আন্দোলনরত শিক্ষকদের সঙ্গে উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও রেজিস্ট্রার আলোচনা করেন।
অধ্যাপক ফায়েকুজ্জামান বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমাদের আশ্বস্ত করেছিল যে মঙ্গলবার ১১টার মধ্যে দাবি আদায়ের বিষয়ে ফলপ্রসূ ঘোষণা দেবে। কিন্তু তার কোনও প্রতিফলন আমরা দেখতে পাইনি।”
বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. দলিলুর রহমান বলেন, “আন্দোলনরত শিক্ষকদের আপগ্রেডেশনসহ কয়েকটি দাবি ছিল। এ বিষয়ে রিজেন্ট বোর্ড ইতোমধ্যে একটি কমিটি করে দিয়েছে। এই কমিটির সুপারিশ পর্যবেক্ষণ ও পর্যালোচনা করে পরবর্তী সময়ে রিজেন্ট বোর্ড যে সিদ্ধান্ত দেবে, সেভাবে আমরা আমাদের কাজ বাস্তবায়ন করব।”
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বশেমুরবিপ্রবির বেশ কিছু শিক্ষক সম্প্রতি আপগ্রেডেশন পেয়েছেন। তবে কিছু পদ আপাতত শূন্য না হওয়ায় ৩০ শিক্ষকের আপগ্রেডেশন বন্ধ রয়েছে। এছাড়া কোভিড মহামারির সময়ের দুই বছর অভিজ্ঞতা হিসাবে ধরা হয়নি। শিক্ষকরা চাইছেন, তাদের পদোন্নতি নির্ধারিত সময় ধরেই হোক।
শিক্ষকদের দাবির বিষয়ে রেজিস্ট্রার বলেন, “করোনার সময় নিয়মিত উপাচার্য না থাকায় তখন দুই বছরে কোনও পদোন্নতি হয়নি। একারণে যারা ওই সময় পদোন্নতি পাওয়ার কথা, তারা আগের তারিখ ধরে পদোন্নতি দেওয়ার দাবি করছেন। তবে রিজেন্ট বোর্ড ওই সময় গণনা করবে না। এ নিয়েই সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে।”
সমস্যার সমাধানের পথ কী- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “চলমান সমস্যা নিরসনে আমাদের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ হচ্ছে রিজেন্ট বোর্ড। আপগ্রেডেশনের আবেদনগুলো রেজুলেশন করে রিজেন্ট বোর্ডে পাঠানো আমাদের কাজ। এই কাজে অগ্রগতি বিষয়ে শিক্ষক নেতারা জানতে চেয়েছেন। আমরা এরই মধ্যে রেজুলেশনে অন্তর্ভুক্ত করেছি। উপাচার্য ঢাকা থেকে ফিরলে এগুলো পাঠানো হবে।”