শিশু ধর্ষণ মামলাগুলোর বিচার দ্রুত শেষ করতে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
তিনি জানান, সোমবার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিশেষ সভায় শিশু ধর্ষণ মামলার দ্রুত বিচারের জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠনসহ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০২০ এর সংশোধনীর ব্যাপারে সরকার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগামী বৃহস্পতিবার আইনটি সংশোধন করে গেজেট প্রকাশ করা হবে।
সভা শেষে ঢাকার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
এসময় মাগুরার শিশুটির মামলা প্রসঙ্গে আসিফ নজরুল বলেন, “ওই শিশু ধর্ষণের মামলা চলছে নিজস্ব গতিতে। দ্রুততার সঙ্গে এর বিচার হবে। এই মামলার তদন্ত কাজ ২-৩ দিনের মধ্যে শেষ হবে, আশা করছি আগামী কয়েকদিনের মামলার বিচার কাজ শেষ হয়ে যাবে।”
আইন সংশোধনের বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, “নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে দেখা যায়, মামলার জট লেগেই থাকে। কারণ এখানে দুই ধরনের মামলা আসে। একটা হচ্ছে সম্মতি সাপেক্ষে ধর্ষণের ঘটনা। এ ধরনের মামলা বেশি আসে।
“তবে এখন থেকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের ঘটনা আলাদা অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে, যাতে বিচার প্রক্রিয়া সহজ করা যায়। দ্বিতীয় ক্ষেত্রে সম্মতি ছাড়া ধর্ষণ, সেটার বিচার ও তদন্তের সময় কমানো হয়েছে।”
এছাড়া কেবল পুরুষ কর্তৃক নয়, যেকোনো ব্যক্তি কর্তৃক ধর্ষণের ঘটনা ধর্ষণের মামলা হিসেবে গণ্য হবে বলেও জানান উপদেষ্টা।
এই আইন সংশোধনীর ব্যাপারে তিনি বলেন, “ডিএনএ রিপোর্ট ছাড়াই মেডিকেল সার্টিফিকেট এবং পারিপার্শ্বিক সাক্ষ্যের ভিত্তিতে যদি বিচার করা সম্ভব হয়, তাহলে আদালত ডিএনএ রিপোর্ট ছাড়াই বিচার কাজ সম্পন্ন করতে পারবে। এই সংশোধনী আনার ব্যাপারেও সবাই নীতিগতভাবে একমত হয়েছে।”
পাশাপাশি ভিকটিমের সুরক্ষা দিতে নানা ধরনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলেও এসময় জানানো হয়।
ব্রিফিংয়ে উপস্থিত পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানান, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধনীর ব্যাপারে কিছু মতামত পাওয়া গেছে। এগুলো যাচাই-বাছাই করবে সরকার।
সবকিছুর পর আগামী বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের সভায় এটি আনুমোদন পাবে বলে আশার কথা জানান তিনি।
এছাড়া বিচার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য চট্টগ্রাম ও রাজশাহীতে আরও দুটি ল্যাব প্রতিষ্ঠার কথাও ব্রিফিং থেকে জানানো হয়।