Beta
শুক্রবার, ১৬ মে, ২০২৫
Beta
শুক্রবার, ১৬ মে, ২০২৫

বাংলাদেশ মিশনগুলোতে জনবল বাড়াবে সরকার : তৌহিদ

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন রাজধানীর ফরেইন সার্ভিস একাডেমিতে ফরেইন সার্ভিস ডে-২০২৫ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন। ছবি : পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন রাজধানীর ফরেইন সার্ভিস একাডেমিতে ফরেইন সার্ভিস ডে-২০২৫ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন। ছবি : পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
[publishpress_authors_box]

সকাল সন্ধ্যা ডেস্ক

পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন জানিয়েছেন, লাখ লাখ প্রবাসীর উন্নত সেবা নিশ্চিতের জন্য সরকার বিদেশে বাংলাদেশের মিশনগুলোতে, বিশেষ করে কনস্যুলেট জেনারেল অফিসগুলোতে জনবল বৃদ্ধিতে সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

বাসস জানিয়েছে, শুক্রবার রাজধানীর ফরেইন সার্ভিস একাডেমিতে ফরেইন সার্ভিস ডে-২০২৫ উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় একথা জানান তিনি।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “আমরা মানবসম্পদ বাড়ানোর প্রচেষ্টা শুরু করেছি, বিশেষ করে আমাদের কনস্যুলার পদগুলোতে। আশা করছি, এই প্রচেষ্টায় অন্তত আংশিক সাফল্য পাব।”

তিনি বলেন, বাংলাদেশি প্রবাসী কর্মীরা যেসব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন তার প্রায় ৮০ শতাংশ তাদের অভিবাসনের আগে দেশের ভেতরে এবিষয়ক কার্যক্রম থেকে আসে, বাকি ২০ শতাংশ অভিবাসী দেশে ঘটে।

‘তবুও, বিদেশে আমাদের মিশনগুলোকে সম্পূর্ণ ১০০ শতাংশ সমস্যার সমাধান করতে হবে’ এ কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বিদেশি মিশনের ওপর চাপ কমাতে দেশে মূল কারণগুলো সমাধানের গুরুত্বের ওপর জোর দেন।

তিনি বলেন, সীমিত জনবল এবং লজিস্টিক সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও, বাংলাদেশ মিশনগুলো বিশ্বব্যাপী এক কোটিরও বেশি প্রবাসীকে পরিষেবা প্রদান করছে।

সৌদি আরবের উদাহরণ টেনে তৌহিদ হোসেন বলেন, সৌদি আরবে প্রায় ৩২ লাখ বাংলাদেশি বসবাস করছেন। তিনি প্রশ্ন তোলেন, একটি মিশনের ৫০ জন কর্মকর্তা কীভাবে এত বিপুল সংখ্যক মানুষের সমস্যা সামাল দিতে পারেন?

অভিবাসী শ্রমিকরা দেশ ছাড়ার আগেই যে পদ্ধতিগত সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন তা কমাতে ঢাকায় উদ্যোগ নিতে তিনি আহ্বান জানান।

কর্মকর্তাদের মধ্যে আরও বেশি সহানুভূতি জানানোর আহ্বান জানিয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “প্রবাসীরা ইচ্ছা করে মিশনে (কনস্যুলেট) যান না। বেশিরভাগই মরিয়া হয়ে আসেন। যদিও কয়েকজন ভালো আচরণ নাও করতে পারে, তবে বেশিরভাগের সহায়তার গুরুতর প্রয়োজন হয়।”

এসময় তিনি বিদেশে মিশনের কর্মকর্তাদের দেশের অর্থনীতিতে প্রবাসীদের উল্লেখযোগ্য অবদানকে স্বীকৃতি দিয়ে অত্যন্ত আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে তাদের সেবা করার আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় পররাষ্ট্র উপদেষ্টা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে সঙ্কটের কথাও উল্লেখ করে এক্ষেত্রে বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থানকে ‘দ্বিধাগ্রস্ততা’ হিসেবে অবহিত করেন।

তিনি মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের বেশিরভাগ এলাকা নিয়ন্ত্রণকারী বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মিকে এই অগ্রগতির পথে একটি বড় বাধা হিসেবে চিহ্নিত করেন।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “আরাকান আর্মি রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃত নয়, আন্তর্জাতিকভাবেও স্বীকৃত নয়, তাই আনুষ্ঠানিক আলোচনা সম্ভব নয়। তবুও, কোনো না কোনোভাবে তাদের সম্পৃক্ত না করে সঙ্কটের সমাধান অসম্ভব।”

তৌহিদ হোসেন জোর দিয়ে বলেন, স্বীকৃতি না পেলেও রাখাইনে আরাকান আর্মির উপস্থিতি ও প্রভাব রোহিঙ্গা সঙ্কটের যেকোনো সামগ্রিক সমাধানে তাদের ভূমিকা অনিবার্য করে তুলেছে।

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তকে স্মরণ করে প্রতি বছর ১৮ এপ্রিল ফরেইন সার্ভিস দিবস পালন করা হয়। তৎকালীন পাকিস্তান ফরেইন সার্ভিসে কর্মরত একদল সাহসী বাঙালি কূটনীতিক এদিন প্রথম বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকারের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেছিলেন।

তাদের সাহসী পদক্ষেপ জাতির স্বাধীনতার দিকে যাত্রায় একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত হয়েছিল এবং যা একটি স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতির ভিত্তি স্থাপন করেছে।

এই দিনটি বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের স্বার্থকে এগিয়ে নিতে দেশের কূটনৈতিক সম্প্রদায়ের সাহস, প্রতিশ্রুতি ও পেশাগত উৎকর্ষতার প্রতীক।

পররাষ্ট্র সচিব মো. জসীম উদ্দিন এবং বেশ কয়েকজন সাবেক বাংলাদেশি কূটনীতিকও দিনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত