Beta
মঙ্গলবার, ১৩ মে, ২০২৫
Beta
মঙ্গলবার, ১৩ মে, ২০২৫

জনগণ সরকারের সাথে নেই, ভোটের হারই প্রমাণ : মান্না

অবস্থান কমসূচিতে বক্তব্য দেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
অবস্থান কমসূচিতে বক্তব্য দেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
[publishpress_authors_box]

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না মনে করেন, উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ধাপের ভোটের হার প্রমাণ করে জনগণ সরকারের সঙ্গে নেই।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি তেল এবং রেলের ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে এবং খালেদা জিয়াসহ ‘রাজবন্দিদের’ মুক্তি দাবিতে শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত এক অবস্থান কর্মসূচিতে তিনি এ মন্তব্য করেন।

‘নাগরিক অধিকার আন্দোলনে’র উদ্যোগে অনুষ্ঠিত কর্মসূচিতে মান্না বলেন, “মানুষ সরকারকে ভোট দেয়নি, এখনও দেয় না। এই যে উপজেলা নির্বাচন হয়ে গেল, দেখলেন তো… বাংলাদেশের ইতিহাসে উপজেলায় এত কম ভোট কখনও পড়ে নাই। এটা ভোটের সরকারি হিসাব, পত্র-পত্রিকায় লিখছে।”

আওয়ামী লীগের লোকজনও সরকারের সঙ্গে নেই– এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, “গতকাল প্রধানমন্ত্রী (সংসদে) বক্তৃতা করলেন– কোনও কিছু তোয়াক্কা করি না, জনগণ আমার সঙ্গে আছে। জনগণ মানে কি? ওবায়দুল কাদের আপনার সাথে আছে… কেউ আছে আপনার সাথে? আপনার দলের লোকও আপনার সাথে নাই। যদি থাকত তাহলে ৭ জানুয়ারি ভোট দিতে যেত, উপজেলা নির্বাচনে তারা ভোট দিতে যেত।”

এবার চার ধাপে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। বুধবার প্রথম ধাপে ১৩৯ উপজেলায় ভোট হয়। এতে ৩৬ দশমিক ১ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের জানান নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর।

২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে গড়ে ৪১ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছিল। এই হিসাব অনুযায়ী, এবারের উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ধাপে ৫ শতাংশ কম ভোট পড়েছে।

বিরোধী দল নয়, সরকার দুর্বল হয়েছে’

মান্না বলেন, “যারা মনে করেন– বিরোধী দল দুর্বল হয়েছে, সরকার আরও শক্তিশালী হয়েছে, তাদেরকে অর্থনৈতিক চিত্র দেখার জন্য বলি। বিরোধী দল দুর্বল হয়নি, আমরা আমাদের দলেই আছি, আলাল (সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল) আলালের দলেই আছেন, খোকন (মাহবুব উদ্দিন খোকন) খোকনের দলেই আছেন… এবার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে জিতেছেন। জোর করে, ষড়যন্ত্র করে, অন্যান্য কৌশল করেও কেড়ে নিতে পারেনি।”

এই সরকারকে দিয়ে মানুষের কষ্ট লাঘব হবে না– মন্তব্য করে তিনি বলেন, “জনগণকে বলছি, আপনাদের কষ্ট যদি লাঘব করতে চান এই সরকারকে দিয়ে এটা হবে না। ভোট কেড়ে নিয়েছে, জিনিসের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে, আপনার মাথায় ঋণের বোঝা বাড়িয়ে দিয়েছে… জনগণের জন্য কিছু করতে পারবে না।”

সরকারের সঙ্গে কোনও আপোষ হবে না জানিয়ে মান্না বলেন, “এই সরকারের হটাতে হবে, ওদের সাথে কোনও আপোষ নাই। গরম একটু একটু করে কমছে… গরম যত কমবে আমরা আরও বড় আকারে রাস্তায় আসব– এ রকম চিন্তা করছি। দেখি শেষ পর্যন্ত কি হয়?”

‘প্রতিহিংসার জবাব জনগণই একদিন দেবে’

কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, “বিএনপি চেয়ারপারসন দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে আটক করে রেখেছে। তিনি ভীষণ অসুস্থ। চিকিৎসা পাওয়া তার সাংবিধানিক অধিকার। সেই অধিকার থেকে তাকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।”

তিনি বলেন, “আসলে সরকার আইনের দোহাই দিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসার পথ রুদ্ধ করে রেখেছে। মাননীয় আইনমন্ত্রীকে বলব, জনগণকে বিভ্রান্ত করবেন না। তার বিদেশে যাওয়ার ব্যবস্থা নিন। নইলে আপনাদের এই প্রতিহিংসার জবাব জনগণই একদিন দেবে।”

যখন যেটা মন চায় তখন তারা সেটা করে’

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, “হঠাৎ করে রেলের ভাড়া বাড়ানো হলো, কারও কাছে কিছু জিজ্ঞাসা করা লাগল না। হঠাৎ করে দেখবেন তেলের দাম, পেট্রোলের দাম, অকটেনের দাম বাড়ানো হলো; হঠাৎ করে দেখবেন গ্যাসের দাম বাড়ানো হলো। আগে গণশুনানি হতো এনার্জি রেগুলেটারি কমিশনে, আমরা যেতাম বিএনপির পক্ষ থেকে। আজকে সেই গণশুনানির ব্যবস্থাটাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।”

তিনি বলেন, “যখন যেটা মন চায় তখন তারা সেটা করে, করে মানুষের জীবনে একটা বোঝা, একটা উপদ্রুপ হিসেবে প্রায় স্থায়ী হতে চলেছে। এর স্থায়িত্ব বেশিকাল হতে দেওয়া মানে বাংলাদেশকে আরেকটা উত্তর কোরিয়ায় পরিণত করা, এই স্থায়িত্ব বেশিদিন হতে দেওয়া মানে হলো আরেকটা রাশিয়ায় পরিণত করা।”

প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সমালোচনা করে আলাল বলেন, “এই নির্লজ্জ বেহায়া নির্বাচন কমিশনার নির্বাচন দেখার জন্য রাশিয়া যায়, যেখানে নির্বাচনের ‘ন’ বলতে কিছু নাই। এই কমিশন যখন যেটা মন চায় সেটা বলে। এদেরকে রুখে দিতে হবে।”

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে অবস্থান কর্মসূচিতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, মাওলানা শাহ নেছারুল হক, জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল প্রমুখ।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত