Beta
শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
Beta
শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

ছাত্র-গণআন্দোলনে আহতদের চিকিৎসার ভার নিল সরকার

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহতদের একটি বড় অংশ ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহতদের একটি বড় অংশ ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
Picture of সকাল সন্ধ্যা প্রতিবেদন

সকাল সন্ধ্যা প্রতিবেদন

দেশের বিভিন্ন স্থানে ছাত্র-গণআন্দোলনে চালানো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে আহতদের সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার খরচ সরকারের পক্ষ থেকে বহন করা হবে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সেইসঙ্গে যারা বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তাদের চিকিৎসায় ন্যূনতম ব্যয় ধরতেও অনুরোধ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) ডা. আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসানের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানানো হয়।

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার দাবিতে গত জুলাইয়ের প্রথম থেকেই শুরু হয় আন্দোলন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে বিক্ষোভ। ১৫ জুলাই আন্দোলন তীব্র হয়, বিভিন্ন স্থানে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় ছাত্র-জনতা। এসব ঘটনায় হতাহতের খবর আসতে থাকে। হাসপাতালগুলোয় প্রতিদিনই বাড়তে থাকে আহত ও নিহতের সংখ্যা।

আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। দেশে ক্ষমতার পট পরিবর্তন হলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছিল, আহতদের চিকিৎসার ভার নেবে সরকার।

আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ তার ফেইসবুক পোস্টে লিখেছিলেন, “গণঅভ্যূত্থানে আহত হয়ে যারা সরকারি হাসপাতালে ভর্তি আছেন, তাদের কোনও চিকিৎসা খরচ লাগবে না। সম্পূর্ণ বিনামূল্যে চিকিৎসা চলবে। আর যারা বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি আছেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে দ্রুততম সময়ে ডেটা সংগ্রহ করে তাদের চিকিৎসা খরচ দেওয়া হবে।”

এই ঘোষণার তিন দিন পর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে চিকিৎসা সহায়তার বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হলো।   

‘বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসারত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত ছাত্র-জনতার চিকিৎসাব্যয় বিবেচনা প্রসঙ্গে’ শীর্ষক ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “সাম্প্রতিক বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ছাত্র জনতা দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সরকারি হাসপাতালে তাদের সকল চিকিৎসা ব্যয় সরকারকে বহন করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল স্বপ্রণোদিত হয়ে বিল মওকুফ করায় অধিদপ্তর তাদের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছে।

“তবে অন্যান্য বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোকেও তাদের বিল মওকুফ অথবা ন্যূনতম বিল গ্রহণ করে ছাত্র-জনতার এই অবদানের প্রতি সম্মান দেখানোর জন্য স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ থেকে অনুরোধ করা যাচ্ছে।”

আরেক নোটিশে আহতদের চিকিৎসা ও শহীদ পরিবারকে সহায়তা দিতে একটি নীতিমালা এবং শহীদদের পরিচিতিসহ পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরির জন্য একটি কমিটি গঠন করার কথাও জানানো হয়েছে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ আবদুল হাইয়ের সই করা নোটিশে বলা হয়েছে, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উদ্যোগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি, অর্থ বিভাগ, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লষ্ট অন্যান্য মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রতিনিধি সমন্বয়ে এ কমিটি গঠন করা হলো।

১৩ সদস্যের কমিটির আহ্ববায়ক করা হয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব মুহাম্মদ হুমায়ূন কবিরকে। সদস্য সচিব করা হয়েছে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের যুগ্মসচিবকে (সরকারি ও বেসরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা)।  

কমিটিতে অন্য যারা সদস্য হিসেবে থাকবেন তাদের মধ্যে একজ হবেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের প্রতিনিধি (পদমর্যাদায় যুগ্ম সচিবের নিচে নয়), বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন, স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগ, অর্থ বিভাগ, জননিরাপত্তা বিভাগ,সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ, মাধ্যমিক ও গণশিক্ষা বিভাগ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রতিনিধিরা।

এ কমিটি সাম্প্রতিক গণ অভ্যূত্থানে আহতদের চিকিৎসা এবং শহীদ পরিবারকে সহায়তা দেওয়ার জন্য নীতিমালা তৈরি করবে। সেইসঙ্গে শহীদ ও আহতদের পরিচিতির পুরো তালিকাও করবে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত