বাজারে ইফতার পণ্যের দাম বেশ চড়া। এর মধ্যে খেজুর অন্যতম। রমজানের আগে থেকেই এই অভিযোগ। এরপর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দুই ধরনের খেজুরের দাম নির্ধারণ করে দেয়। কিন্তু বাজারে সরকারের এই নির্দেশনার কোনও প্রতিফলন নেই।
রোজা শুরুর পরও রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে একই ধরনের খেজুর ভিন্ন ভিন্ন দামে বিক্রি করতে দেখা গেছে।
নানা আলোচনা-সমালোচনার পর ১২ মার্চ বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে এফবিসিসিআই প্রেসিডেন্ট ও বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনকে চিঠি দিয়ে খেজুরের দাম নির্ধারণের বিষয়টি জানানো হয়।
সরকার প্রতি কেজি অতি সাধারণ বা নিম্ন মানের খেজুরের যৌক্তিক দাম ১৫০-১৬৫ টাকা, এবং বহুল ব্যবহৃত জাইদি খেজুরের দাম ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা নির্ধারণ করে দেয়।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর খিলগাঁও রেলগেট, মহাখালী ও কারওয়ান বাজারে ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি জাইদি খেজুর ২৫০ টাকা থেকে শুরু করে ৩২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অতি সাধারণ ও নিম্ন মানের খেজুর বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকার আশপাশে।
এ নিয়ে ঢাকার বাদামতলী ফল পট্টির পাইকারি খেজুর বিক্রেতা আল-আমিন হোসেনের সঙ্গে কথা হয়।
সকাল সন্ধ্যাকে তিনি বলেন, “আমি পাইকারি দরে খেজুর বিক্রি করি। আমারই প্রতি কেজিতে জাইদি খেজুর কিনতে ১৮০-২০০ টাকা খরচ করতে হয়ছে। তাহলে খুচরা বিক্রেতা কীভাবে এই দরে বিক্রি করবে?
“সরকারের যখন যা ইচ্ছা তাই করে। নিজেই শুল্ক বাড়াবে, আবার নিজেই দাম বেঁধে দেবে। এভাবে কিছুই হবে না।”
সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে কেউ খেজুর বিক্রি করতে পারবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।
খেজুরের দাম সহনীয় করতে ইফতারের অন্যতম প্রধান এই উপকরণের দাম বেঁধে দিয়েছিল সরকার। তবে বিক্রেতাদের অজুহাতের শেষ নেই।
কারওয়ান বাজারের ফল বিক্রেতা কামরুল ইসলামের সঙ্গে কথা হয় সকাল সন্ধ্যার। তিনি বলেন, “আমি এটা মেনে কীভাবে চলব। আমি তো এর থেকে বেশি দামে এই খেজুর কিনেছি। তাও আমি কিনেছি এক সপ্তাহ আগে। তাহলে এখন আমি সরকারের কথায় লস করব না কি?”
রমজান শুরুর পর দাম নির্ধারণ করায় বাজারে তার প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা কম বলে মনে করেন তিনি।
সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বাজারদরের বৃহস্পতিবারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঢাকার বাজারে কেজিপ্রতি সাধারণ মানের খেজুরের দাম পড়ছে ২৮০-৪৫০ টাকা।
তবে ভিন্ন চিত্র ঢাকার বাজারে। বিভিন্ন বাজারে উন্নত মানের প্রতি কেজি খেজুর এক হাজার টাকা বা তার বেশ দামে বিক্রি হচ্ছে। তথ্য ঘেঁটে দেখা যায়, গত বছরের তুলনায় এবার সব ধরনের খেজুরের দাম কেজিতে অন্তত ১০০-৪০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।